ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

জলদস্যুদের হাতে জিম্মি ফরিদপুর নৌ-বন্দরের ব্যবসায়ীরা

  ফরিদপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২২ মার্চ ২০১৯, ১৬:৩০

জলদস্যুদের হাতে জিম্মি ফরিদপুর নৌ-বন্দরের ব্যবসায়ীরা

ফরিদপুরের সিঅ্যান্ডবি ঘাট নৌ-বন্দরের কয়েকশ ব্যবসায়ী মাওয়া ঘাট এলাকার দুটি জলদস্যু গ্রুপের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, মুন্সীগঞ্জের বাইদের ট্যাক ও শরীয়তপুরের জাজিরা এবং মাওয়া পুরানঘাট এলাকায় জলদস্যুদের চাঁদা না দিয়ে কোনো পণ্যবাহী কার্গো-টলার ফরিদপুর সিঅ্যান্ডবি ঘাটে আসতে পারছে না। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের দাবি তারা এ বিষয়ে বারবার সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো সুফল আসেনি। প্রতিদিনই কোনো না কোনো স্থানে জলদস্যুরা ব্যবসায়ীদের নৌ-যানে হামলা করে অর্থ আদায় করছে বলেও অভিযোগ তাদের।

তাদের দাবি, চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে নাবিক ও মাঝিদের মারধর করে মোবাইল ফোন ও টাকা-পয়সা নিয়ে যায়। কখনো নৌ-যান আটকে রেখে মাঝিদের জিম্মি করে মালিকপক্ষের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে।

জলদস্যুদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ব্যবসায়ী ও ফরিদপুর সিঅ্যান্ডবি ঘাট নৌ-বন্দরের বাংলাদেশ কার্গো টলার বাল্কহেড শ্রমিক ইউনিয়ন এ বিষয়ে বাংলাদেশ নৌপুলিশের ডিআইজি, মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার ও লৌহজং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তকে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন মাওয়া ঘাট থেকে দেড় কিলোমিটার ভাটিতে বাদিয়ার ট্যাক নামক স্থানে জলদস্যু, রুবেল মাতুব্বর, সাহাবুদ্দিন, আলামিন, মাসুম, আনোয়ার গং এই রুটে সমস্ত নৌ-যান থেকে জোর করে চাঁদা আদায় করছে। চাহিদানুযায়ী চাঁদা না দিতে পারলে ট্রলার বা কার্গোতে থাকা লোকজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করছে। সে কারণে নাবিক ও মাঝিরা নারায়ণগঞ্জ, চাঁদপুর, মুন্সীগঞ্জ থেকে ফরিদপুরে পণ্য নিয়ে আসতে চায় না। এতে একদিকে যেমন ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তেমনি সরকারও রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

ভুক্তভোগী মাঝি সেলিম হোসেনসহ কয়েকজন জানান, প্রায়ই আমরা জলদস্যুদের আক্রমণের শিকার হচ্ছি। মারপিট করে সবকিছু নিয়ে যাচ্ছে তারা। মালিক পক্ষ টাকা দিলে মুক্তি মেলে।

সিঅ্যান্ডবি ঘাট এলাকার ব্যবসায়ী মনোয়ার হোসেন বলেন, ওদের চাঁদা না দিলে ঘাটে নৌকা আসতে দেয় না। তাছাড়া এ বিষয়ে অভিযোগ করলে আমাদের আরো ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়।

কার্গো ট্রলার বাল্কহেড শ্রেমিক ইউনিয়ন ফরিদপুরের সাধারণ সম্পাদক আতিয়ার রহমান শিরু বলেন, দুটি জলদস্যু বাহিনীর কাছে আমরা জিম্মি হয়ে পড়েছি। ডাকাতি চাঁদাবাজিসহ নানা অত্যাচারের মধ্যে রয়েছে আমাদের নৌ-পরিবহন ব্যবস্থা।

তিনি আরো বলেন, পুলিশের কাছে বারবার অভিযোগ করেও সুফল পাচ্ছি না। ইতোমধ্যে রুবেল বাহিনী ছাড়াও আবুল সরদার, রনি গং বাহিনী তৈরী হয়েছে। যারা প্রতিদিনই জাজিরা পালের চর ও বাইদার ট্যাকসহ আশপাশের এলকায় চাঁদাবাজি করছে। আমরা অবিলম্বে এই চাঁদাবাজ জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি চাই।

সিঅ্যান্ডবি নৌ-বন্দরের ব্যবসায়ী ও পণ্যবাহী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল শেখ জানান, ঘটনা একের পর এক ঘটতে থাকলে এক সময় এ ঘাট দিয়ে পণ্য আনা-নেয়া বন্ধ হয়ে যাবে। এতে নৌ-বন্দর কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কর্মহীন হবে কয়েক হাজার শ্রমিক।

এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ লোহজং থানার ওসি মনির হোসেন বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর থেকেই আমরা অভিযান অব্যাহত রেখেছি। জলদস্যুদের উৎখাত করে নদীপথ নিরাপদ রাখতে কাজ করছে পুলিশ।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত