স্কুলছাত্রকে নির্যাতনের পর ছাড়পত্র দিলেন প্রধান শিক্ষক
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২৩, ০৬:০৬

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে চর লরেন্স উচ্চ বিদ্যালয়ের এক ছাত্রের ওপর নির্মম নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ আরও এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে। পরে ওই ছাত্রকে স্কুল ত্যাগের ছাড়পত্রও (টিসি) দেয়া হয়। আহত ছাত্রকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করেছেন ওই শিক্ষার্থীর অভিবাবকরা।
|আরও খবর
বৃহস্পতিবার (১ জুন) সকালে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। ওই ছাত্রের অভিবাবকদের অভিযোগ, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক দোলনের ভাতিজার জন্য নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রের বোনের বিয়ের প্রস্তাব দেয়া হয়। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ৮ম শ্রেণি পড়ুয়া ওই ছাত্রকে মারধর (নির্যাতন) করে জোরপূর্বক বিদ্যালয় ত্যাগের ছাড়পত্র (টিসি) প্রদান করা হয়। যা নিয়ম বহির্ভূত।
আহত ইয়াছিন আরাফাত সজল উপজেলার চর লরেন্স গ্রামের তুলাতলী এলাকার আহসানুল্লার ছেলে ও চর লরেন্স উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্র।
অভিযুক্ত ওমর ফারুক দোলন চর লরেন্স উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি কমলনগর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়কের দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানা যায়। এছাড়া রেজাউল করিম একই স্কুলের সহকারী শিক্ষক।
এদিকে এ ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ এবং অসন্তোষ বিরাজ করছে।
ভুক্তভোগী স্বজন ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার সকালে বিদ্যালয় যায় সজল। পরে স্কুলের সহকারী শিক্ষক রেজাউল করিম তাকে প্রধান শিক্ষক দোলনের কাছে নিয়ে যায়। এসময় স্কুল অনুপস্থিতির কথা জানতে চাইলে চুপ থাকে ছাত্র সজল। একপর্যায়ে তাকে (সজল) বেদড়ক মারধর করেন সহকারী শিক্ষক রেজাউল করিম ও প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক দোলন। এতে তার গালে, মাথায় ও পিঠে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আহত হয়। পরে তাকে টিসি কাগজ ধরিয়ে দিয়ে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেন।
জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক দোলন বলেন, ওই ছাত্র বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে ইভটিজিং করেছে। এনিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে সে কোন উত্তর না দেয়ায় সহকারী শিক্ষক রেজাউল করিম তাকে থাপ্পড় মেরেছে। পরে ভয় দেখানোর জন্য তাকে টিসি দেয়া হয়েছে। তার বাবা আমার বন্ধু হয়।
কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুচিত্র রঞ্জন দাস বলেন, নির্যাতনের অভিযোগ পেয়েছি। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে উভয়পক্ষকে আসার জন্য বলা হয়েছে। দুই পক্ষ থেকে শুনে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ জার্নাল/এমএ