ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

লতিফ সিদ্দিকীর গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ২১:৩৯

লতিফ সিদ্দিকীর গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪

টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার বিকালে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, গোহালিয়াবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান হযরত আলী তালুকদারের ছেলে মো. সালাহউদ্দিন তালুকদার, একই এলাকার মৃত আব্দুস সাত্তার আকন্দের ছেলে মারুফ হোসেন আকন্দ, হাজী মো. ইমান আলী প্রামাণিকের ছেলে আব্দুল লতিফ প্রামাণিক ও আবুল হোসেন ড্রাইভারের ছেলে মো. জয়নাল আবেদীন।

কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন জানান, রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী অভিযোগ দাখিল করার প্রেক্ষিতে প্রাথমিক তদন্ত শেষে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এদিকে আমরণ অনশনের তৃতীয় দিনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন লতিফ সিদ্দিকী। প্রতিকূল আবহাওয়া উপেক্ষা করে তিন দফা দাবিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তাকে অনশন অবস্থায় শুয়ে থাকতে দেখা যায়।

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার নির্দেশে মঙ্গলবার ৮ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। মেডিকেল বোর্ড সার্বক্ষণিক লতিফ সিদ্দিকীর শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর রাখছে।

জানা যায়, মঙ্গলবার ভোরে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হলে তাঁবুর ভিতর পানি পড়তে থাকে। পরে আমরণ অনশনরত লতিফ সিদ্দিকীকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের বারান্দায় নেওয়া হয়। সকালে সেখানে তিনি অসুস্থবোধ করেন। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম সিভিল সার্জনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের বারান্দা থেকে তাকে পাশের একটি খোলা টিনসেডে স্থানান্তর করা হয়েছে।

সিভিল সার্জন ডা. শরীফ হোসেন খান নির্দেশনা পেয়ে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. নারায়ন চন্দ্র সাহাকে জানান। পরে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মোফাজ্জল হোসেনকে প্রধান করে ৮ সদস্য বিশিষ্ট মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়।

ডা. মোফাজ্জল হোসেন জানান, মেডিকেল বোর্ড গঠনের পর মঙ্গরবার দুপুর পৌনে ২টায় লতিফ সিদ্দিকীকে পরীক্ষার পর দুপুরে তাকে অক্সিজেন দেওয়া হয়েছে। তারা লতিফ সিদ্দিকীকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। ওষুধ দেওয়া হলেও তিনি কিছু খাচ্ছেন না। ফলে শরীর ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে।

এ সময় চিকিৎসকদের লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি শারীরিকভাবে দুর্বল, মানসিকভাবে দুর্বল নই। আমার দাবি মেনে নেওয়া হোক, না হলে মরে গেলেও অনশন ভাঙব না।’

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর সহধর্মিনী ও সাবেক সংসদ সদস্য লায়লা সিদ্দিকী বলেন, ‘আজ উনার (লতিফ সিদ্দিকীর) ৮২তম জন্মদিন, জন্মদিনেও তিনি অনশন করছেন। উনার হার্টে আগেই দুইটা রিং পড়ানো আছে। উচ্চ রক্তচাপসহ বিভিন্ন অসুখ রয়েছে। তিনি তিনবেলা খাবারের আগে-পরে নিয়মিত ওষুধ খান। অনশন করার পর থেকে কিছুই খাচ্ছেন না।’

লায়লা সিদ্দিকী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর। তার গাড়িবহরে হামলা করায় তিনি ওসির অপসারণ চেয়ে তিন দিন ধরে আমরণ অনশন করছেন-এটা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের প্রতিটি মানুষের জন্য অত্যন্ত লজ্জার’

গত রোববার দুপুরে টাঙ্গাইলের কালিহাতীর গোহালিয়াবাড়ি ইউনিয়নের সরাতৈল-বল্লভবাড়ি এলাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীসহ কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা চালানো হয়। হামলায় প্রচার বহরের চারটি গাড়ি ও কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর এবং কমপক্ষে ২০জন নেতাকর্মী আহত হন। এরপর লতিফ সিদ্দিকী টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে কালিহাতী থানার ওসি মীর মোশারফ হোসেনকে প্রত্যাহার ও হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে অনশনে বসেন।

আরএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত