ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

পুরো ঢাকা যেন টাইম বোমায় পরিণত না হয়: র‍্যাব ডিজি

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০১৯, ১৫:২৬  
আপডেট :
 ২৩ মার্চ ২০১৯, ১৫:৩০

পুরো ঢাকা যেন টাইম বোমায় পরিণত না হয়: র‍্যাব ডিজি

রাজধানীর পুরান ঢাকার কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে র‍্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘অসতর্কতার কারণে পুরান ঢাকার দাহ্য কেমিক্যাল গোডাউনগুলো একসময় টাইম বোমা ছিল। চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডের পর সরকারের নির্দেশে সমস্ত কেমিক্যাল গোডাউন অপসারণ করে অন্যত্র নেওয়া হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের বলবো, ক্যামিকেল সরিয়ে আপনারা সতর্কভাবে রাখবেন। অসতর্কতার জন্য যেন পুরো ঢাকা টাইম বোমায় পরিণত না হয়।’

শনিবার দুপুরে রাজধানীর পুরান ঢাকার বকশী বাজারে কারা কনভেনশন হলে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি। পুরান ঢাকার আবাসিক এলাকা থেকে কেমিক্যাল, প্লাস্টিক ও অন্যান্য ঝুঁকিপুর্ণ দাহ্য পদার্থের কারখানা ও গোডাউন অপসারণের লক্ষ্যে বিশেষ এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে র‍্যাব-১০।

বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘টাস্কফোর্সের অভিজানের পর পুরান ঢাকার কেমিক্যাল ব্যবসায়ীরা ক্যামিকেল সরিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন আসাসিক এলাকায় নিয়ে রাখছেন বলে আমার কাছে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে। অভিযানের ভয়ে কেউ নিজ বাসায় আবার কেউ তার আত্মীয়ের বাসায় রাখছেন। আগে পুরান ঢাকা ছিল টাইম বোম্ব। এখন সারা ঢাকা যেন টাইম বোমায় পরিণত না হয় এ বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘পুরান ঢাকার মানুষ এতদিন টাইম বোমার ওপরে বসবাস করছেন। চুড়িহাট্টার ঘটনায় যারা মারা গেছেন তারাও টাইম বোমার পাশে বসবাস করতেন। আমরা তৃতীয় আর একটি ঘটনা চাই না। আমরা আর একটি মানুষের মৃত্যুও দেখতে চাই না।’

দ্রুততম সময়ের মধ্যে এর সমাধান করার তাগিদ দিয়ে র‍্যাব ডিজি বলেন, ‘কেমিক্যাল গোডাউন অপসারণ করার জন্য দেড়শ’ কোটি টাকার যে প্রজেক্টের কথা বলা হচ্ছে তা সম্পন্ন হতে সময় লাগবে দুই বছর। কিন্তু আমাদের হাতে এত সময় নেই। আমরা চাই দুই মাসের মধ্যে এর সমাধান হোক। এজন্য ব্যবসায়ীদের প্রথাগত চিন্তার বাইরে গিয়ে কাজ করতে হবে। এজন্য সাহস থাকতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আফসোস করছি নদী শেষ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এটাও তো ঠিক যে নদী শুকিয়ে যাওয়ায় জমি পাচ্ছি। সেটা বন্দোবস্ত করুন। ম্যাচ ফ্যাক্টরির জমি ভাড়া নেন। একশ’ দেড়শ’ একর নেন। ব্যবসায়ী ভাইদের বিপাকে ফেলানো আমাদের কাজ না। তাদের ব্যবসার জন্য নিরাপদ জোন করা সম্ভব। কিন্তু এই পুরান ঢাকা আমাদের ছাড়তে হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম বাজেট বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেছিল ৭৩৫ কোটি টাকা। এখন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বাজেট ঘোষণা করেছেন ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। এটা আরও বাড়বে। সুতরাং আমাদের চিন্তার প্রসার আনতে হবে। আমরা সামনে ৩০তম অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ দেশ হবো।’

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশে একাধিক ইকোনোমিক জোন গড়ে উঠেছে। অনেক ব্যবসায়ী তাদের নিজ উদ্যোগে তা গড়ে তুলেছেন। এমন ইকোনোমিক জোন গড়তে আপনারাও পারেন। ’

অভিযান বন্ধে ব্যবসায়ীদের দাবির বিষয়ে র‍্যাব ডিজি বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা বলছে অভিযান বন্ধ করতে। আমরা কি দেশ থেকে আইন বন্ধ করে দিব? মানুষ হত্যা হবে আর আর আমরা কি আসামিকে গ্রেফতার করবো না? অভিযান চলবে, তবে আমাদের কোনও ব্যবসায়ী ভাই যেন অযথা হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়টি আমরা দেখবো। অন্যায়ভাবে যেন কারও কোনও ক্ষতি না হয় সেটি নিশ্চিত করেই অভিযান চলমান থাকবে।’

মেয়াদ উত্তীর্ণ কেমিক্যালের বিষয়ে র‍্যাব ডিজি বলেন, ‘আপনারা টাকা দিয়ে পণ্য কিনে আনেন, এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল কিছু লিখিত দিতে হবে। উৎপাদনের মেয়াদ, কোম্পানি নাম, সব কিছুই। টাকা দিয়ে কেন আপনারা মেয়াদ উত্তীর্ণ জিনিস কিনবেন? আপনারা মেয়াদ উত্তীর্ণ কেমিক্যাল রাখলে সেটা মেনে নেওয়া যাবে না।’

  • সর্বশেষ
  • পঠিত