ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

সুন্দরবন ছেড়ে আবারও লোকালয়ে বাঘ, আতঙ্কে গ্রামবাসী

  বাগেরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৮ জানুয়ারি ২০১৯, ১৫:২০

সুন্দরবন ছেড়ে আবারও লোকালয়ে বাঘ

সুন্দরবন ছেড়ে আবারও রয়েল বেঙ্গল টাইগার লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে। বাঘের গর্জন আর পায়ের ছাপ দেখে বাগেরহাট জেলার শরণখোলা উপজেলার সুন্দরবনসংলগ্ন দুই গ্রামের মানুষের মধ্যে বাঘ আতঙ্ক বিরাজ করছে। বুধবার রাতে পানিশূন্য ভোলা নদী পার হয়ে বগী-শরণখোলা ভারানী এলাকার পানিরঘাট এলাকা দিয়ে বাঘ লোকালয়ে ঢুকে পড়ে বলে গ্রামবাসী জানান।

সুন্দরবন সংলগ্ন গ্রামবাসী জানান, বুধবার দিবাগত রাত ১টা টার দিকে তারা বাঘের গর্জন শুনতে পায়। সেই থেকে তাদের মধ্যে ভীতি কাজ করছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখতে পায় শরণখোলা উপজেলার সোনাতলা এবং দক্ষিণ সোনাতলা গ্রামের মাঠে, রাস্তা এবং খালের চড়সহ বিভিন্ন এলাকায় বাঘের অসংখ্য পায়ের ছাপ পড়ে আছে। এর পর থেকে গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে বাঘ খুঁজতে শুরু করে। এই নিয়ে ১১ বছরে সুন্দরবন ছেড়ে ১৩৩ বার বাঘ লোকালয়ে ঢুকেছে।

খবর পেয়ে সুন্দরবন বিভাগ, ওয়াইল্ড টিম, টাইগার টিম (ভিটিআরটি), কমিউনিটি পেট্রোলিং (সিপিজি) গ্রুপের সদস্যরা ছুটে যায় ওই দুই গ্রামে। শতশত গ্রামবাসী যুক্ত হয় তাদের সাথে। চলতে থাকে বাঘের সন্ধান। হ্যান্ডমাইক ও মসজিদের মাইক থেকে এলাকাবাসীকে সতর্ক করা এবং সাবধানে চলাফেরা করার জন্য বলা হয়।

বন বিভাগের তথ্য মতে, ২০০৮ সাল থেকে ২০১৯ সালের ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ১১ বছরে ১৩৩ বার সুন্দরবন ছেড়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে বাঘ। এই সময়ে বাঘের হামলায় জেলে, বাওয়ালী, মৌয়াল এবং গ্রামবাসী মিলে ১৮৪ জন মারা গেছে। লোকালয়ে ঢুকে বাঘে ৩৫৮টি গবাদী পশু খেয়ে ফেলেছে। ১১ বছরে সুন্দরবন এবং লোকালয় থেকে মৃত অবস্থায় নয়টি বাঘ উদ্ধার করেছে বন বিভাগ।

বন বিভাগের হিসেব মতে, সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের অধীনে গত ২০০৮ সালে একটি, ২০০৯ সালে দু’টি, ২০১০ সালে দু’টি, ২০১১ সালে একটি, ২০১২ সালে দু’টি এবং ২০১৮ সালে একটি বাঘ মারা গেছে।

গত বুধবার রাতে পানিশূন্য ভোলা নদী পার হয়ে বগী-শরণখোলা ভারানী এলাকার পানিরঘাট এলাকা দিয়ে বাঘ লোকালয়ে ঢুকে পড়ায়। এতে গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক আরও বেড়ে গেছে।

স্থানীয়দের মতে, সুন্দরবন ঘেষা ভোলা নদী ভরাট হয়ে পানি শূন্য হয়ে পড়ায় প্রায়াই বাঘ সুন্দরবন ছেড়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। বাঘ লোকালয়ে ঢুকে পড়লে বাঘে-মানুষে লড়াইয়ের ঘটনা ঘটে। কখনো বা বাঘ আবার কখনো বা মানুষ প্রাণ হারায়। বাঘ যাতে বন ছেড়ে গ্রামে প্রবেশ করতে না পারে এজন্য দ্রুত ভোলা নদী খননের দাবি জানান গ্রামবাসী।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. মাহমুদুল হাসান জানান, সুন্দরবন ছেড়ে বাঘ বন সংলগ্ন লোকালয়ে ঢুকে পড়ার ঘটনা সত্য। বনসংলগ্ন দু’টি গ্রামের বিভিন্ন এলাকা বাঘের বিচরণ করার সত্যতা মিলেছে। বাঘের পায়ের ছাপ দেখে এমনটি মনে হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, বন বিভাগের সদস্যরা ওই গ্রামে টহলে রয়েছে। ওয়াইল্ড টিম, ভিটিআরটি ও সিপিজি সদস্যরাও সেখানে কাজ করছে। যেহেতু গ্রামবাসীর মধ্যে বাঘ আতঙ্ক বিরাজ করছে; একারণে বৃহস্পতিবার রাতভর বনসংলগ্ন ওই গ্রামে বন বিভাগের সদস্যরা টহলে থাকবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত