ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

দিনাজপুরে জামাই মেলা

  দিনাজপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১২ জানুয়ারি ২০১৯, ১৯:০৮

দিনাজপুরে জামাই মেলা

দিনাজপুর জেলা সদর থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটার দুরে বিরলের মোখলেজপুর গ্রামের জয়াহার পাড়ায় লোক সংস্কৃতির অংশ হিসাবে প্রতিবছর জামাই মেলার আয়োজন করেছে। শনিবার ৩ দিনব্যাপী জামাই মেলার শেষ দিনে নাটক, গান, কৌতুক, নাচ, যেমন খুশি তেমন সাজ ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

শতবর্ষ ধরে এই গ্রামের জামাইদেরকে শীতের মৌসুমে পিঠা পুলি খাওয়ানোর জন্যই এ মেলার আয়োজন। এই গ্রামের প্রায় শতাধিক বাড়িতে তিন ধরে চলে পিঠেপুলির উৎসব। সেই সাথে জামাইদের নিয়ে বিভিন্ন খেলার আয়োজন করা হয়। জামাইদের আয়োজনে তিন দিনব্যাপী বসানো হয় মেলার। সেই মেলায় দুর দূরান্ত থেকে মিষ্টান্নের দোকান, চুড়ি ফিতার দোকান, বাঁশি, ছোটদের জন্য বেলুনের দোকান, খেলনার দোকানসহ বিভিন্ন ধরনের দোকান বসে।

জামাই মেলায় গ্রাম বাংলা থেকে হারিয়ে যাওয়া রশি খেলা, বস্তা দৌড়, মোরগ যুদ্ধ, বিস্কুট দৌড়, পাড়ে পুকুরে, উল্টো দিকে দৌড়, মহিলাদের হাড়ি ভাঙ্গা, মহিলাদের দুর্ভাগ্য বালিশ, জামাইদের জন্য বেলুন ফুটানো খেলার আয়োজন করা হয়।

জামাই আরমান হোসেন বলেন, আমার বাড়ি নাটোরে। পুলিশের চাকরি করি। প্রতিবছর এই দিনে শ্বশুরবাড়ি আসার জন্য দাওয়াত দেয়া হয়। প্রতিবছর এই দিনে শ্বশুরবাড়িতে আসতেই হবে। তাই আমি প্রতিবছর জামাই মেলায় আসি এবং জামাইদের জন্য বিভিন্ন খেলায় অংশগ্রহণ করি। এবছর আমি বেলুন ফাটানো খেলায় অংশগ্রহণ করি এবং চ্যাম্পিয়ন হই। এই জামাই মেলায় আসতে পেরে অবশ্যই গৌরব বোধ করছি।

খেলা পরিচালনাকারী আব্দুর রাজ্জাক (৭২) বলেন, আমি এই জামাই মেলার বিভিন্ন খেলা পরিচালনা করে আসতেছি। এর আগে আমার বাপ চাচারা এই জামাই মেলার আয়োজন করত। তারা আজ নেই তাদের এই সংস্কৃতিকে ধরে রাখার জন্য প্রতিবছর এই মেলার আয়োজন করা হয়। আমার পর আমার ছেলেরাও এই সংস্কৃতি ধরে রাখবে। জামাই মেলার শেষ দিনে নাটক, গান, কৌতুক, নাচ, পালাগান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এখানে বিভিন্ন গ্রামে নারী, পুরুষ মানুষের জামায়েত হয়। আমাদের এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কি পরিমাণ আনন্দ পাওয়া আপনারা কল্পনা করতেও পারবেনা।

জামাই মেলার আয়োজনকারী সিফাত- ই- জাহান শিউ বলেন, গ্রাম বাংলা সাংস্কৃতিক ধরে রাখার জন্য আমার বাবা শাহাজাহান শাহ এসব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও উৎসবের আয়োজন করত। আজ বাবা নেই তারই কর্ণধার হিসাবে আমি বাবার সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডগুলো চালিয়ে যাচ্ছি। প্রতিবছর জামাই মেলার আয়োজন করা হবে এবং আগামী দিনে নতুন প্রজন্মকে সামাজিক অবক্ষয় থেকে সামাজিক আন্দোলনের অংশ হিসাবে এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রক্ষা করা যাবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত