ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২০ মিনিট আগে
শিরোনাম

জঙ্গি সন্দেহে ফরিদপুরের নিখোঁজ চিকিৎসক গ্রেপ্তার

  ফরিদপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৮ নভেম্বর ২০২২, ০০:৩৩  
আপডেট :
 ১৮ নভেম্বর ২০২২, ০২:৪২

জঙ্গি সন্দেহে ফরিদপুরের নিখোঁজ চিকিৎসক গ্রেপ্তার
ডা. জাকির হোসেন। ছবি: প্রতিনিধি

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নিখোঁজ হওয়া মেডিকেল অফিসার ডা. জাকির হোসেনকে জঙ্গি সন্দেহে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকার কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সিটিটিসির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আহমেদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে বুধবার সকাল ৮টার দিকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। রিমান্ডে নেয়ার জন্য আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত তখন দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে।

সিটিটিসির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আহমেদুল ইসলাম বলেন, ডা. জাকির হোসেন নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সক্রিয় সদস্য। তাকে প্রথম গ্রেপ্তারের সময় তার নাম ইব্রাহিম বলেন। পরে জিজ্ঞেসাবাদের একপর্যায়ে সে স্বীকার করেন তার নাম জাকির হোসেন।

তিনি বলেন, সে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে পড়ালেখা করতেন। সে সেখানে পড়ালেখার সময় থেকেই নিষিদ্ধ আনসার আল ইসলামের সাথে জড়িয়ে পড়েন। এ সংগঠনেরই একটি ব্লগে লেখালেখি করতেন ডা. জাকির।

এদিকে, নিষিদ্ধ আনসার আল ইসলামের 'দাওরা' নামের একটি কোর্স করতে ঢাকায় এসেছিলেন জাকির। এ কোর্সটি সাধারণত তিনদিন থেকে পাঁচদিন হয়ে থাকে বলে জানান সিটিটিসির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আহমেদুল ইসলাম।

এ অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আরও বলেন, জাকিরকে জিজ্ঞেসাবাদের জন্য দুাইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। জিজ্ঞেসাবাদ শেষে আরও কিছু তথ্য পাওয়া যাবে বলে ধারণা করছি।

মো. জাকির হোসেন মানিকগঞ্জ শহরের বনগ্রাম আবাসিক এলাকার বাসিন্দা মো. সামসুল আলম ও জেসমিন আক্তার দম্পতির ছেলে। তিনি বিবাহিত এবং এক সন্তানের বাবা। ৩৮তম বিসিএস-এর এই কর্মকর্তা ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর ভাঙ্গার তুজারপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সহকারী সার্জন হিসেবে যোগ দেন। কিন্তু তুজারপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে না থাকায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়। সেই থেকে গত তিন বছর ধরে তিনি এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত।

ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার সহকর্মী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, গত ৮ নভেম্বর হাসপাতালে কাজ শেষ করে সহকর্মী ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে খুদেবার্তা পাঠানোর পর ডা. জাকির হোসেনের আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। এরপর থেকেই তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও তার শ্বশুর গত বৃহস্পতিবার ভাঙ্গা থানায় দুইটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

জিডির বিবরণ থেকে জানা যায়, গত ৮ নভেম্বর দুপুর ২টা পর্যন্ত জাকির হোসেন ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগের দায়িত্ব শেষ করে হাসপাতাল ত্যাগ করেন। ৯ নভেম্বর রাত ১২টা ৩ মিনিটে জাকির হোসেনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে তার স্ত্রীর কলির ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে খুদেবার্তায় জানানো হয়– বিদ্যুৎ নেই, তার মোবাইল ফোন যেকোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে। একইদিন ভোর ৫টা ৫৪ মিনিটে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার মোবাইল ফোনে জাকির হোসেনের ফোন থেকে খুদেবার্তায় জানানো হয়– শাশুড়ি অসুস্থ; জরুরি ঢাকায় যেতে হবে। আগামীকাল (১০ নভেম্বর) ফিরতে একটু দেরি হবে।

ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহসিন উদ্দিন ফকির বলেন, আমি থানায় কথা বলে জানতে পেরেছি ডা. জাকির হোসেনকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের সদস্য।

ভাঙ্গা থানার ওসি মো. জিয়ারুল ইসলাম বলেন, ঢাকার কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট যাত্রাবাড়ী থেকে ডা. জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে, বিষয়টি শুনেছি। এর আগে চিকিৎসক জাকির হোসেনের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ও তার শ্বশুর ভাঙ্গা থানায় দুইটি জিডি করেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/জিকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত