পানিশূন্য নদী, ভাল নেই জেলে পরিবার
দিনাজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০১৯, ১৬:১৫ আপডেট : ২১ মার্চ ২০১৯, ১৭:১৬
দিনাজপুর জেলায় ছোট বড় প্রায় ১৯টি নদ-নদী আছে। তবে বেশির ভাগ নদীতেই পানি নেই তাই মাছের আকাল এসব নদীতে। নদীতে মাছ ধরে যে সকল পরিবার জীবন জীবিকা নির্বাহ করতো তারা ভাল নেই।
মাছ ধরতে না পেরে জেলে পরিবারগুলিতে চলছে দুর্বিষহ জীবনযাপন। অভাব অনটনে কেউ কেউ বাপ দাদার পৈত্রিক পেশা বাদ নিয়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন।
সরজমিনে দেখা গেছে, দিনাজপুর শহর যে নদীর তীরে অবস্থিত সেই পূর্ণভবা নদী এখন মৃতপ্রায়। এছাড়া গর্ভেশ্বরী , কাকড়া নদী , ইছামতি , আত্রাই নদী, ডেপা নদী, ছোট যমুনা নদীসহ অধিকাংশ নদীতে পানি নেই বললেই চলে।
নাব্যতা হারিয়ে চর জেগে উঠেছে নদীগুলোতে। ইছামতি নদীতে এখন বোরো ধান চাষ হচ্ছে। মনেই হবে না এক সময় খড়ধারা নদী ছিল এই ইছামতি। ইছামতির নদীর পাড়ের মানুষেরা নদী দখল করে এখন ফসলের মাঠে পরিনত করেছে।
দিনাজপুরের নদীগুলিতে এখন কৃষকেরা ইরি-বোরো আবাদ করছে। ছোট ছোট জলাশয় বিলে মাটি ভরাট করে ফসলি জমিতে পরিণত করা হয়েছে, কৃষি জমিতে মাটি খনন করে আবাদী জমি বিনষ্টের পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন বিল।
কিছু কিছু পুকুর ডোবা খাল বিলে পানি থাকলেও মেশিন লাগিয়ে পানি সেচ এবং বিষ দিয়ে দেশীয় মাছের বংশ ধ্বংস দ্বার প্রান্তে প্রায়।
দিনাজপুরের প্রধান নদী পূর্ণভবা, আত্রাই, ডেপা ও ছোট যমুনা, ইছামতি নদীর নাব্যতা হারিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে এখন দখল উৎসবে পরিনত হয়েছে । দীর্ঘদিন ধরে নদী খনন ও ড্রেজিং না করার কারণে পূর্ণভবা, আত্রাই, ডেপা ও ছোট যমুনা গর্ভেশ্বরী , ইছামতি নদী এখন নালায় এবং মরায় পরিণত হয়েছে।
যার কারণে দিনাজপুর জেলায় কমপক্ষে দেড় হাজার জেলে পরিবার বেকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাদের নৌকা এখন নদীঘাটের বালু চরে আটকা পড়ে রয়েছে। একারণেই বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে অনেকেই ভিন্ন পেশায় জড়িয়ে পড়ছেন।
এদের অনেকেই বিভিন্ন এনজিও সংস্থা ও দাদন ব্যবসায়ীদের নিকট চরা সুদে ঋণ নিয়ে বাড়িতে খোরাকি দিয়ে পাড়ি জমিয়েছে ভিন্ন জেলায়। অনেকে রিক্সা-ভ্যান আবার কেউ কেউ রাজমিন্ত্রী, কাঠমিস্ত্রীর জোগালী হিসেবে কাজ করছেন।
নদীতে নৌকা চালিয়ে এবং মাছ ধরে যে রোজগার করতো তারা ভিন্ন জেলায় কঠোর পরিশ্রম করেও পূর্বের মতো রোজগাড় করতে পারছেন না।
বাংলাদেশ জার্নাল/টিপিবি