মাকে হুমকি দিয়ে কিশোরী মেয়েকে অপহরণ, দুইমাস পর উদ্ধার
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৯:২৬
চট্টগ্রাম নগরীর ডবলমুরিংয়ে অপহৃত কিশোরীকে কুমিল্লা থেকে উদ্ধার করেছে র্যাব। এ সময় অপহরণের অভিযোগে মো. মনির হোসেন ও তার দুই সহযোগীকে ৩ হাজার ৭৫২ ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার বিষয়টি জানায় র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নুরুল আবছার। এর আগে সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে কুমিল্লার কোতায়ালী থানার দৌলতপুর এলাকার একটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। একইসঙ্গে অপহৃত কিশোরীকেও উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— কুমিল্লা জেলার বাঙ্গরা বাজারের হায়দারাবাদ এলাকার আব্দুল হামিদের ছেলে মো. মনির (৩৫) এবং তার দুই সহযোগী সকিনা আক্তার ওরফে ফারজানা (৩০) ও শিমুল আক্তার (৪০)।
র্যাব জানায়, অপহৃত ১৫ বছর বয়সী কিশোরী পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করেছে। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে সে আর লেখাপড়া করেনি। আসামি মনির তার মায়ের সম্পর্কে ভাগিনা হতো। সেই সুবাদে সে প্রায়ই ওই কিশোরীর বাড়িতে আসা-যাওয়া করতো। গত কয়েক মাস আগে মনির হোসেন তার তিনজন স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও ওই কিশোরীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। তখন ওই কিশোরীর মা বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয় এবং তার নাবালিকা মেয়ের সাথে কোনো প্রকার যোগাযোগ কিংবা উত্যক্ত না করার জন্য নিষেধ করেন। এতে মনির ক্ষিপ্ত হয়ে কিশোরীর মাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয় মনির এবং যে কোনো সময় তার মেয়েকে উঠিয়ে নিয়ে যাবে বলে হুমকি দেয়।
গত ২২ জুলাই দুপুরে ভুক্তভোগী কিশোরী বাসা থেকে বের হলে মনির পূর্বপরিকল্পিতভাবে কিশোরীকে ফুঁসলিয়ে একটি প্রাইভেটকারে তুলে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। সন্ধ্যা পর্যন্ত বাসায় ফিরে না আসায় তার মা সকল সম্ভাব্য স্থানে খোঁজাখুঁজি করে। মেয়েকে না পেয়ে চট্টগ্রাম নগরের ডবলমুরিং থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে কিশোরীর মা তার বোনের কাছ থেকে জানতে পারেন মনির হোসেন তার সহযোগী রাকিবের সহায়তায় তার মেয়েকে অপহরণ করেছে। ওই ঘটনায় গত ২৮ জুলাই কিশোরীর মা বাদী হয়ে ডবলমুরিং থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
র্যাব কর্মকর্তা নুরুল আবছার বলেন, অপহরণের বিষয়টি আমাদের জানালে আমরা গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করি। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল সোমবার কুমিল্লার দৌলতপুরে একটি ফ্ল্যাট বাসা থেকে অপহৃত কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়। এছাড়া অপহরণের সাথে জড়িত মনির হোসেনকে তার দুই নারী সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩ হাজার ৭৫২ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা তারা জানায়, মনির তার সহযোগী রাকিবের সহায়তায় দুই মাস আগে ওই কিশোরীকে অপহরণ করে কুমিল্লায় নিয়ে যায়। সেখানে একটি ফ্ল্যাটে আটকে রেখে মাদকাসক্ত করে মাদক পাচারের কাজে ব্যবহার করার চেষ্টা করে কিশোরীকে। গ্রেপ্তারকৃত মনির ও তার দুই নারী সহযোগীকে কুমিল্লার কোতোয়ালী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। উদ্ধার করা কিশোরীকে হস্তান্তর করা হয় ডবলমুরিং থানায়।
বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে