ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

বছর জুড়েই ভোট

  বিশেষ প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৫ জানুয়ারি ২০১৯, ১৪:৪৫  
আপডেট :
 ১৫ জানুয়ারি ২০১৯, ১৫:০৪

বছর জুড়েই ভোট

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পর এবার জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসন ও স্থানীয় সরকারের অন্যতম বৃহৎ প্রতিষ্ঠান উপজেলা পরিষদের ভোট অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। নতুন সংসদের প্রথম অধিবেশন বসার পর থেকে শুরু করে বছর জুড়েই ধাপে ধাপে এসব নির্বাচন সম্পন্ন করার পরিকল্পনা করেছে নির্বাচন আয়োজনকারী সাংবিধানিক এই সংস্থাটি। প্রথমেই সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে ভোট করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগামী ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনেই নির্বাচনটি সেড়ে ফেলতে চায় ইসি। এলক্ষ্যে আগামী ১৭ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার তফসিল ঘোষণা করা হবে।

এদিকে দেশের ৪৯২টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন সম্পন্ন করতে বিশদ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে কমিশন। এবার বিভাগভিত্তিক এই ভোট সম্পন্ন করা হবে। এক্ষেত্রে প্রতিটি ধাপে দুটি বিভাগ করে চার ধাপে দেশের ৮ বিভাগে থাকা উপজেলা পরিষদগুলোর নির্বাচন সম্পন্ন করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। আইনী জটিলতা কিংবা মেয়াদ জনিত কারণে অবশিষ্ট থাকা উপজেলাগুলোতে ভোট হবে পঞ্চম ধাপে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত কমিশন বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে বৈঠকে বর্ষীয়ান রাজনীতিক সৈয়দ আশরাফের মৃত্যুতে শূণ্য হওয়া কিশোরগঞ্জ-১ আসনের ভোটের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশন সচিব মো. হেলালুদ্দীন আহমেদ এসব তথ্য জানান।

সংরক্ষিত নারী আসনের তফসিল ১৭ ফেব্রুয়ারি

সংসদে ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসনে প্রথম অধিবেশনেই ভোট সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ কমিশনের এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে বলেন, সংরক্ষিত ৫০ আসনের প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়ে সংসদে প্রতিনিাধিত্বকারী দল ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের দল ও জোটগত অবস্থান জানাতে চিঠি দেয়া হবে। ৩০ জানুয়ারির মধ্যে এ বিষয়ে কমিশনকে অবহিত করতে হবে। ১২ ফেব্রুয়ারি এ নির্বাচনের ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। আইন অনুযায়ী, সংসদের সাধারণ আসনে শপথগ্রহণকারী এমপিরাই সংরক্ষিত আসনের নির্বাচনে ভোটার হবেন। আর ভোটার তালিকা প্রকাশ হয়ে গেলে ১৭ ফেব্রুয়ারি নারী আসনের তফসিল ঘোষণা করা হবে।

গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর ২৯৮টি আসনে নির্বাচিতদের নাম-ঠিকানাসহ গেজেট প্রকাশিত হয়েছে ১ জানুয়ারি। গেজেটের ২৯৮ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২৫৭টি, জাতীয় পার্টি ২২টি, বিএনপি ৬টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ৩টি, জাসদ ২টি, গণফোরাম ২টি, বিকল্পধারা ২টি, তরিকত ফেডারেশন ১টি, জেপি ১টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৩টি আসনে জিতেছে। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, সরাসরি ভোটে জয়ী দলগুলোর আসন সংখ্যার অনুপাতে নারী আসন বণ্টন করা হয়। আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে এবার আওয়ামী লীগ ৪৩টি, জাতীয় পার্টি ৪টি, বিএনপি ১টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ১টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জোটভুক্ত হয়ে ১টি সংরক্ষিত আসন পেতে পারে।

বিভাগভিত্তিক ভোট হবে উপজেলায়

সংসদ নির্বাচনের পর দুই মাস বিরতি দিয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শুরু করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। এবার ভোট হবে পাঁচটি ধাপে। ইসি সচিব জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে। এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষা ও রমজান মাসের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে ধাপে ধাপে ভোট সম্পন্ন করা হবে।

বাংলাদেশে বর্তমানে ৪৯২টি উপজেলা পরিষদ রয়েছে। সর্বশেষ ২০১৪ সালের মার্চ-মে মাসে ছয় ধাপে এর অধিকাংশগুলোতে ভোট হয়েছিল। আইনে মেয়াদ শেষের পূর্ববর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে ভোট করার বাধ্যবাধকতা থাকায় এই নির্বাচন করতে হচ্ছে। ১৯৮৫ সালে উপজেলা পরিষদ চালু হওয়ার পর ১৯৯০ ও ২০০৯ সালে একদিনেই ভোট হয়েছিল। ২০১৪ সালে ছয় ধাপে ভোট করেছিল তৎকালীন ইসি। সচিব জানান, এবার বিভাগভিত্তিক ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। সেক্ষেত্রে আট বিভাগের ভোট হবে চার দিনে; অর্থাৎ এক দিনে দুটি বিভাগে ভোট হবে। বাকি যেগুলো থাকবে, সেগুলোতে ভোট হবে পঞ্চম ধাপে। উপজেলা ভোটেও ব্যবহার হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন। জেলার সদর উপজেলায় পুরোপুরি ইভিএম ব্যবহার করা হবে। আগের উপজেলা নির্বাচন নির্দলীয়ভাবে হলেও আইনটি তার পরে সংশোধন হওয়ায় এবার দলীয় প্রতীকে পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন হবে। অবশ্য এর আগে ২০১৭ সালের মার্চে মেয়াদোত্তীর্ণ তিনটি উপজেলায় দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হয়েছিল। দশম সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলেও বিএনপি পরে নির্দলীয় উপজেলা পরিষদের ভোটে অংশ নিয়েছিল। ২০১৪ সালের ওই নির্বাচনের প্রথম তিন পর্বে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ীদের মধ্যে সংখ্যায় বিএনপি এগিয়ে ছিল। তবে পরের তিন পর্বে তাদের ছাপিয়ে যায় আওয়ামী লীগ সমর্থিতরা।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত