ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

মহাজোট নিয়ে জামাই-শ্বশুরের টানাটানি

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৮:৪৬  
আপডেট :
 ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৮:৫৫

মহাজোট নিয়ে জামাই-শ্বশুরের টানাটানি

সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে মহাজোটের মনোনয়ন নিয়ে জামাই-শ্বশুরের এই টানাটানিতে বিভ্রান্ত আওয়ামী লীগ ও তাদের জোট শরিক অন্যান্য দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। জোট শরিক জাতীয় পার্টির প্রতীক লাঙ্গল নিয়ে ভোটের মাঠে রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, সেখানে এরশাদের চূড়ান্ত মনোনয়ন পাওয়ার দাবি করে সিংহ প্রতীক নিয়ে ভোট চাইছেন তার শ্বশুর জিয়াউল হক মৃধা।

এরমধ্যে সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের লড়াইয়ে আছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মঈন উদ্দিন। মহাজোটের প্রার্থী নিয়ে জামাই-শ্বশুরের ‘দ্বন্দ্বে’ আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশ তার দলে ভিড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

এদিকে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধী মহাজোটের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপির ধানের শীষ নিয়ে এই আসনে ভোটের লড়াইয়ে আছেন দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা উকিল আব্দুস সাত্তার ভূইয়া। এই আসন থেকে দুইবার সাংসদ নির্বাচিত সাত্তার ভূইয়া বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে প্রতিমন্ত্রীও হয়েছিলেন।

আগে থেকে এলাকায় তার প্রভাব থাকায় মহাজোটের প্রার্থী জটে ভোটে তারই লাভ হবে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা।

এদিকে জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান জিয়াউল হক মৃধা ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে সাংসদ নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৪ সালে বিএনপিবিহীন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী এক আওয়ামী লীগ নেত্রীকে হারিয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি।

আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন ভাগাভাগিতে যে ২৯টি আসন জাতীয় পার্টিকে দেওয়া হয়েছে, সেখানে ব্রাক্ষণবাড়িয়া-২ আসনের প্রার্থী হিসেবে জিয়াউল হক মৃধার নাম লিখেছে তারা। সেই জোরে এখন ভোটের প্রচারে তিনি বলছেন, “সিংহ-ই লাঙ্গল, সিংহ-ই নৌকা।”

অন্যদিকে তার জামাতা রেজাউল বলছেন, আইন লংঘন করে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন জিয়াউল হক মৃধা। তিনি বলেন, আমার জানা মতে, উনি স্বতন্ত্র প্রার্থী, কোনো দলীয় প্রার্থী নন। বাংলাদেশে যে আইনে নির্বাচন হয় (আরপিও) সেখানে বলা আছে, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা স্বতন্ত্রই থাকবে, তারা দল এবং জোটের প্রার্থী হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

তার এই বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে জিয়াউল হক মৃধা বলেন, স্বতন্ত্র এটা মার্কাটা ঠিক, কিন্তু মহাজোট তালিকায় আমার নামই আছে, এখানে প্রতীকের একটা প্যাঁচ হয়েছে। জাতীয় পার্টি প্রথমে আমাকে মনোনয়ন দেইনি, পরে ফাইনাল মনোনয়ন আমাকে দিয়েছে। মহাজোট থেকেও আমাকে দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমিই মহাজোট প্রার্থী।

মহাজোটে আরেকজন লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচন করছেন, তারপরও কেন মহাজোটের নামে ভোট চাইছেন, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হ্যাঁ, এই ব্যাপারে কিচ্ছু হবে না। জনগণ মনে করবে যে, সিংহ-ই লাঙ্গল, সিংহ-ই নৌকা। এতে কোনো সমস্যা হবে না।

লাঙ্গল প্রতীক পাওয়া রেজাউল শ্বশুরের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও ভাবছেন। শ্বশুরের দাবি খণ্ডন করে রেজাউল বলেন, উনি (মৃধা) মনোনয়ন ফরমে স্বতন্ত্র প্রার্থী লিখে জমা দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এখন কোনো বিবেচনায় যদি উনি দাবি করে থাকেন তাহলে দেশের প্রচলিত আইন অনুসারে উনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হবে, এখানে আমার কিছু বলার নেই। আইন তো সবার জন্য সমান থাকবে।

আরএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত