ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১১ মিনিট আগে
শিরোনাম

অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, ভেঙে পড়ছে শ্মশানভূমি

  হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০১৯, ১৭:০৮

অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, ভেঙে পড়ছে শ্মশানভূমি

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় প্রভাবশালীদের অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি শ্মশানভূমি বিলিন হয়ে যাচ্ছে। বারবার প্রতিবাদ করেও এর কোন প্রতিকার পাচ্ছে না সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজন। উল্টো প্রভাবশালীরা তাদেরকে বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে।

এ ব্যাপারে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়নের মাঝিশাইল ও পাইকপাড়া গ্রামে কয়েক হাজার মানুষের বসবাস। গ্রাম দুটির মৃতদেহ সৎকারের জন্য গ্রামের অদূরে একমাত্র শ্মশান রয়েছে।

কিন্তু দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে কয়েকজন প্রভাবশালী শ্মশানের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট একটি নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছেন। যার নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ওয়াহেদ আলী ও খোকন মিয়া।

তারা তাদের লোকজন দিয়ে অবৈধ ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে নদীসহ ওই শ্মশানভূমির পাশ থেকে বালু উত্তোলন করে আসছেন। এতে করে দিন দিন ভেঙে পড়ছে শ্মশানভূমিটি।

এ ব্যাপারে প্রতিবাদ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না নিরিহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজন। উল্টো প্রভাবশালীদের হুমকি-ধামকির শিকার হতে হচ্ছে তাদের। কোন উপায়ান্ত না পেয়ে অবশেষে শ্মশানভূমিটি রক্ষায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নিরীহ গ্রামবাসী।

মাঝিশাইল গ্রামের মুরব্বি রাজকুমার সরকার বলেন, ‘বাপ-দাদার আমল থাইকা এখানে আমরা মৃতদেহ সৎকার করে আসছি। কিন্তু কয়েক বছর ধরে শ্মশানের পাশ থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। যার কারণে আমাদের শ্মশানটি ভেঙে পড়ে যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিবাদ করেও কোন ফল পাইনি। এখন আমাদের শ্মশানটি রক্ষা করার জন্য সরকারের কাছে দাবি।’

একই গ্রামের অজিত সরকার বলেন, ‘বালু তুলতে নিষেধ করলেও তারা শুনে না। উল্টো আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দেয়। এ ব্যাপারে আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এখন তিনিই পারেন আমাদের শ্মশানটি রক্ষা করতে।’

পাইকপাড়া গ্রামের প্রিয়ধন সরকার বলেন, ‘আমাদের দুই গ্রামবাসীর একমাত্র শ্মশান এটি। কিন্তু বালু উত্তোলনের কারণে অর্ধেকের চেয়েও বেশি ভেঙে গেছে। বালু উত্তোলন করা বন্ধ না করলে বাকি অংশটুকুও ভেঙে যাবে। এতে করে আমাদের মৃতদেহ সৎকারের কোন জায়গাই থাকবে না।’

তিনি বলেন, ‘শুধু শ্মশানই না, বালু আনা নেয়ার জন্য ট্রাক্টর ব্যবহার করছে বালু ব্যবসায়ীরা। এসব ট্রাক্টর গ্রামের রাস্তা-ঘাটের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে।’

এ ব্যাপারে চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মঈন উদ্দিন ইকবাল বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত বালু উত্তোলন বন্ধসহ বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

বাংলাদেশ জার্নাল/জেডআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত