ঢাকা, বুধবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ২০ আশ্বিন ১৪৩০ আপডেট : ৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

জাল সনদে চাকরি: জয়পুরহাটের ১১ শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

  জয়পুরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২৩, ১৬:৪৯

জাল সনদে চাকরি: জয়পুরহাটের ১১ শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
ফাইল ছবি

জয়পুরহাট প্রতিনিধি

জাল সনদে চাকরি নেয়ার অভিযোগে জয়পুরহাটের ৯ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১১ শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে নি‌র্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এদের মধ্যে ৬ শিক্ষককে ফেরত দিতে হবে ৮৭ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। শুধু ওই ১১ শিক্ষকই নন, সারা দেশে ৬৭৮ শিক্ষক জাল সনদে বছরের পর বছর চাকরি করে আসছেন।

সম্প্রতি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ দেশব্যাপী এক জরিপ করে এর সত্যতা পায়। তারই ধারাবাহিকতায় ১৮ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সহকারী সচিব সেলিম শিকদার স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়। তারপরই জয়পুরহাটে এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, এ পর্যন্ত যে শিক্ষক যত বেতন তুলেছেন তা ফেরত দিতে হবে। তাতে জয়পুরহাটের ১১ জন শিক্ষকের মধ্যে ৬ জন শিক্ষক এমপিওভুক্ত হ‌য়ে নিয়মিত বেতনভাতা উত্তোলন করে আসছেন। আর অন্য ৫ জন অন্য পাঁচ শিক্ষক ননএমপিও। তারা কোনো সরকারি আর্থিক সুবিধা পাননি।

জাল সনদে এমপিওভুক্ত হওয়া শিক্ষকরা বেতন বাবদ সরকারি তহবিল থেকে নেয়া বেতন অবৈধভাবে গ্রহণ করেছেন। তাদের অবৈধভাবে গ্রহণ করা বেতন সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া, যারা অবসরে গেছেন তাদের অবসর সুবিধা বাতিল করা, স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়া শিক্ষক-কর্মচারীদের আপত্তির টাকা প্রধান শিক্ষক বা অধ্যক্ষের মাধ্যমে আদায় করা, জাল সনদধারীদের নিয়োগ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে বলেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ।

জেলার এম‌পিওভুক্ত যেসব শিক্ষক‌দের টাকা ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেয়া হ‌য়ে‌ছে তা‌দের ম‌ধ্যে রয়েছেন— আক্কেলপুরের পুণ্ডুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (সমাজ) মোছা. রমনা পারভীন, সদরের পল্লীবালা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) লিপি আরা, চাঁদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) লতিফা খানম, পাঁচবিবির জাবেকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) মোসা. নূরে জেসমিন, কালাইয়ের মোসলেমগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) মোছা. শিরিন আক্তার ও সদরের শাহাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (শরীর চর্চা) মোছা. শাহীন সুলতানা।

মোছা. রমনা পারভীনকে ১০ লাখ ৪৭ হাজার ৩৪০ টাকা, লিপি আরাকে ১৭ লাখ ৩০ হাজার, লতিফা খানমকে ১৬ লাখ ৭১ হাজার ৫০ টাকা, মোসা. নূরে জেসমিনকে ১৩ লাখ ৫৭ হাজার ৩৬০ টাকা, মোছা. শিরিন আক্তারকে ২৫ লাখ ৭২ হাজার ৮১৩ টাকা ও মোছা. শাহিন সুলতানাকে ৪ লাখ ২০ হাজার ৯০৩ টাকা ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

ননএমপিও পাঁচ জাল সনদধারী শিক্ষক হলেন— জামালগঞ্জ কলেজের দর্শন বিভাগের প্রভাষক মোছা. সালমা জাহান, একই প্রতিষ্ঠানের হিসাববিজ্ঞানের প্রভাষক মোছা. মনিরা খাতুন, পাঁচবিবি মহিলা কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক মো. শফিকুল ইসলাম, জয়পুরহাট মহিলা কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক আল আমিন রাজু এবং সদরের শাহাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) রুমানা পারভীন।

কালাইয়ের মোসলেমগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) মোছা. শিরিন আক্তার বলেন, অফিসের কাজে জেলা শহরে আছি। এ ধরনের কোনো চিঠি পাইনি।

পল্লীবালা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) লিপি আরার সনদ জাল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে লিপি আরা বলেন, বগুড়ায় অবস্থিত জাতীয় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমীর (নেকটার) ‌সা‌র্টিফি‌কেট যাচাই করে যোগদান করা হয়েছে। এখনও মন্ত্রণালয়ের কোনো চিঠি পাইনি। চিঠি পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

ননএমপিও তালিকায় থাকা জয়পুরহাট মহিলা কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক আল আমিন রাজু ব‌লেন, আমি প্রথমে মাস্টার রোলে যোগদান করেছিলাম। পরে কম্পিউটার অপারেটর পদে যোগদান করি। কিন্তু অডিটের সময় আমার নামে ওই পদই ছিল। তাই এমনভাবে নাম এসেছে।

জেলা শিক্ষা অফিসার ভারপ্রাপ্ত মোহা. আব্দুর রাজ্জাক প্রজ্ঞাপনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জাল সনদধারী শিক্ষক‌দের বিষয়টি জেনেছি। সারা দেশে ৬৭৮ শিক্ষককে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে এমন নি‌র্দেশনা‌টি অফি‌সিয়া‌লি এখনও আসেনি। আসলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরও পড়ুন: জাল সনদে নিয়োগ: চাকরি হারাচ্ছেন টাঙ্গাইলের ১২ শিক্ষক

বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত