ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গি‌য়ে ধরা পড়লেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৫:২৫

স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গি‌য়ে ধরা পড়লেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি
শহিদুল ইসলাম হত্যার ঘটানায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি শাহিন আলম

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া এলাকায় শহিদুল ইসলাম নামের একজন‌কে গলাকেটে হত্যার ঘটানায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি শাহিন আলমকে (৩৮) গ্রেপ্তার করা হ‌য়ে‌ছে।

স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যাওযার পর সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে মানিকগঞ্জের ঘিওরের বড়টিয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-৪।

মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-৪ এর অধিনায়ক ডিআইজি মোজাম্মেল হক বলেন, ভিকটিম শহিদুল ও আসামি শাহিন দুই বন্ধু ছিলেন। ২০০১ সালে আশুলিয়ার একটি গার্মেন্টেসে চাকরির সুবাদে তাদের বন্ধুত্ব হয়। ২০০৪ সালে ধামরাইয়ের গোয়াড়ীপাড়ায় একটি অফিস ভাড়া নিয়ে 'বাংলা সমাজ উন্নয়ন সংস্থা' নামক একটি সঞ্চয় ও ক্ষুদ্র ঋণদান সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন তারা।

গ্রেপ্তার শাহিন ও ভিকটিম শহিদুল সমান অংশীদার থাকলেও ভিকটিম শহিদুল এনজিওটির কর্মচারী এবং সদস্যদের কাছে তার কর্মদক্ষতা ও ভালো ব্যবহারের জন্য খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। প্রতিষ্ঠানে লাভের পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছিলো এবং এক সময় তাদের অ্যাকাউন্টে সদস্যদের সঞ্চয়ের বেশ কিছু টাকা জমা হয়। সেই টাকা ও প্রতিষ্ঠানটির লোভে বন্ধু শহিদুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে শাহিন।

তিনি আরও বলেন, পরিকল্পনার অংশ হিসেবে শহীদুলের সঙ্গে শাহিন গভীর সম্পর্ক তৈরি করে। ঘটনার আগে শাহিন তার মামাতো ভাই টাঙ্গাইলের সন্ত্রাসী রাজা মিয়াকে নিয়ে ভিকটিমকে হত্যার পূর্ণ ছক আঁকেন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন ২০০৬ সা‌লের ২০ মে শাহিনের জন্য পাত্রী দেখতে যাওয়ার কথা বলে বন্ধু শহিদুলকে মাইক্রো বাসে তুলেন। সন্ত্রাসী রাজা মিয়াসহ মামলার অন‌্য আসামি সাহেদ, কুদ্দুস, বিষ্ণু সুইপার শহিদুলকে শ্বাসরোধ করে নির্মমভাবে হত্যা করেন। পরে গলা কেটে নিথর দেহ থেকে শহিদুলের মাথা আলাদা করে ফেলা হয়৷

র‍্যাব -৪ এর অধিনায়ক বলেন, ভিকটিমের দেহ নিথর হয়ে গেলে আসামীরা লাশ গুম করে আলামত লোপাট করার পরিকল্পনা করেন। ওই হত্যাকাণ্ডের তিনদিন পরে কুকুর দি‌য়ে মাটি খুঁড়ে ভিকটিমের মাথা ও নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় সাটুরিয়া থানায় অজ্ঞাতানামা ব্যক্তিদের আসামি করে সেদিনই একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।

মোজাম্মেল হক বলেন, ভিকটিমের ভাই জিডি সাটুরিয়া থানায় মাথা ও নিথর দেহের ছবি দেখে শহীদুল ইসলামকে চিনতে পারেন।

ওই ঘটনায় গ্রেপ্তার আসামি শাহীন ১০ বছর হাজত খেটে ২০১৬ সালে জামিন নিয়ে আত্মগোপনে চলে যান। পরে তদন্ত কর্মকর্তা দীর্ঘ সময় মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা এবং সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে আদালতে গ্রেপ্তার ২ জন আসামী শাহিন আলম ও সাহেদ এবং পলাতক আসামী রাজা মিয়া, আঃ কুদ্দুস, বিষ্ণু সুইপার, রহম আলী ড্রাইভার ও মাইক্রোবাসের মালিক সেলিমসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল হয়৷

আদালত পর্যাপ্ত স্বাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে দীর্ঘ বিচারকার্য পরিচালনা করে গত বছ‌রের ১ ডিসেম্বর আসামি শাহিনকে মৃত্যুদন্ড, আসামী সাহেদ, রাজা মিয়া, আব্দুল কুদ্দুস, এবং বিষ্ণু সুইপারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন।

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, আসামি শাহিন আত্মগোপনে থাকায় ছদ্মবেশ ধারণ করে। তিনি রংপুর, আশুলিয়া, পল্লবী, উত্তরা, টঙ্গীসহ ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে ছিলো। এ অবস্থায় পেশা পরিবর্তন করে কখনো ফেরিওয়ালা, গার্মেন্টসের অপারেটর, রাজমিস্ত্রী, ইলেক্ট্রিক, স্যানিটারী মিস্ত্রী হিসেবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছিলেন শাহিন।

বাংলাদেশ জার্নাল/সুজন/মনির

  • সর্বশেষ
  • পঠিত