ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১২ মিনিট আগে
শিরোনাম

সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ: নিহতদের মরদেহ হস্তান্তর

  চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০২৩, ১৯:০৫  
আপডেট :
 ০৫ মার্চ ২০২৩, ১৯:১৮

সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ: নিহতদের মরদেহ হস্তান্তর
নিহতের স্বজনদের আহাজারি । ছবি প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বেসরকারি সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত ৬ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

রোববার বিকেলে সাড়ে চারটার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গ থেকে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা শুরু হয়।

বিস্ফোরণে নিহত ৬ জন হলেন, সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী জাহানাবাদ এলাকার ইসমাইল হোসেনের ছেলে শামছুল আলম (৫৬), ভাটিয়ারী বিএমএ গেট এলাকার আবুল বাসার মিয়ার ছেলে মো. ফরিদ (৩৬), নেত্রকোনা জেলার কমলাকান্দা উপজেলার ছোট মনগড়া এলাকার চিকি রোঙ্গী লখরেটের ছেলে রতন লকরেট (৪৫), নোয়াখালী জেলার মাইজদী থানার অলিপুর এলাকার মৃত মকবুল আহমেদের ছেলে আবদুল কাদের (৫৮), লক্ষ্মীপুর জেলার কমল নগর থানার চর লরেন্স এলাকার মহিদুল হকের ছেলে মো. সালাহ উদ্দিন (৩০) ও ময়মনসিংহ জেলার সেলিম রিচিল।

নিহত ৬ জনের মধ্যে শামছুল আলম ও সালাহউদ্দিন কারখানারকর্মী নন। ঘটনার সময় তারা ছিলেন কারখানা থেকে আধা কিলোমিটার দূরে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে কর্মরত জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ এএসআই আলাউদ্দীন তালুকদার।

তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহগুলো হস্তান্তর করতে। রোববার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে পরিবারের কাছে মরদেহগুলো হস্তান্তর শুরু হয়।

এদিকে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় শেষ হয়েছে দ্বিতীয় দিনের উদ্ধার কার্যক্রম। রোববার সকাল সাড়ে ১১ টায় সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদাত হোসেন উদ্ধার কার্যক্রমের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। দ্বিতীয় দিনের উদ্ধার কার্যক্রমে নতুন করে কোন মরদেহ পাওয়া যায়নি।

ফায়ার সার্ভিসের কার্যক্রমও ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে উল্লেখ করে সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদাত হোসেন বলেন, নতুন করে কোন দুর্ঘটনার সম্ভবনা নেই। তারপরও আমরা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছি।

তিনি বলেন, যারা নিহত হয়েছেন তাদের জন্য মালিকপক্ষ থেকে একটা ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়াও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ও হতাহতদের জন্য সহায়তা কেন্দ্র এবং কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।

সকাল ৯টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বিস্ফোরক অধিদপ্তরের পরিদর্শক মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, প্ল্যান্ট থেকে যে কলামের মাধ্যমে অক্সিজেন সিলিন্ডারে ভরা হয়, সেটি বিস্ফোরিত হয়েছে। অক্সিজেন ছাড়াও কার্বন ডাই-অক্সাইড ও নাইট্রোজেনের সিলিন্ডার দেখা গেছে। প্ল্যান্টের চারটি পয়েন্টে সিলিন্ডারে গ্যাস ভরার ব্যবস্থা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে, সেখানে অক্সিজেন সিলিন্ডারের বিস্ফোরণ হয়নি। তদন্ত কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন দিলে বিস্তারিত জানা যাবে।

ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল মালেক বলেন, মূল ঘটনা কী ঘটেছে সব সংস্থা মিলে তদন্ত করতেছে, তদন্তে জানা যাবে। আজ কিছুক্ষণ পর তদন্ত কমিটির মিটিংও আছে। তবে আমরা যা দেখেছি ধারণা করছি বয়লারের বিস্ফোরণ ঘটেছে। মানে বয়লারের যে কম্প্রেশার, কম্প্রেশারের প্রেশারের ওখানে ব্লাস্ট হয়েছে দেখা যাচ্ছে।

এ ঘটনায় ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। এতে আহ্বায়ক করা হয়েছে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাকিব হাসানকে। কমিটিতে সদস্য করা হয়েছে- পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি), সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার (এসিল্যান্ড), ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের প্রতিনিধি, বিস্ফোরক পরিদপ্তরের প্রতিনিধিকে।

প্রসঙ্গত, শনিবার বিকেল চারটার দিকে বিএম কনটেইনার ডিপো থেকে আধা কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত সীমা অক্সিজেন অক্সিকো নামক একটি অক্সিজেন প্লান্টে বিস্ফোরণের ঘটনায় আশপাশের অন্তত কয়েক কিলোমিটার এলাকা ভূকম্পনের মত প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। আধা কিলোমিটার দূরের অনেক বাড়িঘরের দরজা এবং জানালার কাঁচ ভেঙ্গে পড়ে। এছাড়া বিস্ফোরণ ও আগুনের ঘটনায় পাশের তিন কারখানা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আশেপাশের ৩০টি ভবন। বিস্ফোরণে ৬ জন নিহত হন। আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ৩৩ জনকে।

বাংলাদেশ জার্নাল/জিকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত