ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

মাদকের গডফাদারদের ধরতে চাই, চুনোপুঁটিদের নয়

টঙ্গীতে পুলিশ-ব্যবসায়ি অঙ্গীকার

  গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৬ নভেম্বর ২০২২, ১৮:৪৩  
আপডেট :
 ২৬ নভেম্বর ২০২২, ১৮:৫২

মাদকের গডফাদারদের ধরতে চাই, চুনোপুঁটিদের নয়
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম। ছবি: প্রতিনিধি

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেছেন, আমি মাদক, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের গড ফাদারদের ধরতে চাই। চুনোপুঁটি মারতে চাই না। গড ফদারদের ধরে ধরে চুনোপুঁটিদের ধরতে চাই। আপনারা গডফাদারদের সম্বন্ধে তথ্য দেন। কারা মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজী ও সন্ত্রাসী করছে তাদের তথ্য দেন। সে যেই হউক। আমরা তাদের আইনের আওতায় আনবো।

টঙ্গী বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি মুক্ত রাখার লক্ষ্যে শনিবার দুপুরে টঙ্গীর ট্যাম্পাকো ফয়েলস লিমিটেড কারখানা চত্বরে আয়োজিত কারাখানার মালিকদের সংগঠনের সঙ্গে পুলিশের সমঝোতা স্মারক চুক্তির অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম এসব কথা বলেন। এ ব্যাপারে পুলিশ ও শিল্প কারখানার মালিকরা পরস্পর অঙ্গীকারাবদ্ধ হন।

টঙ্গী বিসিক শিল্প নগরী মালিক কল্যাণ সমিতি ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের যৌথ আয়োজনে এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন টঙ্গী বিসিক শিল্প নগরী মালিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি সৈয়দ তানভীর হোসেন। এতে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. জাহাঙ্গীর আলম, গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার মোহাম্মদ ইলতুৎমিশ, মোহাম্মদ ইব্রাহিম খান ও মো. মাহবুব উজ্জামান, অনন্ত মোম্পানিজের এমডি ও বিজিএমইএ’র পরিচালক মো. ইনামুল হক খান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন শেখ।

পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, আমরা এ অঞ্চলে মাদক নির্মূল করতে চাই। আপনারা জানেন, কারখানার পন্যবাহী গাড়ির চালক-হেলপাররা অনেক সময় মাদক গ্রহণ করেন। তারা অনেক সময় কারখানার মালামাল চুরির সঙ্গেও জড়িত থাকেন। তারা পণ্য পরিবহন করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পতিত হন এবং ব্যবসায়ীদের শিপমেন্ট মিস করেন। এজন্য টঙ্গীর বিসিক শিল্প নগরীর যত ড্রাইভার-হেল্পার আছেন তাদের ডোপ টেস্টের মাধ্যমে মাদক গ্রহণ করে কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। তারা যদি মাদক গ্রহণ করে তবে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। যাতে ব্যবসা তথা শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো সুন্দরভাবে পরিচালিত হতে পারে ও তাদের পণ্যসমূহ সরবরাহ নিশ্চিত ও যথাসময়ে হতে পারে। পর্যায়ক্রমে গাজীপুর মহানগরের যতগুলো শিল্পপ্রতিষ্ঠান আছে তাদের ড্রাইভার-হেলপার ও শ্রমিকদের এ কর্মসূচির আওতায় আনা হবে।

পুলিশ কমিশনার বলেন, মাদকের গডফাদারদের ধরতে চাই, চুনোপুঁটিদের নয়। যাদের দেশপ্রেম নাই তারাই মাদকের সঙ্গে জড়িত। তাই আমরা তাদের ধরতে চাই। আজ থেকে টঙ্গী শিল্প নগরীতে মাদকের কোন কারবার চলবে না। মাদকের সঙ্গে পুলিশ জড়িত থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এজন্য নিজেদের ঘর সামলানো হবে আগে। মাদক কারবারীরা যত শক্তিশালী হোক না কেন তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। আপনারা মাদকের খবর পুলিশের ওসিকে, এসিকে বা ডিসিকে জানাবেন। তারা অসহযোগিতা করলে আমাকে ফোনে কিংবা হোয়াটসঅ্যাপে তথ্য দেবেন। সঙ্গে সঙ্গে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি বলেন, ব্যবসায়িরা এ দেশের সূর্য সন্তান। তাদের মাধ্যমে এদেশের মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে। তারা নিজেদের উন্নয়ন ছাড়াও এ দেশকে উন্নত করছে। আপনাদের হাত ধরে এ দেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। আমরা চাই এ দেশ উন্নত হউক, উন্নয়ন হউক। আরো শিল্প কারখানা গড়ে উঠুক। বেকার সমস্যার সমাধান হউক। বেকারদের কর্মসংস্থান হউক। যতই বেকারদের কর্মসংস্থান হবে ততই দেশে মাদকসেবীর সংখ্যা কমবে। দেশে সন্ত্রাস কমবে। কারণ যেই লোক সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। সে মাদক গ্রহণ করেনা বলে আমি বিশ্বাস করি। সেই লোক চাঁদাবাজী করে না বলে আমি বিশ্বাস করি। পুলিশ এ ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতা করবে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিদের উদ্দেশে পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, আপনারা জানেন মরহুম আহসান উল্লাহ মাস্টার টঙ্গীতে নির্মমভাবে খুন হন। এসব সন্ত্রাসীদের কারণে। চাঁদাবাজরা তাকে খুন করে ফেলেন। আমি চাই এ এলাকা মাদকমুক্ত সন্ত্রাসমুক্ত হউক।

টঙ্গীতে এ সমঝোতা স্মারকে পুলিশের পক্ষে উপ-কমিশনার মো. মাহবুব উজ্জামান এবং শিল্প মালিকদের পক্ষে টঙ্গী বিসিক শিল্প নগরী মালিক কল্যাণ সমিতির সভাপিত সৈয়দ তানভীর হোসেন স্বাক্ষর করেন। শিল্প প্রতিষ্ঠানে এ ধরণের স্মারক চুক্তি এটিই প্রথম বলেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন শেখ।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত