ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

কৃষকদের শিক্ষিত করতে বাংলাদেশের প্রচেষ্টার প্রশংসায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২১:৫৭

কৃষকদের শিক্ষিত করতে বাংলাদেশের প্রচেষ্টার প্রশংসায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত

বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার বলেছেন, কৃষকদের শিক্ষিত করতে কৃষি মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য সংস্থা কঠোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

বুধবার যশোর ও খুলনায় তার প্রথম সফর শেষে রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, ‘কৃষকদের সচেতন করা এবং ‘ফল আর্মিওয়ার্ম’ পতঙ্গ দমনের উপায় বের করতে কৃষি মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য সংস্থার ব্যাপক কর্মতৎপরতায় আমি সন্তুষ্ট।’

তিনি এ সফরে বৈদেশিক উন্নয়ন বিষয়ক মার্কিন সংস্থা ইউএসএআইডির কৃষি, শ্রম ও খাদ্য সহায়তা বিষয়ক কিছু গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি পরিদর্শন করেন এবং খুলনা আমেরিকান কর্নারে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় রাষ্ট্রদূত মিলারের সঙ্গে ছিলেন ইউএসএআইডির ডেপুটি মিশন পরিচালক জেইনা সালাহি।

রাষ্ট্রদূত ও তার সফরসঙ্গীরা যশোরে সরকারি কর্মকর্তা, কমিউনিটি নেতা ও ইউএসএআইডির কর্মসূচিগুলোতে অংশগ্রহণকারী লোকজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ইউএসএআইডি জানায়, তাদের উন্নয়ন কর্মসূচিগুলোর প্রভাব সম্পর্কে সরাসরি মানুষের কাছ থেকে জানাই ছিল তাদের এ সফরের উদ্দেশ্য।

যশোরে এসব কর্মসূচি কীভাবে কৃষিতে উৎপাদনশীলতা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি জোরদার করছে সেটি দেখেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। সেখানে ‘জনতা ইঞ্জিনিয়ারিং’ ও ‘দি মেটাল প্রাইভেট লিমিটেড’র মতো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করছে ইউএসএআইডি।

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতিনিধিদলটি স্থানীয় ফুলচাষীদের সঙ্গে দেখা করেন। ইউএসএআইডির কর্মসূচির আওতায় প্রশিক্ষণ নিয়ে ওই ফুলচাষীরা নতুন কিছু জাতের ফুল চাষ ও উন্নত কৃষি পদ্ধতির মাধ্যমে উৎপাদন বাড়িয়েছেন।

প্রতিনিধিদলটি স্থানীয় কার্প প্রজাতির মাছের সবচেয়ে উৎপাদনশীল ও শক্তিশালী জাত তৈরির কাজে নিয়োজিত মৎস্যবিজ্ঞানীদের সঙ্গেও দেখা করেন। এ জাতের মাছ সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের খাদ্য নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক সম্ভাবনা বাড়াবে।

এছাড়া রাষ্ট্রদূত মিলার ‘ফল আর্মিওয়ার্ম’ পোকার হুমকির বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের (বারি) বিজ্ঞানীদের সঙ্গে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেন। বাংলাদেশে সম্প্রতি আসা এ পতঙ্গটি বিভিন্ন ধরনের ফসলের ক্ষতি করতে পারে।

বৈঠকের পর রাষ্ট্রদূত সাংবাদিকদের বলেন, ‘কৃষকদের সচেতন করা এবং পতঙ্গটি দমনের উপায় বের করতে কৃষি মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য সংস্থার ব্যাপক কর্মতৎপরতায় আমি সন্তুষ্ট। তাদের গৃহীত কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে কৃষকদের ফল আর্মিওয়ার্ম দমনে সহায়তা করতে বিশেষ করে পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণের উপকরণসহ নতুন পণ্যের নিবন্ধন প্রক্রিয়া দ্রুততর করা।’

মিলার খুলনায় ইউএসএআইডির কর্মসূচি ‘নব যাত্রা’র সুবিধাভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন। দারিদ্র্য, ক্ষুধা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এমন মানুষদের জন্যই এ কর্মসূচিটি পরিচালিত হয়।

পরে প্রতিনিধিদলটি একটি চিংড়ি ও মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ প্ল্যান্ট পরিদর্শন করে। এ শিল্পটি সম্পর্কে ধারণা পেতে ও সেখানকার শ্রম পরিস্থিতি জানতে সেখানে যান তারা।

যুক্তরাষ্ট্র সরকার মনে করে, অর্থনৈতিক ও গণতান্ত্রিক ক্ষেত্রে একটি দেশের সাফল্যের জন্য শ্রমমানের উন্নয়ন করা ও কর্মী অধিকার সমুন্নত রাখা দুটিই অত্যন্ত জরুরি।

ইউএসএআইডির সহায়তায় স্থানীয় ‘ওয়ার্কার্স কমিউনিটি সেন্টার’ পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রদূত মিলারের সফর শেষ হয়।

ওয়ার্ল্ডফিশ, এসিডিআই/ভিওসিএ (ভোকা), সিআইএমএমওয়াইটি (সিমিট) উইনরক ইন্টারন্যাশনাল, ওয়ার্ল্ডভিশন বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটসহ অন্য সহযোগীদের সহায়তায় প্রতিনিধিদলটির এ সফরের আয়োজন করা হয়।

প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্র সরকার তাদের বৈদেশিক উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা ইউএসএআইডির মাধ্যমে ১৯৭১ সাল থেকে বাংলাদেশকে উন্নয়ন সহায়তা বাবদ ৭শ কোটি ডলারের বেশি অর্থ দিয়েছে।

২০১৭ সালে সংস্থাটি খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সুযোগ সম্প্রসারণ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার উন্নয়ন,গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও কার্যকলাপ এগিয়ে নেয়া, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলার সামর্থ্য বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের জীবনমানের উন্নয়নে দিয়েছে ২১ কোটি ২০ লাখ ডলারের বেশি।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত