ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

‘আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী মেয়র আরিফ’

  সিলেট প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৬:২১  
আপডেট :
 ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৬:২৮

‘আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী মেয়র আরিফ’

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধের দেড় কোটি টাকার বেশি আত্মসাতের অভিযোগ এনেছেন এক ব্যবসায়ী। শুধু অভিযোগেই শেষ নয়, সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে আত্মাহুতির হুমকি দিয়ে তার জন্য তিনি মেয়র আরিফকেই দায়ী করেছেন।

অভিযোগকারী ওই ব্যবসায়ী হলেন- সিলেট সিটি করপোরেশনের তালিকাভুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সম্পাতপা এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী সঞ্জয় রায়।

মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে ‘প্রদীপ্ত সিলেটবাসী’র ব্যানারে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। ওই মানববন্ধনে ব্যবসায়ী সঞ্জয় রায় শরীরে কাফনের কাপড় মুড়িয়ে প্রতীকী আত্মাহুতির হুমকি দেন।

জানা গেছে, ঘটনা ২০১৪ সালের। সিলেট সিটি করপোরেশনের নগর ভবন নির্মাণের কাজ পায় মাহবুব ব্রাদার্স প্রা. লি. নামের ঢাকার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ষোল কোটি আট লাখ টাকা মূল্যের এই কাজের কার্যাদেশও পায় মাহবুব ব্রাদার্স। ২০১৪ সালের ২৩ নভেম্বর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাহবুব ব্রাদার্স কাজটি নিজে না করে সঞ্জয় রায়ের সম্পাতপা এন্টারপ্রাইজের সাথে চুক্তি করে।

মানববন্ধনে সঞ্জয় রায় জানান, যথাসময়ে কাজ শুরুর পর নগর ভবন থেকে বিভিন্ন সময় মাহবুব ব্রাদার্স প্রা. লি. এর নামে বিল ইস্যু করা হত এবং মাহবুব ব্রাদার্স থেকে তিনি নিয়মিত চেক গ্রহণ করে নিজের মনোনীত একাউন্টে লেনদেন করতেন। আনুমানিক ৫ শতাংশ কাজ বাকি থাকাবস্থায় সঞ্জয় রায়ের লিভার সিরোসিস ধরা পড়লে তিনি ভারতে চিকিৎসা নিতে যান। সেসময় মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী মূল ঠিকাদার মাহবুব ব্রাদার্সকে জিম্মি করে দুই কোটি ছেষট্টি লাখ টাকার চূড়ান্ত বিল আত্মসাৎ করেন।

সঞ্জয় রায় আরো বলেন, এক পর্যায়ে ২ বছর অতিবাহিত হওয়ার পর কাজের বিপরীতে সিটি করপোরেশনে রক্ষিত জামানতের এক কোটি আটান্ন লাখ টাকাও মেয়র আরিফুল হক আত্মসাৎ করেন। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করেন রাজধানীর হোটেল ক্যাপিটালের পরিচালক তোফায়েল খান। তার ব্যাংক একাউন্টেই এই টাকার লেনদেন হয়। কিছুদিন পর সঞ্জয় এ ঘটনা জানতে পেরে আরিফুল হকের কাছে গিয়ে টাকা দাবি করলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়। এসময় মেয়র আরিফ তাকে নিজ বাসায় আটকে রেখে তার কাছ থেকে একটি চেকে জোর করে সই নেন। তাছাড়া এই চেকে ইচ্ছেমতো টাকার অংক বসিয়ে তাকে মামলার আসামি করার হুমকিও দেন মেয়র।

সঞ্জয় রায় বলেন, আমি প্রাণের ভয়ে এতোদিন এসব কাউকে বলিনি। পরে পরিবার পরিজনের পরামর্শে আমি আইনের আশ্রয়ের জন্য পুলিশ স্টেশন, জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি এবং দুদকে জানানোর সিদ্ধান্ত নিই।

এদিকে প্রাপ্য টাকা শিগগিরই ফেরত না পেলে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে প্রকাশ্যে আত্মাহুতি দেয়ার ঘোষণা দেন সঞ্জয়। এসময় তিনি আরিফুল হকের সব দুর্নীতির তদন্তও দাবি করেন।

তবে সঞ্জয়ের এমন অভিযোগ সম্পর্কে জানতে বিকেল ৩টার দিকে বেশ কয়েকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মেয়র আরিফুল হককে পাওয়া যায়নি। এছাড়া নগর ভবন নির্মাণ কাজের মূল ঠিকাদার মাহবুব ব্রাদার্সের পরিচালক শেখ মোস্তাফিজুর রহমানের ব্যক্তিগত মুঠোফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়।

এদিকে ব্যবসায়ী সঞ্জয়ের এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত