ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

কুয়াশায় বীজতলা নষ্ট, লোকসানে কৃষকেরা

  রাজবাড়ী প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৪ জানুয়ারি ২০১৯, ১৬:৫১

কুয়াশায় বীজতলা নষ্ট, লোকসানে কৃষকেরা

রাজবাড়ী জেলাটি কৃষি নির্ভর জেলা। এ জেলার সাধারণ মানুষ কৃষি পণ্যের উপর নির্ভরশীল। সব ধরনের কৃষি পণ্যই এ অঞ্চলে উৎপাদন হয়। এর মধ্যে সব জাতের ধানের ফলন ও উৎপাদন ভালো হয় রাজবাড়ীতে। শীতের এ মৌসুমে বোরো ধানের আবাদের জন্য রাজবাড়ীর কৃষকেরা তাদের বীজতলা তৈরী শুরু করেছিল ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিক থেকে। কিন্তু কৃষকদের বোরো ধানের বীজতলা তৈরীর প্রথম থেকেই শীতের প্রকোপ বেশি ছিল।

এ মাসের শুরুতে শৈত্য প্রবাহ ও ঘন কুয়াশার কারণে জেলার অধিকাংশ বোরো ধানের বীজতলা নষ্টের উপক্রম হয়েছে। বীজতলা নষ্ট হওয়ায় কৃষকেরা তাদের বোরো আবাদে মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। বোরো ধান আবাদের খরচ এবং বীজতলা নষ্ট হওয়ায় লোকসান কিভাবে কাটিয়ে উঠবেন তা জানেন না তারা। কৃষকদের অভিযোগ মাঠ পর্যায়ে কৃষি অফিসের কোন কর্মকর্তা আসেন না তাদের কোন ধরনের পরামর্শও দেন না।

রাজবাড়ী জেলার পাঁচটি উপজেলার সদর উপজেলা, পাংশা, বালিয়াকান্দি গোয়ালন্দ ও কালূখালী এ উপজেলাগুলোর প্রায় সব জায়গাতেই বোরো ধানের আবাদ হয়ে থাকে। ১৪ হাজার ১শত ২৯ হেক্টর বোরো আবাদের লক্ষমাত্রা নিয়ে বোরো ধানের বীজতলা তৈরী করা হয়েছে।

এবছর বীজতলার লক্ষমাত্রার চেয়ে ১শত ২৩ হেক্টর বেশি জমিতে কৃষকেরা বীজতলার আবাদ করেছেন। কিন্তু শৈত্য প্রবাহ ও ঘন কুয়াশার কারণে কৃষকদের এ বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে করে কৃষকরা বোরো ধান আবাদে পড়েছেন বিপাকে। বার বার বীজতলা তৈরী করা হলেও পরবর্তীতে তা আবার নষ্ট হচ্ছে। এতে কৃষকেরা মারাত্মক লোকসানের মুখে পড়েছেন।

সদর উপজেলার রামকান্তপুর ও পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের কৃষকেরা বলেন, ইতি মধ্যে বোরো ধান আবাদ করার জন্য তারা বীজতলা তৈরী করেছেন। কিন্তু ঘন কুয়াশার কারণে তাদের সব বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনেকেই আবার জানেন না কি কারণে তাদের বীজতলা নষ্ট হচ্ছে।

এতে করে তারা বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছেন। কোন কোন কৃষক বোরো ধানের বীজতলা দুই থেকে তিনবারও তৈরি করেছিলেন। কিন্তু তাও নষ্ট হয়ে গেছে। বাজার থেকে এখন চড়া দামে বোরো ধানের চারা এনে রোপন করতে হবে। এতে তাদের খরচ বেড়ে যাবে দ্বিগুনেরও বেশি। তবে বীজতলা নষ্ট হলেও তাদের বীজতলা দেখতে কোন কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে আসেন না, দেন না কোন পরামর্শ।

রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধি-দপ্তরের উপ-পরিচালক মো. ফজলুর রহমান বলেন, রাজবাড়ীতে এবছর ১৪ হাজার ১শত ২৯ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষমাত্রা নিয়ে ৭শত ৭ হেক্টর বীজতলার বিপরীতে ৮শত ৩০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করেছেন কৃষকেরা। গত বছরের চাইতে এবছর বোরো ধানের বীজতলা বেড়েছে ১শত ২৩ হেক্টর ।

বিগত সপ্তাহে ঘন কুয়াশা ও শৈত্য প্রবাহের কারণে বীজতলা রক্ষার জন্য কৃষকদের পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে দেওয়া এবং রাতে পানি প্রবাহ বন্ধে পরামর্শ এবং ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সজাগ থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যদি কোথাও কোন বোরো ধানের বীজতলায় সমস্যা থাকলে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ও পলিথিন দিয়ে ঢাকার পরামর্শ দিয়েছেন।

তবে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে কোন সমস্যা হবেনা বলে জানান। এবছর বীজতলা বেশি হওয়ার কারণে বোরো ধানের আবাদে কোন সমস্যা হবে না বলেন। বীজতলায় সেচের পানি জমে তা পচেঁ যাওয়ার কথা বলেন এবং তা নিরসনের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে বলে জানান উপ-পরিচালক।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএম

  • সর্বশেষ
  • পঠিত