ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা: তিনজন গ্রেপ্তার, সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশের হাতে

  বগুড়া প্রতিনিধি

প্রকাশ : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৮:৪০  
আপডেট :
 ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৮:৫১

আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা: তিনজন গ্রেপ্তার, সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশের হাতে
হত্যাকাণ্ডের শিকার শেখ মর্তুজা কাওসার অভি। ফাইল ফটো

বগুড়ার শেরপুরে পৌর আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মর্তুজা কাওসার অভি (৩৮) হত্যার ঘটনায় ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের ৮ নেতাকর্মীর নামে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার নিহতের স্ত্রী খাদিজা আক্তার লিমা বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। পরে এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

নিহত অভি পৌর এলাকার খন্দকার পাড়ার মৃত হোসাইন কাওসার ফুয়াদের ছেলে। তিনি পৌর আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।

মামলার আসামিরা হলেন- শহরের খন্দকারপাড়ার সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম রাঞ্জুর ছেলে পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ হিমেল (৩২), শহরের পূর্ব দত্তপাড়া এলাকার গোলাম মোস্তফা ড্রাইভারের ছেলে যুবলীগকর্মী সোহাগ হোসেন (৩০), শহরের নয়াপাড়া এলাকার জাহিদ হোসেন (২৬), শহরের নয়াপাড়া এলাকার জিল্লুর রহমানের ছেলে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুর রহমান শুভ (৩৫), শহরের নয়াপাড়া (কোর্টপাড়া) এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে মির্জাপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম (৩২), শেরপুর পৌর শাখা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক (রুহান-কারিমুল কমিটি) মো. রকি (২৭), শেরুয়া গ্রামের পাকছার আলীর ছেলে শেরপুর পৌর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বাপ্পি (৩৭) এবং শহরের উলিপুরপাড়া আলতাব হোসেনের ছেলে পৌর যুবলীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক এনামুল মুসলিমিন সোহাগ (৩৫)। এছাড়া আরও ৮-৯ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। এদের মধ্যে এজহারভুক্ত হিমেল, সোহাগ ও জাহিদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মামলা সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ নেতা অভির সঙ্গে ঠিকাদারি ও হাটের ইজারা ব্যবসা নিয়ে আসামিদের বিরোধ ছিল। সেই বিরোধের জের ধরে ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় মোটরসাইকেল মেরামতের জন্য উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন মোজাহিদ গ্যারেজে যাওয়ার সময় পূর্বপরিকল্পিতভাবে আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ হিমেল অভিকে ডেকে নিয়ে গ্যারেজের দক্ষিণ পাশের ফাঁকা বাগানে যান।

এ সময় শরীফ নামের যুবক সাধারণ লোকজনকে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যায়। এই সুযোগে আগে থেকেই ওঁত পেতে থাকা মামলার অন্য আসামিরা এসে অভির সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এ সময় তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। প্রাণ বাঁচাতে বাগানের ভেতর দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন অভি। পরে রাম-দা, চাপাতি ও চায়নিজ কুড়াল দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা। এরপর আশঙ্কাজনক অবস্থায় অভিকে উদ্ধার করে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক অভিকে মৃত ঘোষণা করেন।

অপরদিকে ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নিহত আওয়ামী লীগ নেতার লাশ শহরের বারোদুয়ারী খন্দকারপাড়ায় নিজ বাসায় আনা হলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। পরে ওই রাতেই শেরপুর শহীদিয়া আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে নামাজে জানাজা শেষে অভিকে পারিবারিক কবরস্থানে বাবার কবরের পাশে দাফন করা হয়।

মামলার বাদী খাদিজা আক্তার লিমা বলেন, আমার স্বামীর হত্যাকারীরা খুবই প্রভাবশালী। ঘটনার পর থেকেই তাদের নামে মামলা না করার জন্য নানাভাবে আমাকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছিল। আমি সেসব বাধা উপেক্ষা করে আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আমার স্বামীকে ডেকে নিয়ে গিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমার স্বামীর হত্যাকারীরা যত বড়ই প্রভাবশালী হোক না কেন, আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। ন্যায়বিচার পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সহযোগিতার জন্য আকুল আবেদন জানান তিনি।

শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান খোন্দকার বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা নেয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে মামলার এজাহারভুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ আমাদের কাছে রয়েছে। কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি হয়রানির শিকার হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত