মাত্র ৩০ সেকেন্ডে মোটরসাইকেল চুরি, চোরচক্রের প্রধান গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৩, ১৪:৫৩

হবিগঞ্জ এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে মোটরসাইকেল চোরচক্রের প্রধান মো. জাকারিয়া হোসেন হৃদয়কে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপি গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম। তার কাছ থেকে বিভিন্ন মডেলের ১২টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।
|আরো খবর
ডিবি পুলিশ জানায়, গত ১০ মে ভাটারা থানায় একটি মোটরসাইকেল চুরি সংক্রান্ত মামলা হয়। মামলাটির ছায়া তদন্তের একপর্যায়ে বুধবার ডিবির হাতে গ্রেপ্তার হন জাকারিয়া।
ডিবি বলছে, জাকারিয়া একটি সংঘবদ্ধ চোরচক্রের প্রধান। তার চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে মোটরসাইকেল চুরি করে আসছে। এই চক্রটি মাত্র ২৫-৩০ সেকেন্ডে শপিংমলের সামনে থেকে মোটারসাইকেল চুরি করে নিয়ে যায়। চুরির কাজটি করতে তারা একটি মাস্টার চাবি ব্যবহার করে। এই চাবিটি ব্যবহার করে মাত্র ২৫-৩০ সেকেন্ডে মোটরসাইকেলের ঘাড় লক ভেঙে সেটি চালু করে নিয়ে পালিয়ে যায়। জাকারিয়া ছাড়া এই চক্রে আরও বেশ কয়েকজন সদস্য রয়েছে। বাকি পলাতক আসামিরা হলো- জাহাঙ্গীর, জিতু, ইকবাল, খালেক।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন-অর রশীদ বলেন, ঢাকা শহরের বিভিন্ন সময় শপিংমলের সামনে থেকে মোটরসাইকেল চুরি হয়। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে মামলা হয় না। তবে যমুনা শপিংমলের সামনে থেকে কালো রঙের বাজাজ মোটরসাইকেলটি চুরি হওয়ার পর মালিক মামলা করেন। মামলাটি হওয়ার পর আমরা ছায়া তদন্ত শুরু করি। ওই মোটরসাইকেলটি উদ্ধারের জন্য আমরা হবিগঞ্জে বন্ধু মটরসের গ্যারেজে অভিযান চালানো হয়। এ সময় গ্যারেজের মালিক মোহন পালিয়ে যান। তবে অভিযানে এই চোর চক্রের প্রধান জাকারিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন-অর রশীদ । ছবি: প্রতিনিধি
তিনি বলেন, ঢাকা শহরসহ গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জসহ আশপাশের এলাকায় যতো মোটরসাইকেল চুরি হয় এর সঙ্গে এই চক্রটি জড়িত। সুমন এই চক্রের রেকি সদস্য। সে বিভিন্ন শপিংমলের সামনে গিয়ে মোটরসাইকেল রেকি করে। মালিক মোটরসাইকেল রেখে শপিংমলের ভেতরে যাওয়ার পর অন্য সদস্যদের সে জানায়। এই তথ্য পাওয়ার পর চক্রের সদস্য জিতু ও জাহাঙ্গীর তাদের কাছে থাকা মাস্টার চাবি দিয়ে মোটরসাইকেলটি চালু করে দ্রুত পালিয়ে যায়।
পরে চক্রের সদস্য খালিক সে ওই মোটরসাইকেল নিয়ে বন্ধু মটরসের মালিকের কাছে বিক্রি করে দেয়। পরে বন্ধু মোটরসের মালিক ৫০-৬০ হাজার টাকা আবার বিক্রি করে দেয়।
চুরিকৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার । ছবি: প্রতিনিধি
তিনি আরও বলেন, এই চক্রটির কাছ থেকে আমরা এখন পর্যন্ত ৫০টির বেশি মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছি। চক্রটির প্রধান জাকারিয়া জানায় তারা ঢাকা শহরের সব শপিং মলের সামনে থেকে এভাবে মোটরসাইকেল চুরি করে। তাদের একটা দোকান আছে, সেখান থেকে তারা মাস্টার চাবি সংগ্রহ করে এভাবে মোটরসাইকেল চুরি করে। তারা হবিগঞ্জের বন্ধু মোটরসে তাদের এই চুরির মোটরসাইকেলগুলো বিক্রি করে।
ডিবি প্রধান বলেন, আমরা ডিবির পক্ষ থেকে সবাইকে বলছি মোটরসাইকেল সবসময় পার্কিংয়ে পার্ক করবেন, ১০ টাকা লাগলেও। তার পরেও যদি চুরি হয়ে যায়, তাহলে থানায় জিডি নয়, মামলা করবেন। আর যদি কোনো কারণে থানা মামলা নিতে না চায় তাহলে ডিবি অফিসে অভিযোগ করতে পারেন।
বাংলাদেশ জার্নাল/সুজন/আরআই