ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

ফরিদপুরে ভুল সিজারে নারীর জরায়ু কেটে ফেলার অভিযোগ

  ফরিদপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২৩, ২১:৫৫

ফরিদপুরে ভুল সিজারে নারীর জরায়ু কেটে ফেলার অভিযোগ
ছবি: প্রতিনিধি

ফরিদপুরে আবারও ভুল সিজার করার অভিযোগ উঠছে স্থানীয় "মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতাল" নামের একটি প্রাইভেটনহাসপাতালের বিরুদ্ধে। ভুল সিজারে নবজাতকের মায়ের জরায়ু কাটা পড়ায় মৃত্যু যন্ত্রণায় আত্মচিৎকার করছে ওই নারী। এখন সে হাসপাতালটির তৃতীয় তলার ৩০৭ নম্বর কেবিনে ভর্তি রয়েছেন।

ওই নারীর নাম রিক্তা (২২)। সে ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের মোহনমিয়া নতুন হাট এলাকার মো. রুবেল মোল্যা নামের এক ব্যক্তির স্ত্রী।

জানা যায়, শুক্রবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যায় প্রসব ব্যাথা নিয়ে ফরিদপুর শহরের অবস্থিত "মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতাল" নামের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি হয় ওই নারী। পরে রাত সাড়ে টার দিকে তড়িঘড়ি করে সিজার করানোর জন্য হাসপাতালটির ওটিতে নেওয়া হয়। এসময় ওই গর্ভবতী নারীর সিজার করার সময় জরায়ু কেটে ফেলা হয়। পরে সিজার করে পেটের বাচ্চা বের করতে পারলেও ওই নারীর রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় রোগীর স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠে হাসপাতাল প্রাঙ্গণ।

ওই নারীর শ্বশুর মো. রফিক মোল্যা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, শুক্রবার (২৫ মার্চ) আমার ছেলের বউয়ের প্রসব বেদনা উঠলে শহরের "মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালটি"তে নিয়ে আসি। ওইদিন সন্ধ্যায় আমার ছেলের বউকে নার্স ও আয়ারা বাচ্চা প্রসব করাতে নেয় ওটিতে। কিছুক্ষণ পর এসে বলে রোগীর অবস্থা ভালোনা। জরুরী সিজার করতে হবে। ৩০ মিনিট পরে বলে বাচ্চা এবং দুই জনের অবস্থাই খারাপ। বাচ্চা বাঁচলেও মা বাঁচবে না এবং মাকে বাঁচালে বাচ্চা বাঁচবে না। তখন মহাবিপদে পড়ে যাই আমরা। এরপর নার্সরা এসে বলে পেট কেটে বাচ্চা বের করলে কারোই সমস্যা হবে না; জরুরি রক্ত লাগবে এবং অনাপত্তিপত্রে সই করেন। কতক্ষণ পরে আমাদের জানানো হয় পুরো জরায়ু কেটে ফেলা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের ধারণা ইফতারির টাইমে ডাক্তারা না থাকার কারণে নার্স এবং আয়ারা মিলে সিজার করানোর কারণে আমার ছেলের বউয়ের সারাজীবনের সর্বনাশ হয়ে গেছে।" তবে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন ডাক্তার দিয়েই এ সিজার করা হয়েছে ; নার্স কিংবা আয়া দিয়ে নয়।

শ্বশুর রফিক মোল্যা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদ্বৃত্তি দিয়ে বলেন, "হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছেন ডা. কল্যাণ কুমার সাহা ও ডা. মো. জাহাঙ্গীর এ সিজার করেছেন। আমরা এ সিজারের সাথে জড়িতদের বিচার চাই।

এব্যাপারে বক্তব্য নিতে ডা. কল্যাণ কুমার সাহা ও ডা. মো. জাহাঙ্গীরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

রিক্তার স্বজনরা জানান, দেড় বছর আগে রফিক মোল্যার ছেলে রুবেল মোল্যার সাথে বিয়ে হয় রিক্তার। রুবেল কৃষি কাজ করেন। এই প্রথমই সে মা হলেন পুত্র সন্তানের। জরায়ু হারিয়ে রিক্তা এখন মরণ যন্ত্রায় হাসপাতালের বেডে ছটফট করছে। এ পর্যন্ত চার ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়েছে। আরও রক্ত দেয়া লাগবে।

এব্যাপারে ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. ছিদ্দীকুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

তবে ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. শাহ মোহাম্মাদ বদরুদ্দোজা মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি আমাদের জানা নেই। ওই পরিবার আমাদের লিখিত অভিযোগ দিলে বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখবো।

তিনি বলেন, সিভিল সার্জন ঢাকায় একটি ট্রেনিংয়ে আছেন। স্যার ঢাকা থেকে আসলে বিষয়টি আমি স্যারকে জানাবো।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত