র্যাবের ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ
সরকারি মেশিনারিজের সামনে সন্ত্রাসী গ্রুপ টিকে থাকতে পারে না: র্যাব ডিজি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০২৩, ০২:১৮

র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী রোববার। ২৬ মার্চ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী হলেও এবার রোজার কারণে তা এগিয়ে ১৯ মার্চ পালন করবে র্যাব। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে র্যাব সদরদপ্তরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
|আরো খবর
প্রতিষ্ঠাবিার্ষিকী উপলক্ষে গণমাধ্যমে মতবিনিময় করেছেন র্যাবের ডিজি (মহাপরিচালক) এম খুরশীদ হোসেন।
তিনি বলেন, পার্বত্য জেলা বান্দরবানে গজিয়ে ওঠা সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট তথা কেএনএফ পাহাড়কে অশান্ত করতে পারবে না। পাহাড়কে যারাই অশান্ত করার চেষ্টা করুক না কেন সরকারি মেশিনারিজের সামনে টিকে থাকতে পারবে না। কেএনএফ কিংবা নতুন জঙ্গি সংগঠন যেই হোক, তাদের বিরুদ্ধে যা যা করার দরকার তাই আমরা করব।
র্যাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ডিজি এম খুরশীদ হোসেন দেশের জনগণকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, র্যাবের প্রতি মানুষের আস্থা, ভালোবাসা রয়েছে। মানুষ র্যাবকে তাদের নিরাপত্তার প্রতীক মনে করে।
তিনি বলেন, র্যাব এলিট ফোর্স। সমস্ত বাহিনী থেকে চৌকস সদস্যদের নিয়ে র্যাব গঠন করা হয়েছে। র্যাবের মূলমন্ত্র হলো বাংলাদেশ আমার অহংকার। এই মূলতন্ত্র আমরা ধারণ করি, লালন করি, পালন করি। আমরা দেশের মানুষের জন্য কাজ করি। এজন্য র্যাবের প্রতি মানুষের আস্থা, ভালোবাসা এবং মানুষ র্যাবকে নিরাপত্তার প্রতীক মনে করে। আমরা অপশক্তি, সন্ত্রাসী, জঙ্গি, মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে আতঙ্কের প্রতীক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চাই।
২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর র্যাবের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পান খুরশীদ হোসেন। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি গ্রেড-১ পদে পদোন্নতি পান।
র্যাব ডিজি বলেন, আমি এই বাহিনীকে আরও স্মার্ট বাহিনী হিসেবে কাজ করছি। কারণ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের কাজ করছেন। আমি চাই, র্যাব স্মার্ট বাহিনী হিসেবে কাজ করবে। র্যাবপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর জঙ্গি ইস্যুতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মনের অজান্তে বলে ফেলেছিলাম—র্যাব জঙ্গিদের থেকে অনেক স্মার্ট। দেশবাসীর সহযোগিতা আমরা চাই। র্যাব ঠিক স্মার্ট ফোর্স হিসেবে যেকোনো নিরাপত্তা, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান, জঙ্গি বিরোধী অভিযান এবং যেকোনো জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দুর্যোগে র্যাব সাধারণ মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাবে।
এম খুরশীদে হোসেন বলেন, দেশের যেকোনো দুর্যোগে, নিরাপত্তা-আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং মানবিক সহায়তায় র্যাব কাজ করছে। আমরা দেশের মানুষের জন্য এই কাজগুলো পেশাদারিত্বের সঙ্গে এবং মানবাধিকার সম্মুন্নত রেখে আরও বেশি কাজ করতে চাই। বর্তমানে যে গণতান্ত্রিক ধারা, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রয়েছে, তার নিরিখে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আমরা যেন সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারি, সেজন্য সকলের সহযোগিতা দরকার।
শান্ত পাহাড়কে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী সংগঠন অশান্ত করছে। এ ব্যাপারে র্যাব অভিযানও চালাচ্ছে। পাহাড়ে র্যাবের ভূমিকার বিষয়ে এম খুরশীদ হোসেন বলেন, পাহাড়ে ট্রেনিং নেয়া প্রায় অর্ধশতাধিক জঙ্গি সদস্যকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। এই জঙ্গিরা পাহাড়ে গিয়ে কেএনএফের সহায়তায় সেখানে প্রশিক্ষণ নিত। ওই এলাকাটা মিয়ানমার ও মিজোরাম সীমান্তঘেঁষা। যেকোনো অপরাধ করে তারা সহজেই যেকোনো সীমান্তে প্রবেশ করছে। সেখানকার ভৌগলিক কারণে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী কোনো ক্যাম্প সেখানে নেই।
তিনি বলেন, আমরা তাদের অনেককে গ্রেপ্তার করেছি। তারাও তো চেষ্টা করবে আমাদের আক্রমণ করার। আমরা সেখানে নিরাপত্তা এবং অভিযান জোরদার করবো। এটা নিয়ে দেশবাসীর হতাশ হবার কিছু নেই। আমরা নতুন করে অন্য প্লানে অভিযান শুরু করব।
র্যাব ডিজি বলেন, হঠাৎ করেই ঘরছাড়াদের খুঁজতে বের হয়ে নতুন জঙ্গি সংগঠন সম্পর্কে জানা গেছে। পাহাড়ে তাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে কেএনএফ। এর আগে তো আমরা জানতাম না কেএনএফ তাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। তাদের উদ্দেশ্য সফল হবে না। গর্ভমেন্ট মেশিনারিজের সামনে কোনো সন্ত্রাসী গ্রুপ টিকে থাকতে পারে এটা আমি বিশ্বাস করি না। ওদের (কেএনএফ) বিরুদ্ধে যা যা করার আমরা করবো।
র্যাব ডিজি জানান, কেএনএফকে অর্থায়নে বিদেশ থেকে কিছু লোক জঙ্গিদের সাপোর্ট দিচ্ছে। র্যাব এসব বিষয়ে কাজ করছে।
তিনি বলেন, ইংল্যান্ড থেকে টাকা আসছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক কোনো দেশ থেকে টাকা আসার তথ্য মেলেনি। ইউকে থেকে আসার তথ্য পাওয়া গেছে। এসব বিষয় আমাদের নলেজে আছে, গোয়েন্দারা কাজ করছে। এসব বিষয় নিয়ে র্যাব চিন্তিত না। আমরা যখন ভালো সাপোর্ট পাবো তখন কেউ টিকতে পারবে না।
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও অপরাধ ঘটছে। এটা নিয়ে র্যাবের পরিকল্পনার বিষয়ে র্যাব প্রধান বলেন, রোহিঙ্গাদের অপরাধ একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আমরা অচিরেই ক্যাম্পগুলোতে যৌথ অভিযান পরিচালনা করব। কাউকে আমাদের দেশের অভ্যন্তরে অরাজকতা পরিস্থিতি তৈরির সুযোগ দেয়া হবে না।
বাংলাদেশ জার্নাল/এমএ/সুজন