ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

কে হচ্ছেন আফছারুল আমীনের আসনের নৌকার মাঝি?

  মনির ফয়সাল, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১০ জুন ২০২৩, ১১:৩৭

কে হচ্ছেন আফছারুল আমীনের আসনের নৌকার মাঝি?
ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘদিনের অসুস্থতা নিয়ে চিরবিদায় নিয়েছেন চট্টগ্রাম-১০ আসনের সাংসদ ডা. আফছারুল আমীন। একজন কর্মীবান্ধব নেতা এবং এমপি হিসেবে তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সুনাম ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। যার পুরষ্কার হিসেবে জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত নামাজে জানাজায় সাধারণ মানুষের ঢল নামে। পিএইচ আমীন একাডেমি মাঠে অনুষ্ঠিত তৃতীয় জানাজায় জমিয়তুল ফালাহ’র চেয়ে কয়েকগুণ বেশি মানুষ অংশ নেয়।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে এ আসনে ৩০ জুলাই উপ-নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করে তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। যদিও এর আগে থেকেই তার মৃত্যুর পর বিকল্প হিসেবে আসনটিতে উপনির্বাচনে নৌকার মাঝি হতে অনেকেই ইতোমধ্যে দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন। তবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তাদের কেউই এখনো নিজেকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করতে রাজি নন। তারা সতর্কতার সাথে কথা বললেও নেতাকর্মীদের মাঝে শুরু হয়ে গেছে জল্পনা-কল্পনা।

নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৩০ জুলাই এই আসনে উপ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের নির্বাচনী রোডম্যাপ অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বরে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই হিসেবে এই আসনে যিনি মনোনয়ন পেয়ে আগামী ৩০ জুলাই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবেন তিনি হবেন ‘চার মাসের সংসদ সদস্য’। সংসদ অধিবেশন পাবেন কিনা সন্দেহ আছেন। তবে তিনি সেই সৌভাগ্যবান হবেন, চারমাস পর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই আসনের উপ নির্বাচনকে ঘিরে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সংখ্যা অনেক বেশি।

সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম নানাভাবে শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে আছেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন, নগর আওয়ামী লীগের সহ–সভাপতি ও চট্টগ্রাম মহানগর ১৪ দলের সমন্বয়ক খোরশেদ আলম সুজন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম ঘনিষ্ট সহচর এম এ আজিজের সন্তান চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সহ সভাপতি ও বর্তমান কমিটির উপদেষ্টা একেএম বেলায়েত হোসেন।

সাবেক মেয়র মনজুর আলম, ডা. আফাছারুল আমিনের ছোট ভাই আওয়ামী লীগ নেতা এরশাদুল আমিন, নগর যুবলীগের সাবেক আহবায়ক ও তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা মহিউদ্দিন বাচ্চু, নগর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আওয়ামী লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন খোকা, নগর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আওয়ামী লীগ নেতা ফরিদ মাহমুদ, যুবলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মাহমুদুল হক ও সাবেক মেয়র মনজুর আলমের ছেলে তরুণ শিল্প উদ্যোক্তা সাইফুল ইসলাম।

আফছারুল আমীনের ছোট ভাই ডা. আরিফুল আমীন বলেন, তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে বসে একজনকে মনোনীত করে তার জন্য নৌকার মনোনয়ন চাইবেন। তবে জননেত্রী শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দেবেন তার জন্য কাজ করবে তাদের পরিবার।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা ফরিদ মাহমুদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মাঠের রাজনীতি করে আসছি। তাই আমি দলের মনোনয়ন চাইবো। প্রধানমন্ত্রী মনোনয়ন দিলে নির্বাচন করবো। আরও পড়ুন....চট্টগ্রাম-১০ আসনের সংসদ সদস্য ডা. আফছারুল আমীন আর নেই

যুবলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মাহমুদুল হক বলেন, আফছারুল আমীনের সাথে তিনি একত্রে জেল খেটেছেন। তার মৃত্যুর শোক এখনো কাটিয়ে উঠতে না পারার কথা উল্লেখ করে বলেন, রাজনীতিবিদের স্বপ্ন থাকে এমপি নির্বাচন করা। তিনিও চেষ্টা করবেন। তবে নেত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।

নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন বলেন, তারা এখনো শোক কাটিয়ে উঠতে পারেননি। তাই নির্বাচন নিয়ে এখনো মন্তব্য করতে চান না তিনি। তবে অতীতে নেত্রী যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা সফলতার সাথে পালন করেছি। বর্তমানে ১৪ দল চট্টগ্রামের সমন্বয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন। ১৪ দলকেও চট্টগ্রামে জাগিয়ে তুলেছি।

২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য হন ডা. আফছারুল আমীন (ডবলমুরিং, পাহাড়তলী ও হালিশহর)। সেবার তিনি আওয়ামী লীগের নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। পরবর্তীতে দপ্তর বদলে তিনি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগের দায়িত্ব পান। ২০১৪ সাল এবং ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে তিনি আরও দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সর্বশেষ তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ছিলেন। তিন বছর ধরে ক্যান্সারের সঙ্গে লড়ে গত ২ জুন মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওএফ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত