তোকে ৬৪ টুকরা করব, মাথা থাকবে জিরো পয়েন্টে: ডিআইজি মিজান
একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের সংবাদ পাঠিকাকে এখনো হুমকি-ধমকি দিয়ে চলেছেন ডিআইজি মিজানুর রহমান। এ সংক্রান্ত ফোন কলের বেশ কয়েকটি অডিও গণমাধ্যমের কাছে আসে।
ওই সংবাদ পাঠিকা অভিযোগ করেন, ইতিমধ্যে তার ছবি বিকৃত করে ফেসবুকে পেজ খুলে তাকে অশ্লীলভাবে উপস্থাপন করছেন মিজানুর রহমান।
এ বিষয়ে ডিএমপির সাইবার ইউনিট অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগে উপস্থিত হয়ে লিখিত অভিযোগ জমা দেন তিনি।
অডিওতে শোনা যায়, ডিআইজি মিজান ওই সংবাদ পাঠিকাকে বলছেন, তোর জামাইরে ঘর থেকে বাইর হতে বল। পোলাপাইন রেডি আছে। তোকে মাইরা ফালামু।
এ সময় ফোনের ওপাশে সংবাদ পাঠিকাকে কাঁদতে শোনা যায়। ডিআইজি মিজান তখন বলেন, যেখানেই যাবি তোর নুড (অশ্লীল) ছবি পাঠানো হবে। তুই আমার ক্যারিয়ার ধ্বংস করছিস। আমাকে সাসপেন্ড করাইছিস না?
এর জবাবে সংবাদ পাঠিকা বলন, আমি কিছুই করিনি। আমার ছেলের কসম খাইয়া বলছি, আমি কিছুই করিনি।
এরপর মিজান বলেন, তুই আমার সাথে চ্যালেঞ্জ দিবি? আমার সাথে চ্যালেঞ্জ দিয়ে তুই আমার চাকরি খাইছিস। তুই মিডিয়ায় সবকিছু দিছিস।
ওপাশ থেকে সংবাদ পাঠিকা বলেন, আমি কাউকেই কিছু দেইনি।
এবার মিজান বলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে তুই উত্তরা ছাড়বি। যা হয় হবে। রেকর্ড কইরা রাখ।
মিজান আরো বলেন, তোর জামাইরে বের হতে বল। টুকরা টুকরা করব। আর তোরে ৬৪ জেলায় ৬৪ টুকরা। আমার কথার বাইরে যদি চলস তোকে আমি মাইরা ফালামু।
ওপাশ থেকে কেঁদে কেঁদে সংবাদ পাঠিকা বলন, আপনার যা কিছু করার করেন। আমি ইকো না।
এর জবাবে ডিআইজি মিজান বলেন, তা হলে আয়, আমার কাছে আয়।
মিজান সংবাদ পাঠিকা আবারো বলেন, সরি বল, কিচ্ছু বলব না।
জবাবে পাঠিকা বলেন, আমার গলায় ছুরি লাগালেও বলব আমি কিছু করিনি।
মিজান বলেন, ৬৪ টুকরা করব তোকে। তোর মাথা থাকবে জিরো পয়েন্টে। তোর যদি সাহস থাকে আবার বাইরে আয়।
সংবাদ পাঠিকা বলেন, এই জীবন আমি চাই না। আমাকে জেলে পাঠান।
জবাবে ডিআইজি মিজান বলেন, ওকে পুলিশ আসতেছে। থানা থেকে ফোন করেনি?
আমাকে সাসপেন্ড করাইছিস না? কর। বাঁচতে চাইলে মিডিয়ায় যাইয়া বলবি, আমি ভুল করছি।
গত ১০ এপ্রিল বিমানবন্দর থানায় দায়ের করা একটি অভিযোগে সংবাদ পাঠিকা বলেন, পুলিশ সদর দপ্তরে প্রত্যাহার হওয়া ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মিজানুর রহমান তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে ফোন করে সপরিবারে প্রাণনাশের হুমকি দেন। এর আগে নিরাপত্তাজনিত হুমকি পেয়ে ২০১৭ সালের ২২ নভেম্বর তারিখেও গুলশান থানায় একটি জিডি করেছিলেন তিনি।
উল্লেখ্য, মিজানের স্ত্রী পরিচয় দেয়া নারী একটি জাতীয় দৈনিককে জানান, কৌশলে গত বছরের জুলাই মাসে তাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা মিজান।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, কয়েক মাস কোনো সমস্যা না হলেও ফেসবুকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে একটি ছবি তোলার পর ক্ষেপে যান মিজান। এরপর ‘মিথ্যা মামলা’য় তাকে গত ১২ ডিসেম্বর কারাগারে পাঠানো হয়। জামিনে বেরিয়ে আসার পর পুলিশ কর্মকর্তা মিজানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন ওই নারী।
সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৯ জানুয়ারি ডিএমপি থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দফতরে যুক্ত করা হয় মিজানুর রহমানকে।
জেডএইচ/