ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

সাতক্ষীরার আনোয়ার হোসেনকে প্রথম ভাষা সৈনিকের স্বীকৃতির দাবিতে মানববন্ধন

  সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৯:০৩

সাতক্ষীরার আনোয়ার হোসেনকে প্রথম ভাষা সৈনিকের স্বীকৃতির দাবিতে মানববন্ধন
সাতক্ষীরার আনোয়ার হোসেনকে প্রথম ভাষা সৈনিকের স্বীকৃতির দাবিতে মানববন্ধন । ছবি: প্রতিনিধি

ভাষা শহীদ আনোয়ার হোসেনকে দেশের প্রথম ভাষা সৈনিকের স্বীকৃতি এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদার দাবিতে মানববন্ধন ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে ‘সাতক্ষীরা জেলা আনোয়ার হোসেন স্মৃতি সংরক্ষণ কমিটি’।

রোববার সকাল ১১টায় আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা বাজার সংলগ্ন আশাশুনি-সাতক্ষীরা সড়কে এ মানববন্ধন কর্মসসূচির আয়োজন করা হয়।

কমিটির আহবায়ক সচ্চিদানন্দ দে সদয়ের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব এস কে হাসান ও হাসান ইকবাল মামুনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গফুর, আশাশুনি কলেজের সহকারী অধ্যক্ষ ও বুধহাটা ইউপি চেয়ারম্যান মাহাবুবুল হক ডাবলু, সাংবাদিক কল্যাণ ব্যানার্জি, দক্ষিণের মশাল পত্রিকার সম্পাদক অধ্যক্ষ আশিক এলাহী, কুল্যা ইউপি চেয়ারম্যান ওমর সাকি পলাশ, আশাশুনি প্রেসক্লাব সভাপতি আহসান হাবীব, গ্রাম ডাক্তার কল্যাণ সমিতির সভাপতি রফিক আহমেদ, সহিদুল ইসলাম, হাসেম আলী প্রমূখ।

বক্তারা বলেন, শহীদ ভাষা সৈনিক আনোয়ার হোসেন সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। ১৯৩০ সালে নানার বাড়ি বুধহাটা গ্রামে আনোয়ার হোসেন জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম ছিল কনুই গাজী ও মায়ের নাম পরীজান বিবি। তিন ভাইয়ের মধ্যে আনোয়ার হোসেন ছিল সবার বড়। মেধাবী আনোয়ার হোসেন বাড়ি সংলগ্ন বুধহাটা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া শুরু করেন। এর পর বুধহাটা বি.বি.এম কলেজিয়েট বিদ্যালয়ের লেখাপড়ার একপর্যায়ে তিনি খুলনা জেলা স্কুলে ভর্তি হন। সেখান থেকে ১৯৪৬ সালে এসএসসি পাস করেন।

তিনি খুলনার বিএল কলেজে পড়াশুনাকালীন ভাষা আন্দোলনে যোগ দেন। তরুণ আনোয়ার হোসেন ভাষা আন্দোলনের একপর্যায়ে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ খুলনার তৎকালিন গান্ধী পার্কে (বর্তমানে হাদিস পার্ক) ভাষা আন্দোলনের পক্ষে ইস্তেহার পাঠ করার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কয়েকদিন পর তিনি মুক্তি পান। পরে ভাষা আন্দোলনের মিছিল থেকে ১৯৪৯ সালে পুলিশ তাকে আবারও গ্রেপ্তার করে প্রথমে তাকে কোতয়ালী থানায় রাখা হয়। পরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় রাজশাহী কারাগারে।

সেখানে পাকিস্তান সরকারের নির্যাতন ও নিপীড়ণের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা রাখেন তিনি। একপর্যায়ে ১৯৫০ সালে ২৪ এপ্রিল রাজশাহী জেলে খাপড়া ওয়ার্ডে গুলি চালানো হয়। তাতে সাতজন কারাবন্দি নিহত হন। তার মধ্যে ছাত্র নেতা আনোয়ার হোসেন ছিলেন অন্যতম। তাই আমরা বিশ্বাস করি মাতৃভাষা রক্ষার আন্দোলনে ভাষা সৈনিক আনোয়ার হোসেন দেশের প্রথম শহীদ। অথচ রাষ্ট্রীয়ভাবে কোন স্বীকৃতি মেলেনি তার। অবিলম্বে শহীদ আনোয়ার হোসেনকে দেশের প্রথম ভাষা সৈনিক হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদানের জন্য দাবি করেন বক্তরা।

একই সাথে আশাশুনি সরকারি কলেজের নাম ‘শহীদ ভাষা সৈনিক আনোয়ার হোসেনের’ নামে নামকরণ ও দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তার স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণসসহ সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়ক তার নামে নামকরণ করার দবি জানান বক্তরা।

মানববন্ধন শেষে আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইয়ানুর রহমানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বররাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত