ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

তিন বছর পর সুতারকান্দি স্থলবন্দর দিয়ে আসছে ভারতের কয়লা

  সিলেট প্রতিনিধি

প্রকাশ : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২১:৪৭

তিন বছর পর সুতারকান্দি স্থলবন্দর দিয়ে আসছে ভারতের কয়লা
সুতারকান্দি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে কয়লা আমদানি শুরু। ছবি: প্রতিনিধি

দীর্ঘ প্রায় তিন বছর পর সিলেটের বিয়ানীবাজারস্থ সুতারকান্দি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে কয়লা আমদানি শুরু হয়েছে। এতে আশার সঞ্চার হয়েছে আমদানিকারকদের মধ্যে।

শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে দীর্ঘ প্রত্যাশার কয়লাবাহী ট্রাকগুলো দেশের ভেতর প্রবেশ করলে সেখানে ব্যবসায়ীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা যায়। একইসাথে উচ্ছ্বসিত ছিল দীর্ঘদিন থেকে কয়লা আমদানি বন্ধে বেকার থাকা কয়েক হাজার শ্রমিক। এ সময় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা কয়লাবাহী ট্রাকগুলোকে স্বাগত জানান।

সিলেট কয়লা আমদানিকারক সমিতি সূত্রে জানা যায়, স্বাভাবিক সময়ে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের বিভিন্ন খনি থেকে প্রতিদিন সিলেট বিভাগের তামাবিল, বড়ছড়া, চারাগাঁও ও বাগলী সীমান্ত দিয়ে প্রায় ১০ হাজার টন কয়লা আমদানি হয়ে থাকে। দেশের চাহিদার প্রায় ৭০ শতাংশই পূরণ করে ভারত থেকে আসা কয়লা।

অথচ ২০১৮ সালের ১ জুন আন্তঃরাষ্ট্রীয় স্বার্থে কয়লা রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারত। পরে ওই বছরের ৪ ডিসেম্বর ভারতীয় আদালত মেঘালয়ের বিভিন্ন খনিতে উত্তোলনকৃত কয়লা পরবর্তী ২০১৯ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত রপ্তানির অনুমতি দেয়। এরপর বাংলাদেশের আমদানিকারকরা এলসির মাধ্যমে একই বছরের ২২ ডিসেম্বর থেকে আমদানি শুরু করেন। কিন্তু হঠাৎ করে ১৫ জানুয়ারি থেকে কয়লা আমদানি বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেন ভারতের উচ্চ আদালত।

নির্ধারিত সময়ের ১৬ দিন আগে আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েন আমদানিকারকরা। আমদানির জন্য রপ্তানিকারকদের অগ্রীম টাকা দিলে সে টাকাও আটকে যায়। এছাড়া সিলেটের চার সীমান্তে কয়লা পরিবহন এবং লোড-আনলোডের সঙ্গে জড়িত প্রায় পাঁচ সহস্রাধিক শ্রমিকও বেকার হয়ে পড়েন।

সিলেট কয়লা আমদানিকারক সমিতির সদস্য মো. আবুল কালাম জানান, আমদানি বন্ধ থাকায় শুধু দুই দেশের ব্যবসায়ীই নয়, বাংলাদেশ সরকারও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হয়। ভারতের কয়লার যোগান না পেয়ে দেশের মানুষও তাদের প্রয়োজন মেটায় তুলনামূলক কম মানের ইন্দোনেশিয়ান কয়লা দিয়ে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় অনেকে। তবে শুক্রবার থেকে ফের কয়লা আমদানি শুরু হওয়ায় তাদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে।

তিনি বলেন, কয়লা আমদানি শুরু হলে দুই দেশের সরকার ও ব্যবসায়ীরা লাভবান হন। তাই কয়লা রপ্তানি চালু রাখার জন্য তিনি ভারত সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতি অনুরোধ জানান।

সিলেট কয়লা আমদানিকারক সমিতির সভাপতি চন্দন সাহা বলেন, সিলেটের একটি স্থলবন্দর ও তিনটি শুল্ক স্টেশন দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার টন কয়লা আমদানি হতো। প্রতি টন কয়লা আমদানিতে সরকার রাজস্ব পেতো প্রায় ১৬০০ টাকা। সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী সরকার টনপ্রতি রাজস্ব পায় প্রায় ৩ হাজার টাকা। সে হিসাবে দীর্ঘ তিন বছরে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব বঞ্চিত হয় সরকার। একইসাথে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ব্যবসায়ীরা। এমন বাস্তবতায় ব্যবসায়ীরা নানাভাবে কয়লা আমদানি শুরুর চেষ্টা করলেও সফল হননি।

তিনি আরও বলেন, সর্বশেষ ভারত সরকার কয়লা রপ্তানির নীতিগত সিদ্ধান্ত নিলে শুক্রবার থেকে ফের কয়লা আমদানি শুরু হয়। দুই দেশের স্বার্থ বিবেচনায় ভারত সরকার কয়লা রপ্তানি চালু রাখবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত