ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

প্রতিবন্ধীকে মারধর করে মামলায় হয়রানি!

  প্রতিনিধি জামালপুর

প্রকাশ : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৮:১৫

প্রতিবন্ধীকে মারধর করে মামলায় হয়রানি!
বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। ছবি: প্রতিনিধি

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীকে মারধর করে উল্টো তার বাবাকে মামলায় জড়িয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালী এক পরিবারের বিরুদ্ধে।

শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে প্রতিবন্ধী মমিন মিয়ার (২৬) অসুস্থ ও বৃদ্ধ বাবা তোফাজ্জল হোসেনকে (৬৫) আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

এলাকাবাসী সূত্র জানায়, উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের চুনিয়াপটল গ্রামের মৃত ময়ান মণ্ডলের ছেলে তোফাজ্জল হোসেন ও তার বৈমাত্রেয় ভাই মোফাজ্জল হোসেন কেতুর (৬০) মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমিসংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে।

গত মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে তোফাজ্জল হোসেনের প্রতিবন্ধী ছেলে মমিন মিয়া নিজের জমিতে সেচ কাজ করতে যান। এসময় মোফাজ্জল হোসেন কেতু ও তার ছেলে মারুফ জহুরুল (৪০) তাকে একা পেয়ে বেধড়ক মারধর করে।

চুনিয়াপটল গ্রামের মিজানুর রহমান, আসর মণ্ডল, বিদ্যুৎ মিয়াসহ এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, মারধরের ঘটনায় প্রতিবন্ধীর বাবা থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে হামলাকারী মারুফ জহুরুল বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সহায়তায় মাথা ও শরীরে নিজেরাই জখম করে হাসপাতালে ভর্তি হন এবং থানায় উল্টো মামলা দায়ের করেন।

এদিকে প্রতিবন্ধীর বাবা বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যায় তার লিখিত এজাহারের বিষয়ে থানায় খোঁজ নিতে গেলে পুলিশ তাকে আটক করে। এসআই আব্দুল কাদির ঘটনার তদন্তে গিয়ে এলাকাবাসীর বক্তব্য আমলে না নিয়ে প্রভাবশালী ওই পরিবারের পক্ষে সরাসরি অবস্থান নেন বলেও এলাকাবাসী অভিযোগ করেন।

এব্যাপারে সাতপোয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নজরুল ইসলাম জানান, জমিসংক্রান্ত বিরোধে উভয়পক্ষকে গ্রাম্য সালিশে সমঝোতার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু মোফাজ্জল হোসেন কেতু সমঝোতার উদ্যোগ অমান্য করে। এরপর উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়।

এদিকে মারধরের শিকার প্রতিবন্ধীর মা জহুরা বেগম (৫৫) অভিযোগ করেন, তার পরিবার বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তার ছেলে এবং পুত্রবধূ উভয়ই প্রতিবন্ধী বিধায় পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর মতো কেউ নেই।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে মোফাজ্জল হোসেন কেতু ও তার ছেলে মারুফ জহুরুলের বাড়িতে গিয়ে পাওয়া যায়নি। তবে জহুরুলের স্ত্রী রোকসানা পারভিন বলেন, আমার শ্বশুর বা স্বামী প্রতিবন্ধীকে মারধর করেনি, সে-ই আমার স্বামীকে মেরেছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আব্দুল কাদির বলেন, মোফাজ্জল হোসেন কেতুর লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার আসামি তোফাজ্জল হোসেন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় থানায় আসেন। থানা থেকে বের হওয়ার পর তাকে আটক করা হয়। শুক্রবার দুপুরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তবে প্রতিবন্ধীকে মারধরের বিষয়ে লিখিত অভিযোগের বিষয়টি জানা নেই বলে তিনি দাবি করেন।

সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ মহব্বত কবীর মুঠোফোনে বলেন, প্রতিবন্ধীকে মারধরের অভিযোগ সত্য হলে বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত