ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চলছে

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৫ জানুয়ারি ২০২৩, ১৮:৫১

মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চলছে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংগৃহীত ছবি

মহান মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের উত্থাপিত প্রস্তাবটি প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্র-বিষয়ক কমিটিতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রস্তাবটি যাতে বিবেচিত হয় সে জন্য বাংলাদেশ কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্ন উত্তরে আওয়ামী লীগের সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহর লিখিত প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সব কথা জানান।

বিকেলে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্ব অধিবেশন শুরু হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি অবিস্মরণীয় অধ্যায়। মূলত পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে সুপরিকল্পিতভাবে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করে। অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক এ বঞ্চনার বিরুদ্ধে ১৯৪৮ সাল হতে বঙ্গবন্ধু সোচ্চার ছিলেন। ভাষা আন্দোলন সংগঠন ও বাঙালির সব অধিকার আদায়ে তার ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। বঞ্চনায় পিষ্ট এ দেশের আপামর জনসাধারণ ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ ও তৎপরবর্তী ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণায় অনুপ্রাণিত হয়ে দেশ মাতৃকার স্বাধীনতার জন্য জীবন বাজি রেখে যার যা আছে তা নিয়েই সর্বাত্মক যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী এ যুদ্ধে ৩০ লক্ষাধিক মানুষের আত্মত্যাগ ও লক্ষাধিক মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করি। যুদ্ধের সময় মুক্তিকামী সাধারণ মানুষের ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের নৃশংসতা বিশ্বের অন্য যে কোনও যুদ্ধে সংগঠিত নৃশংসতাকে ছাড়িয়ে গেছে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অত্যাচার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নাৎসি নৃশংসতাসহ ইতিহাসের সব কালো অধ্যায়কে হার মানিয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে এত বেশি সংখ্যক মানুষকে হত্যা, নির্যাতন ও ধর্ষণের চিত্র ইতিহাসে আর একটিও পাওয়া যাবে না। এই ইতিহাসকে স্মরণ রেখে বিশ্বের যে কোনও প্রাপ্তে সংগঠিত গণহত্যার বিরুদ্ধে আমরা আন্তর্জাতিক মঞ্চে জোরালো প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি।

সরকারপ্রধান বলেন, আমরা সরকার গঠনের পর থেকেই মহান মুক্তিযুদ্ধে সংগঠিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্যে কূটনৈতিক পর্যায়ে নানান পদক্ষেপ চালিয়েছি। এরই ফলশ্রুতিতে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশে চালানো হত্যাযজ্ঞকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য গত বছরের ১৪ অক্টোবর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে (হাউস অব রিপ্রেজেন্টিভস) একটি প্রস্তাব আনা হয়েছে। প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছেন ওহিও অঙ্গরাজ্যের কংগ্রেসম্যান স্টিভ চ্যাট এবং ক্যালিফোর্নিয়ার কংগ্রেসম্যান রো খান্না। পরবর্তী সময়ে কো-স্পন্সর হিসেবে যোগ দিয়েছেন ক্যালিফোর্নিয়ার ক্যাটি পোর্টার এবং নিউজার্সির ট ম্যালিনোস্কি।

তিনি আরও বলেন, কংগ্রেসম্যানদের উত্থাপিত প্রস্তাবটি বিবেচনার জন্য প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্র-বিষয়ক কমিটির কাছে পাঠিয়েছে। প্রস্তাবটি যাতে বিবেচিত হয় সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ ঐকান্তিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মার্কিন আইনপ্রণেতাদের উত্থাপিত এ প্রস্তাবটি বর্তমান সরকারের কূটনৈতিক সফলতার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এ প্রস্তাবের মাধ্যমে শুধু বাংলাদেশ রাষ্ট্রকেই নয় বরং স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় অগণিত মানুষের আত্মত্যাগ বিশেষত মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের ও বীরঙ্গনা মা-বোনদের সম্মানিত করা হয়েছে।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি)। একই সঙ্গে ১০৬ নম্বরে দুর্নীতির তথ্য জানাতে মানুষকে সচেতন করতে বলা হয়েছে। ডিসিদের এই নির্দেশনা দিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দিন আবদুল্লাহ।

বুধবার (২৫ জানুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ডিসি সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান দুদক চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, জেলা প্রশাসকরা সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। তাই জেলাতে কোনো দুর্নীতি হলে তার তথ্য পাওয়ার অনেক সোর্স রয়েছে তাদের। দুর্নীতির তথ্য পেলে তারা যেন বসে না থেকে। সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ নেয়, যাতে দুর্নীতি বন্ধ হয়। জেলা প্রশাসকদের সে অনুরোধ জানিয়েছি।

দুর্নীতিবিষয়ক কোনো তথ্য ১০৬ নম্বরে ফোন করে কীভাবে জানাতে হয় সে বিষয়ে মানুষকে সচেতন করার অনুরোধ জানান দুদক চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, দুর্নীতিকে সঙ্গে রেখে স্মার্ট বাংলাদেশে পৌঁছানো সম্ভব না। দুর্নীতিকে দমনের মাধ্যমেই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখা যাবে।

জেলা-উপজেলা পর্যায়ে ভূমি অফিস এবং অনেক সময় জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ থাকে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ভূমি অফিস বা অন্য কোথাও, এছাড়া জেলা পর্যায়ে যদি দুর্নীতি হয় সে বিষয়ে নজর রাখতে জেলা প্রশাসকদের বলেছি। এ ক্ষেত্রে ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে ভূমি অফিসের দুর্নীতি কমানো যাবে।

তিনি আরও বলেন, দুর্নীতি নির্মূল করার বিষয়ে আমাদের সংবিধানেই বলা আছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আইন হয়েছে, কমিশন হয়েছে। দুর্নীতির ক্ষেত্রে সেটা ডিসি হোক কিংবা এসি (সহকারী ভূমি কমিশনার) হোক, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যাবে, সেই অভিযোগ যদি অনুসন্ধান যোগ্য হয় আমরা তা করবো।

জেলা সম্মেলনে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা অংশগ্রহণ করছে। দেশে অনেকগুলো সাংবিধানিক সংস্থা বা কমিশন থাকলেও একমাত্র দুর্নীতি দমন কমিশন ডিসি সম্মেলনে অংশ নিয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে স্বাধীন সংস্থার অংশগ্রহণ বিষয়টি কীভাবে দেখছেন- এমন প্রশ্নের উত্তরে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, এই প্রশ্নে কীভাবে রেসপন্স করবো আমি বুঝতেছি না। সরকারের মন্ত্রীরা এসেছেন, আমরাও এসেছি। আমরা আমাদের কথা বলেছি। আমাদের তো কেউ নিয়ন্ত্রণ করে বলে নাই যে- ‘তুমি এই কথা বইলো’। অন্য কমিশনকে কেন আমন্ত্রণ জানানো হয়নি সেটা আমরা জানি না।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত