ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

কিশোরগঞ্জে ৮শ বছরের প্রাচীন কুড়িখাই মেলা শুরু

  কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২১:৩৫

কিশোরগঞ্জে ৮শ বছরের প্রাচীন কুড়িখাই মেলা শুরু

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার কুড়িখাই গ্রামে ৮০০ বছরের প্রাচীন গ্রামীণ কুড়িখাই মেলা শুরু হয়েছে। সোমবার বিশাল তামার পাতিলে তবারক রান্না আর বাউল-ফকিরের আসরের মধ্য দিয়ে এই মেলা শুরু হয়।

সপ্তাহব্যাপী এই মেলা চলবে আগামী রোববার পর্যন্ত।কটিয়াদী উপজেলার কুড়িখাই গ্রামের এই মেলাটি কিশোরগঞ্জ জেলার সবচেয়ে বড় গ্রামীণ মেলা হিসেবে পরিচিত। এই মেলাকে ঘিরে উৎসবে মেতে উঠেছে উপজেলার সব এলাকা মানুষ।

কুড়িখাই এলাকায় হযরত শাহজালাল (রহ.) এর বংশধর হযরত শাহ সামছুদ্দীন (রহ.) এর মাজার এলাকায় প্রতি বছরের মাঘ মাসের শেষ সোমবার মেলা শুরু হয়।

সপ্তাহব্যাপী মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সার্কাস, মৃত্যুকূপ, নাগরদোলা, পুতুল খেলাসহ রকমারি পসরা নিয়ে আসেন ব্যবসায়ীরা। বসে বিন্নি ধানের খই, কদমা, বাতাসা, গুড়, জিলাপির দোকান। এই মেলায় পাওয়া যায় বিশাল বিশাল মাছ, কাঠের আসবাবপত্র। পার্শ্ববর্তী কৃষি জমিসহ বিশাল চত্বরে বসে এই মেলা।

হযরত শাহ সামছুদ্দীনের পুরো নাম হযরত শাহ সামছুদ্দীন আউলিয়া সুলতানুল বোখারী (রহ.)। কথিত আছে, ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশে বার আউলিয়ার অন্যতম শাহ সামছুদ্দীন (রহ.) প্রায় ৯০০ বছর আগে তার তিন সহচর শাহ কলন্দর, শাহ নাছির ও শাহ কবীরকে নিয়ে কুড়িখাই এলাকায় আস্তানা স্থাপন করেন। তিনি ইহলোক ত্যাগ করলে এখানেই তার মাজার গড়ে ওঠে। তার মাজারকে কেন্দ্র করে ১২২৫ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ওরস ও গ্রামীণ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে বলে জানা যায়।

উপজেলার সব মানুষের কাছে বছরের প্রধান উৎসব হয়ে উঠেছে ৮০০ বছরের প্রাচীন কুড়িখাই মেলা। চারদিক থেকে এলাকার ছেলে-বুড়ো থেকে শুরু করে নানা বয়সের মানুষের সপ্তাহব্যাপী দীর্ঘ লাইন থাকে মেলার দিকে।

এই মেলায় সবচেয়ে বড় আকর্ষণ মাছের হাট। মেলায় বিশাল এলাকাজুড়ে বসে মাছের হাট। এই হাটে বোয়াল, চিতল, আইড়, রুই, কাতল, সিলভার কার্পস, পাঙ্গাস, মাগুর, বাঘাইরসহ নানা ধরণের অন্তত চার শতাধিক মাছের দোকান বসে। মাছ বিক্রেতারা কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা সুনামগঞ্জের হাওর ও নদী থেকে এক সপ্তাহ পূর্ব থেকে এসব মাছ সংগ্রহ করে মেলায় বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ধনাঢ্য ব্যক্তিসহ সর্বস্তরের লোকজন এই মেলা থেকে মাছ কিনে নিয়ে যান। এছাড়া মেলায় হাজারো দর্শক আসেন মাছ দেখতে।

এলাকায় প্রবাদ রয়েছে, কুড়িখাই মেলার মাছ খেলে সকল বালা মুসিবত দূর হয়। মেলার পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে প্রতিবাড়িতে মেলা উপলক্ষে নতুন জামাই ও আত্মীয় স্বজনদের দাওয়াতের রীতি রয়েছে।

কটিয়াদী মডেল থানার বারপ্রপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামসুদ্দীন জানান, মেলার পরিবেশ সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ রাখার জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছাড়াও সার্বক্ষণিক গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/জেডআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত