সমকামিতার কারণে বালু ব্যবসায়ী কাউসারকে হত্যা: পুলিশ
ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২২, ১৭:৫২
সমকামিতার বলি হলেন ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার বালু ব্যবসায়ী কাউসার খান (৪০)। সাফায়ত ইসলাম সিফাত (১৬) নামের এক তরুণ উপর্যুপরি ছরিকাঘাত করে তাকে হত্যা করে বলে দাবি পুলিশের। পরে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যার সাথে জড়িত অভিযোগে সিফাতকে ও হত্যার আলমত নষ্ট করার অপরাধে সিফাতের পিতা মো. শাহিন মোল্লাক (৫০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রবিবার (২৭ নভেম্বর) বিকাল ৩টায় ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেসব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান সাংবাদিকদের কাছে এসব তথ্য জানান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ ইমদাদ হুসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার, চরভদ্রাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিন্টু মন্ডল, ডিবির ওসি মোহাম্মদ মামুনুর রশীদসহ পুলিশের কর্মকর্তাবৃন্দ ও গণমাধ্যমকর্মীরা।
প্রেসব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান সাংবাদিকদের বলেন, নিহত বালু ব্যবসায়ী কাউসার খান সিফাতকে বিভিন্ন সময়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে সমকামিতায় বাধ্য করতেন। বালু ব্যবসায়ী কাউসারকে হত্যার দিন সিফাতকে সমকামিতায় বাধ্য করেছিলেন। সমকামিতার এক পর্যায়ে সুইচ চাকু দিয়ে কাউসারের গলায় আঘাত করেন সিফাত। পরে কাউসার মাটিতে উপুড় হয়ে লুটিয়ে পড়লে পিঠের ওপর বসে তার পিঠ, গলা, গর্দান ও মাথার পেছনের অংশে উপর্যুপরি চাকু দিয়ে ঘাত করে কাউসারের মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরে তাকে বালুচাপা দিয়ে তার (কাউসার) মোটরসাইকেল নিয়ে পালায় সিফাত।
এ হত্যাকাণ্ডের পর ঘটনার রহস্য উদঘাটনে পুলিশ সুপার মো. শাহজাহানের নির্দেশ মাঠে নামেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকারের নেতৃত্ব ডিবি পুলিশসহ পুলিশের একটি বিশেষ টিম। তারা বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করেন। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় সিফাতের হত্যার ব্যাপারটি জানতে পারে পুলিশ।
প্রেসব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান
পরে সিফাতকে গ্রেপ্তার করে ব্যাপক জিজ্ঞেসাবাদে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে সিফাতের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাদের নিজ বাড়ি থেকে মোবাইলের পোড়া অংশবিশেষ, গায়ে পরিহিত জ্যাকেট, পরিহিত শার্ট, প্যান্ট ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু উদ্ধার করা হয়। পরে এঘটনায় ফরিদপুরের চরভদ্রাসন থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
প্রসঙ্গ, শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) রাত থেকে নিখোঁজ ছিলেন বালু ব্যবসায়ী মো. কাউসার খান। পরদিন (২৬ নভেম্বর) সকালে উপজেলার চর হরিরামপুর ইউনিয়নের জাজেরার সূরার ভাঙ্গা মাথা নামক স্থানে পদ্মার বালুচরে তার মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
অন্যদিকে, খবর পেয়ে ওইদিনই ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকার ও চরভদ্রাসন থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ওই সময় পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়েছিলেন।
বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি