ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

বিবস্ত্র অবস্থায় দৌঁড়ে সম্ভ্রম বাঁচালো এসএসসি পরীক্ষার্থী

  মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৬ জানুয়ারি ২০১৯, ১৪:১১  
আপডেট :
 ১৬ জানুয়ারি ২০১৯, ১৪:১৪

বিবস্ত্র অবস্থায় দৌঁড়ে সম্ভ্রম বাঁচালো এসএসসি পরীক্ষার্থী

বিদ্যালয়ে কোচিং করতে যাচ্ছিলো এসএসসি পরীক্ষার্থী (১৭)। পথে এক প্রতিবেশী ব্যক্তি জরুরি কাজের কথা বলে বাড়িতে ডেকে নিয়ে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়।

একপর্যায়ে সম্ভ্রম রক্ষার্থে বিবস্ত্র অবস্থায় ওই ছাত্রী দৌঁড়ে আরেক প্রতিবেশীর বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয়। খবর পেয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছে।

ঘটনাটি মঙ্গলবার সকালে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী এলাকায় ঘটে।

অভিযুক্ত হেলাল উদ্দিন (৪২) গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের পশ্চিম কচুরগুল গ্রামের বাসিন্দা। এ ব্যাপারে ওইদিন বিকেলে জুড়ী থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়েছে।

স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাড়ি গোয়ালবাড়ীর দুর্গম পাহাড়ি এলাকায়। সে এ বছর স্থানীয় একটি বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে। বিদ্যালয়ে পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ কোচিং ক্লাস চলছে। কোচিংয়ে যাওয়ার জন্য সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সে বাড়ি থেকে হেঁটে বিদ্যালয়ে যাচ্ছিলো। পথে হেলাল উদ্দিনের সঙ্গে তার দেখা হয়। এ সময় হেলাল উদ্দিন তার স্ত্রীর একটি জামা সেলাইয়ের জন্য বিদ্যালয়ের পাশে অবস্থিত দরজির দোকানে দিয়ে মেয়েটিকে বাড়িতে নিয়ে যায়।

ভুক্তভোগী ছাত্রীর বরাত দিয়ে এলাকাবাসী জানায়, বসতঘরে ঢোকার পর হেলাল দরজা বন্ধ করে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ওই ছাত্রী বিবস্ত্র অবস্থায় দরজার সিটকিনি খুলে দৌঁড়ে আরেক প্রতিবেশীর বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয়। একপর্যায়ে সে সেখানে অচেতন হয়ে পড়ে।

খবর পেয়ে স্বজনেরা ছুটে এসে মেয়েটিকে পাশের কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

ঘটনার সময় হেলাল উদ্দিন বাড়িতে একেই ছিলো। তার স্ত্রী দুই সন্তানকে নিয়ে সম্প্রতি বাবার বাড়িতে বেড়াতে গেছেন।

এলাকাবাসী জানান, ঘটনার পর হেলাল উদ্দিন বাড়ির পাশের জঙ্গলে লুকিয়ে পড়ে। এদিকে ছাত্রীর ওপর নির্যাতনের খবর ছড়িয়ে পড়লে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারা জঙ্গল ঘেরাও করে হেলাল উদ্দিনকে ধরে বিদ্যালয়ে নিয়ে যায়। দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ সেখানে গেলে তাকে তাদের কাছে সোপর্দ করা হয়।

বিকেল ওই শিক্ষার্থীর বাবা হেলাল উদ্দিনকে আসামি করে ধর্ষণচেষ্টার মামলা করেন।

এলাকাবাসী জানান, হেলাল উদ্দিন দীর্ঘদিন অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে ছিলো। বৈধভাবে বসবাসের অনুমতি না পেয়ে চার-পাঁচ বছর আগে সে দেশে ফেরে।

গোয়ালবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন আহমদ বলেন, তিনি হাসপাতালে গিয়ে ওই ছাত্রীকে দেখে এসেছেন। তিনি অভিযুক্ত ব্যক্তির কঠোর শাস্তি দাবি করেন।

কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা মাসুদ পারভেজ বলেন, নির্যাতনের ঘটনায় ছাত্রী প্রচণ্ড ভয় পেয়েছে। তার চিকিৎসা চলছে।

জুড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম জানান-জিজ্ঞাসাবাদে হেলাল ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত