ঢাকা, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ আপডেট : ৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

জুনে সড়কে ঝরল ৮০১ প্রাণ 

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২৪, ১৭:৩৩  
আপডেট :
 ১০ জুলাই ২০২৪, ১৮:৪১

জুনে সড়কে ঝরল ৮০১ প্রাণ 
সারাদেশে গত জুনে ৫৫৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৮০১ জন নিহত হয়েছেন এবং ৩ হাজার ২৬৭ জনের আহত হওয়ার তথ্য জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। ফাইল ছবি

সারাদেশে গত জুনে ৫৫৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৮০১ জন নিহত হয়েছেন এবং ৩ হাজার ২৬৭ জনের আহত হওয়ার তথ্য জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এই সময় রেলপথে ৪৬ দুর্ঘটনায় ৪২ জন নিহত, ৯ জন আহত হয়েছেন। নৌ পথে ৯টি দুর্ঘটনায় ১২ জন নিহত, ৭ জন আহত এবং ৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

বুধবার (১০ জুলাই) সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিবেদন তুলে ধরে সংগঠনটি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জুনে দেশের গণমাধ্যম ও পঙ্গু হাসপাতালের তথ্যমতে সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৬১২ টি দুর্ঘটনায় ৮৫৫ জন নিহত এবং ৩ হাজার ২৮৩ জন আহত হয়েছেন। এই সময়ে ২১৭ টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২২২ জন নিহত, ১ হাজার ৯৩ জন আহত হয়েছেন। যা মোট দুর্ঘটনার ৩৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ, নিহতের ৩৮ দশমিক ১ শতাংশ ও আহতের ৩৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ।

এই মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে ঢাকা বিভাগে- ১৩৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৩৯ জন নিহত ও ২১৪ জন আহত হয়েছেন, সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে সিলেট বিভাগে- ২৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৩ জন নিহত ও ৪৭ জন আহত হয়েছেন। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের সদস্যরা বহুল প্রচারিত ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ পথের দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং এর পাশাপাশি জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (পঙ্গু হাসপাতাল) সড়ক দুঘটনায় আহত ২ হাজার ১৩৯ জন তথ্য নিয়ে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব বলছে, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত রোগীর ১৫ শতাংশ হাসপাতালে অথবা বাসায় চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যায়। সেই হিসেবে বিদায়ী জনু মাসে ৮০১ জন নিহত ও ৩ হাজার ২৬৭ জন আহত হয়েছে। দেশে প্রায় ৯ হাজার সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে। এসব হাসপাতালে জুন মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহত হয়ে কতজন রোগী ভর্তি হয়েছে তা জানানোর জন্য বিআরটিএর কাছে দাবি জানান যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

এই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় ২৭ দশমিক ২৬ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২২ দশমিক ৭৯ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ বাস, ১৫ দশমিক ২৭ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।

প্রতিবেদনে সড়ক দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে— দেশের সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেলের অবাধ চলাচল; জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কবাতি না থাকায় হঠাৎ ঈদে যাতায়াতকারী ব্যক্তিগত যানের চালকদের রাতে এসব জাতীয় সড়কে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চালানো; জাতীয়, আঞ্চলিক ও ফিডার রোডে টার্নিং চিহ্ন না থাকার ফলে নতুন চালকের এসব সড়কে দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে; মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা; উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাঁদাবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন; অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, বেপরোয়া যানবাহন চালানো এবং একজন চালক অতিরিক্ত সময় ধরে যানবাহন চালানোকে।

অন্যদিকে, দুর্ঘটনা প্রতিরোধে বলা হয়েছে— জরুরি ভিত্তিতে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করা; জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে রাতের বেলায় অবাধে চলাচলের জন্য আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা; দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ, যানবাহনের ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফিটনেস প্রদান; ধীরগতির যান ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা; সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা; মহাসড়কে ফুটপাত ও পথচারী পারাপারের ব্যবস্থা রাখা, রোড সাইন, রোড মার্কিং স্থাপন করা; সড়ক পরিবহন আইন যথাযথভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা; উন্নতমানের আধুনিক বাস নেটওর্য়াক গড়ে তোলা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা; মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা, নিয়মিত রোড সেইফটি অডিট করা এবং মেয়াদোর্ত্তীণ গণপরিবহন ও দীর্ঘদিন যাবৎ ফিটনেসহীন যানবাহন স্ক্র্যাপ করার উদ্যোগ নেয়াকে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত