ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২০ মিনিট আগে
শিরোনাম

প্রধানমন্ত্রীকে বরণের অপেক্ষায় চট্টগ্রামবাসী

  চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৩ ডিসেম্বর ২০২২, ০৯:৫৯  
আপডেট :
 ০৩ ডিসেম্বর ২০২২, ১৬:৪৫

প্রধানমন্ত্রীকে বরণের অপেক্ষায় চট্টগ্রামবাসী
চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ডে আওয়ামী লীগের জনসভা। ছবি: বাংলাদেশ জার্নাল

আর মাত্র একদিন। আগামীকাল রোববার চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ডে আওয়ামী লীগের জনসভায় আসছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জনসভাকে কেন্দ্র করে পাল্টে গেছে বন্দরনগরীর চিত্র। পুরো নগরজুড়ে করা হয়েছে সাজসজ্জা, রাতে করা হচ্ছে লাইটিং। উৎসবের আমেজ শহরের প্রতিটি প্রান্তে। কারণ, বহুদিন পর আসছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

১০ বছর আগে ২০১২ সালের ২৮ মার্চ চট্টগ্রামের এই ঐতিহাসিক পলোগ্রাউন্ড মাঠে প্রধানমন্ত্রী বিশাল জনসভায় ভাষণ দিয়েছিলেন। আগামী ২০২৪ সালে জাতীয় নির্বাচনের আগে চট্টগ্রামে আগামীকালের জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামবাসীকে বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্প উপহার দেবেন। অবশ্য চট্টগ্রামবাসী না চাইতেই প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়েছিলেন। আর সে অনুযায়ী বৃহত্তর চট্টগ্রামের ব্যাপক ভৌত কাঠামোর উন্নয়ন হয়েছে ও অনেক উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে। আগামীকাল চট্টগ্রামে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীনে ৩০টি উন্নয়ন প্রকল্প ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনযোগ্য ৪টি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন।

শহর ও জনসভাস্থল ঘুরে দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে সংস্কার হয়েছে রাস্তা-ঘাট। বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন, দেওয়াল লেখন, আলোকসজ্জা ও তোরণ নির্মাণসহ সাজসজ্জার কাজ চলছে পুরোদমে। চলছে মাইকিংসহ প্রচার-প্রচারণাও। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে উন্মুখ হয়ে আছেন চট্টগ্রামের সর্বস্তরের মানুষ।

প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করেছে চট্টগ্রামের সব ধরনের সেবা সংস্থাগুলো। পুরো নগরজুড়ে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের প্রস্তুতি নিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর আগমনের দিনে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য কাজ করছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এদিন চট্টগ্রামে কোনো ধরনের লোডশেডিং হবে না বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ বিতরণ চট্টগ্রাম দক্ষিণ অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী এম রেজাউল করিম বলেন, পলোগ্রাউন্ড মাঠের জনসভা ঘিরে সকল বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার ঠিক করা হচ্ছে। যাতে ওদিন নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেয়া যায়। এছাড়া সেদিন যদি কোনো ধরনের বড় কোনো সমস্যা না হয়, তাহলে ভোর থেকেই প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামে থাকা পর্যন্ত কোনো রকম লোডশেডিং হবে না।

প্রধানমন্ত্রী যাওয়ার সম্ভাব্য সব পথে পাইপ লাইনের লিকেজ আছে কিনা তা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে, থাকলে তা সারাতে তড়িৎ ব্যবস্থা নিচ্ছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। এছাড়াও জনসভা ঘিরে খাওয়ার, গণশৌচাগারের আর নগরের রাস্তায় ছিঁটানোর জন্য পানির জোগান দিচ্ছে সংস্থাটি।

ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী আগমন ঘিরে বিশেষ প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর গমনাগমনের সম্ভাব্য সব রাস্তায় ওয়াসার পাইপ লাইন পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে, যাতে কোথাও কোন লিকেজ না থাকে। এছাড়া জনসভাস্থলে সাধারণ মানুষের জন্য করা হয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা। ৪টি ট্রাকে করে জোগান দেয়া হবে জনসমাগমে আসা নেতাকর্মীদের খাবার পানি। খাবার পানির জন্য আরও ৫০টি পানির ট্যাঙ্ক বসানো হবে বিভিন্ন স্থানে। তাছাড়া পানির জন্য বসানো হচ্ছে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন দুইটি পাম্প, যা দিয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পানি সংগ্রহ করা হবে।

ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, টানা ১০ বছর পর চট্টগ্রামে জননেত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের মাটিতে পা রাখছে। পলোগ্রাউন্ড মাঠে জনসভা ঘিরে ব্যাপক জনসমাগম হবে। সেখানে যাতে পানি নিয়ে কোন বিড়ম্বনায় পড়তে না হয় তাই রেলওয়ের কাছ থেকে পানি সংগ্রহ করে সরবরাহ করা হবে। আমরা চাই প্রধানমন্ত্রী নতুনভাবে, নতুন রূপে চট্টগ্রামকে আবিস্কার করুক।

এদিকে জনসভাকে কেন্দ্র করে নগরজুড়ে নিশ্ছিদ্র ও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা জানিয়েছে প্রশাসন। সাড়ে ৭ হাজার পুলিশ সদস্য জনসভার নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্টোপালিটন পুলিশের কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়। এর মধ্যে নগরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন, গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি, জনসভা মঞ্চ ঘিরে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। এছাড়াও পলোগ্রাউন্ডের চারপাশে ও ভেতরে টহল দিচ্ছেন গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশ ও বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা।

জনসভার প্রস্তুতি সম্পর্কে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এম.পি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ক্ষমতা গ্রহণের ১০ বছর পর চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ডে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ও স্থানীয় ইস্যু সম্পর্কে মুক্ত কণ্ঠে কথা বলবেন। প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে ঘিরে পুরো চট্টগ্রাম জুড়ে উৎসব বিরাজ করছে। শুধু শহরে নয়, উপজেলা থেকে শুরু করে গ্রামের মানুষও প্রধানমন্ত্রীকে এক পলক দেখতে ৪ ডিসেম্বর পলোগ্রাউন্ডে চলে আসবেন। তাই এই জনসভাকে সফল করে তোলার জন্য চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের প্রতিটি স্তরের নেতাকর্মীদের দায়িত্ব পালন করতে হবে।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, মহানগর আওয়ামী লীগ সুশৃঙ্খল ও সুসংগঠিত। তাই ৪ ডিসেম্বর উৎসবমুখর পরিবেশে শুধু পলোগ্রাউন্ড ময়দান নয়, সারা চট্টগ্রাম নগরীকে জনসমুদ্রের জনতরঙ্গে উদ্বেলিত করে তুলতে হবে। প্রিয় নেত্রীকে দেখতে চট্টগ্রামের হাজার হাজার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবেই চলে আসবে। এতে সভাস্থল ছাপিয়ে আশপাশের এলাকাও জনসমুদ্রে পরিণত হবে। ৪ ডিসেম্বর পলোগ্রাউন্ডে শেখ হাসিনার জনসভার মাধ্যমে দেশবাসীকে জানান দিতে হবে আওয়ামী লীগ অবিনশ্বর এবং অপরাজেয় সংঘশক্তি।

জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় ১০ লক্ষ মানুষের সমাগম ঘটাতে চায় আওয়ামী লীগ। এজন্য প্রতিটি উপজেলা, থানা, ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, ইউনিটে প্রচারণা শুরু হয়েছে। দলীয় বর্ধিত সভা, কার্যনির্বাহী কমিটির সভা করে নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করা হচ্ছে। অনেক জায়গায় নেতাদের মধ্যে বিদ্যমান বিরোধ নিরসন করা হয়েছে। ঐক্যবদ্ধভাবে জনসভায় লোক সমাগম ঘটাতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে মাইকিং, লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। দক্ষিণ জেলার আট উপজেলা থেকে দেড় লক্ষ ও উত্তর জেলার সাত উপজেলা থেকে দেড় লক্ষ মানুষ জনসভায় আনতে ব্যাপক তৎপরতা চলছে। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে গানও বানানো হয়েছে। মঞ্চের কাজও এখন শেষ পর্যায়ে। পুরো এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা হবে। আশপাশের এলাকায় বসানো হবে এলইডি। নিরাপত্তায় সিসিটিভি আওতায় থাকবে জনসভাস্থলসহ আশপাশের এলাকা।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সালাম বলেন, ‘জনসভায় ব্যাপক লোকসমাগম ঘটানো হবে। উত্তর জেলার প্রতিটি ইউনিট থেকে নেতা-কর্মীরা জনসভায় যোগ দিবেন। ইতোমধ্যে নেতা-কর্মীরা যাওয়ার জন্য বিভিন্ন স্থান থেকে গাড়ি ভাড়া করা হয়েছে। সন্দ্বীপের লোকজন স্টিমার ও ট্রলারে করে ঘাট পার হয়ে জনসভার উদ্দেশ্যে রওণা হবেন। মানুষের উপস্থিতি বাড়াতে প্রচারণা চলছে।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা জনসভা সফল করতে বেশ কয়েকটি সভা করেছি। প্রতিটি সভায় লোকসমাগম বাড়াতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কোন উপজেলা থেকে কোন গেঞ্জি গায়ে দিয়ে জনসভায় আসবে সেটিও নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলায় নেতা-কর্মীরা জনসভায় আসতে উন্মুখ হয়ে আছেন। শহরের কাছাকাছি উপজেলাগুলো থেকে যাতে বেশি লোক আসে সেজন্য দায়িত্বশীল নেতাদের অনুরোধ জানিয়েছি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, নৌকা আকৃতির প্রায় সাড়ে ৩ হাজার বর্গফুটবিশিষ্ট মঞ্চটিতে বসতে পারবেন প্রায় ২০০ জন নেতা। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চে বসবেন কারা সেটি চূড়ান্ত করবে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত এসএসএফ ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। করোনা নেগেটিভ সনদসহ এসএসএফের সম্মতি সাপেক্ষেই নেতারা মঞ্চে উঠতে পারবেন। সূত্রমতে, জেলার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সহসভাপতিসহ সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যরা শুধু মঞ্চে বসতে পারবেন। সদস্যরা বসবেন মঞ্চের নিচে সামনের সারিতে। এর পাশাপাশি যেসব সাংবাদিক প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠান কাভার করতে মঞ্চ ও এর আশপাশে থাকবেন ইতোমধ্যে তাদেরও করোনা পরীক্ষা করানো হয়েছে।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর মহাসমাবেশের প্রস্তুতি সম্পর্কে গতকাল শুক্রবার জামালখানে চট্টগ্রাম সিনিয়রস ক্লাবে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর-দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অতীতে চট্টগ্রামের সব জনসভার রেকর্ড ছাপিয়ে পলোগ্রাউন্ডে আগামী ৪ ডিসেম্বরের জনসভা ইতিহাস সৃষ্টি করবে। কারণ প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় এসে একের পর এক মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন। তাই চট্টগ্রামবাসী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানিয়ে একটি ঐতিহাসিক জনসভা উপহার দেবেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ জেলার সভাপতি সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, কেন্দ্রীয় উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, নগর কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী, উত্তর জেলার সভাপতি এম এ সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান প্রমুখ।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, চট্টগ্রামের জনসভায় সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করা হচ্ছে না। আওয়ামী লীগ আগেও এটা করেনি। জনসভায় দলের সভানেত্রী থাকবেন। তিনি যেহেতু দেশের প্রধানমন্ত্রী, তাই তার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে এসএসএফ। জনসভায় জনসমাগমের টার্গেট জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনই হিসাবটা না বলি। এই হিসাব আপনারা (সাংবাদিক) করবেন। জনসভার পর আপনাদের মুখ থেকে শোনার অপেক্ষায় আছি।

নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, পলোগ্রাউন্ড ময়দানে আমরা সবাইকে জায়গা দিতে পারব না। বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা চট্টগ্রাম শহরজুড়ে মাইকের ব্যবস্থা করেছি। জনসভাস্থলের আশপাশে এলএইডি টিভি লাগানো হবে।’

জনসভার নিরাপত্তায় পলোগ্রাউন্ড মাঠ ও আশপাশের এলাকায় অন্তত ১০০ সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে বলে জানান সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভা নিয়ে কোনো হুমকি নেই। তবুও সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ১০০ সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক প্রচেষ্টায় ইতোমধ্যেই চট্টগ্রাম বন্দর পেয়েছে নতুন রূপ, সংযুক্ত হয়েছে আধুনিক যন্ত্রপাতি, চালু হয়েছে সিটিএমএস, সংযোজিত হয়েছে নতুন নতুন ইয়ার্ড ও সার্ভিস জেটি, বন্দরের সক্ষমতা বেড়েছে বহুগুণ, বেড়েছে রাজস্ব অর্জনের পরিমাণ। নগরের পতেঙ্গা এলাকায় ৪টি জেটি নিয়ে চালু হতে যাচ্ছে পিসিটি। পতেঙ্গা, হালিশহর, কাট্টলি অংশের সমুদ্র পাড়ে তৈরি হচ্ছে মাদার ভেসেল বার্থিং করতে সক্ষমতা সম্পন্ন বে-টার্মিনাল। এছাড়া মহেশখালীতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের কাজও এগিয়ে চলেছে। বাঁশখালীর গন্ডামারা ও মহেশখালীর মাতারবাড়িতে নির্মিত হচ্ছে বৃহৎ আকারের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। দক্ষিণ চট্টগ্রাম, বান্দরবান, কক্সবাজারের সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগ সহজতর করতে কর্ণফুলীর তলদেশ দিয়ে দুই টিউববিশিষ্ট দক্ষিণ এশিয়ার দীর্ঘতম সুড়ঙ্গ সড়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নির্মাণ করা হয়েছে। পতেঙ্গা হতে ফৌজদারহাট পর্যন্ত সমুদ্রতীর ধরে নির্মিত হয়েছে মেরিন ড্রাইভ সিটি আউটার রিং রোড। বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরী, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল লাইন হচ্ছে। এর ফলে চট্টগ্রামসহ এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক, সামাজিক অবস্থা এবং মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হয়েছে। এই উন্নয়ন ও দিনবদলের নেতৃত্ব দেয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বরণ করতে এবং তার মুখে আগামীর বার্তা শুনতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন চট্টগ্রামবাসী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম সফরে ৩০টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করবেন। একইসাথে আরও চারটি প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনও করবেন তিনি।

সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের লালদীঘি মাঠে নির্মিত ৬ দফা মঞ্চসহ চট্টগ্রামের ১৮টি স্কুল–কলেজ ভবনের উদ্বোধন করবেন। এছাড়াও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে আধুনিক জাতিসংঘ পার্ক এবং মেরিন একাডেমির আধুনিকীকরণসহ ৪টি প্রকল্পের। কারিগরী ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অধীনে সীতাকুণ্ড টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ, ফটিকছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ এবং রাউজান টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে।

এছাড়া কোতোয়ালী থানাধীন দারুল উলুম আলীয়া মাদ্রাসার একটি ৬ তলা ভবন এবং সীতাকুণ্ড টেকনিক্যাল স্কুলে একটি ৫ তলা ভবন ও একটি ৪ তলা প্রশাসনিক ভবন, ওয়ার্কশপ, একতলা সার্ভিস এরিয়া ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণসহ ভবন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অধীনে কোতোয়ালী থানাধীন গুল–এ জার বেগম সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ তলা ভবন, কাপাসগোলা সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ তলা ভবন, চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে ১০ তলা একাডেমিক ভবন, কুসুমকুমারী সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ তলা ভবন, পূর্ব বাকলিয়া সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ তলা ভবন, মীরসরাই উপজেলার করেরহাট কে.এম. উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪ তলা ভবন, পাঁচলাইশ থানাধীন বন গবেষণাগার উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ তলা ভবন, বোয়ালমারী উপজেলাধীন হাজী মোহাম্মদ জানে আলম উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪ তলা ভবন, পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪ তলা ভবন, সন্দ্বীপের সন্তোষপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪ তলা ভবন এবং ডবলমুরিং থানাধীন সরকারি সিটি কলেজে ১০ তলা একাডেমিক ভবনের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করা হবে।

এছাড়া উদ্বোধন করা হবে পলোগ্রাউন্ড বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি ভবন সমপ্রসারণ এবং খুলশী থানাধীন সিএমপি উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি ভবনের সমপ্রসারণ কাজ। উদ্বোধন করা হবে নৌ–পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘দুইটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন (প্রতিটি ৫০০০ বিএইচপি/ ৭০ টন বোলার্ড পুল) টাগবোট সংগ্রহ’ শীর্ষক প্রকল্প ও ‘চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ড এবং টার্মিনালের জন্য প্রয়োজনীয় ইক্যুইপমেন্ট সংগ্রহ’ শীর্ষক প্রকল্প।

প্রধানমন্ত্রী সেদিন একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধনের পাশাপাশি–আনোয়ারায় বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির আধুনিকীকরণ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকায় আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন জাতিসংঘ সবুজ উদ্যান স্থাপন প্রকল্প, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনে চট্টগ্রামের মীরসরাই ও সন্দ্বীপ অংশে জেটিসহ আনুষাঙ্গিক স্থাপনাদি নির্মাণ, চট্টগ্রামস্থ বিপিসি ভবন নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত