স্বাধীনতা, ভাষা ও বিজয়ের মাসের পতাকার ফেরিওয়ালা বকুল
সিলেট প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৭:১৪
মাদারীপুরের বকুল মিয়া, বয়স ৩৫। পেশায় দিনমজুর। বর্তমানে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন সিলেট শহরে। বিজয়ের মাস, ভাষা বা স্বাধীনতার মাস এলেই বাংলাদেশকে বহন করেন তিনি! মানে বাংলাদেশের পতাকার ফেরিওয়ালা বনে যান বকুল।
দিনমজুরের কাজ ছেড়ে বেরিয়ে আসেন লাখো শহীদের রক্ত ও নারীর সম্ভ্রমে অর্জিত জাতীয় পতাকা নিয়ে। তিনি পতাকা তুলে দেন স্বাধীন দেশের নতুন প্রজন্মের হাতে। এতে তৃপ্তি ও গৌরব বোধ করেন খেটে খাওয়া এই দিনমজুর।
বছরের ফেব্রুয়ারি, মার্চ ও ডিসেম্বর মাসে ফেরি করে জাতীয় পতাকা বিক্রি করা তার নেশা। সারাদিন পায়ে হেঁটে শহর ও উপজেলা এলাকায় পতাকা বিক্রি করেন বকুল।
শনিবার সকালে বিশ্বনাথ উপজেলা সদরের বাসিয়া ব্রিজের সামনে পতাকা হাতে বকুল মিয়া জানান, বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি দেশের ইতিহাস নির্মাণের মাসগুলোতে পতাকা ফেরি করেন। রুটি-রুজির পাশাপাশি আনন্দও উপভোগ করেন। নতুন প্রজন্ম ও নাগরিকরা পতাকা ক্রয়ের মাধ্যমে দেশের প্রতি মানুষের প্রেম ও শ্রদ্ধা দেখে তৃপ্তি ও গৌরব বোধও করেন তিনি।
পতাকার ফেরিওয়ালা বকুল বলেন, তবে এ বছর নির্বাচনী মাস হওয়ায় ক্রেতার সংখ্যা অনেক কম।
বকুল মিয়ার সংসারে পাঁচ সদস্য। তাদের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব তার একারই। পতাকা বিক্রির চেয়ে দিনমজুরিতে তার আয় বেশি। তার পরও বিজয়, ভাষা ও স্বাধীনতার মাসে তিনি পতাকা ফেরি করতেই ভালোবাসেন। এ দিয়ে যা উপার্জন হয় তা দিয়েই সংসারের খাবার ও প্রয়োজন মেটান।
বকুল বলেন, এতে তাকে ঝুঁকি নিয়েই পতাকা হাতে নামতে হয়। কোনো কোনোদিন ভালোই বিক্রি হয়। আবার কখনো নিজের খরচও উঠে না।
তিনি বলেন, অধিকাংশ পতাকা নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা কিনে। এছাড়া গাড়িতেও ভালো বিক্রি হয়।
বকুল মিয়া আরো জানান, প্রাণের পতাকা কাঁধে নিয়ে সিলেট শহরসহ বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে বাসায় ফিরে যান। আগামী ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি এভাবেই পতাকা বিক্রি করবেন। এরপর থেকে আবার তার আগের কাজে (দিনমজুরিতে) নেমে পড়বেন।
ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি, স্বাধীনতার মাস মার্চ আর বিজয়ের মাস ডিসেম্বর এলে পতাকা হাতে পথে-প্রান্তরে বেরিয়ে পড়া তার নেশায় পরিণত হয়েছে। আয়-রুজি যাই-ই হোক না কেন। দেশের পতাকা ফেরিতে যে দিনমজুর বকুল মিয়া গৌরববোধ করন।