ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

অধ্যক্ষ কর্তৃক শিক্ষিকাকে ধর্ষণের চেষ্টা

  রাজশাহী প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৫ মার্চ ২০১৯, ১৯:০১

অধ্যক্ষ কর্তৃক শিক্ষিকাকে ধর্ষণের চেষ্টা

রাজশাহীর মহানগর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম ইনিস্টিটিউটের অধ্যক্ষ জহুরুল আলম রিপনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ করেছেন ওই প্রতিষ্ঠানেরই এক শিক্ষিকা। সোমবার কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদ নেওয়াজের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চেয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষিকা।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ২০১৫ সালের ৫ এপ্রিল অধ্যক্ষ তার নিজ বাড়ি থেকে ওই শিক্ষিকাকে ল্যাপটপ নিতে যেতে বলেন। বাড়িতে গিয়ে তিনি দেখেন, বাড়ির সদর দরজায় তালা দেওয়া। ওই সময় অধ্যক্ষকে পেছনে দাঁড়ানো দেখেন তিনি। এ সময় কৌশলে অধ্যক্ষ তাকে তার শোবার ঘরে নিয়ে যান। পরে তাকে কুপ্রস্তাব দেন এবং বিভিন্ন প্রলোভনও দেন। কিন্তু তাতে রাজি হননি ওই শিক্ষিকা। ফাঁকা বাড়িতে তাকে জোরপূর্বক শ্লীলতাহানির চেষ্টাও করেন। পরে অধ্যক্ষকে এড়িয়ে কৌশলে ওই বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন।

অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, অধ্যক্ষের বাড়ি থেকে ফিরেই শিক্ষিকা তৎকালীন প্রভাষক মোকসেদ আলীকে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। লোকলজ্জায় বিষয়টি অন্য সহকর্মীদের না জানিয়ে তিনি বাড়ি ফিরে যান। ঘটনার কিছুদিন পর অধ্যক্ষ তাকে কলেজে ডেকে উল্টো প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বলেন। একই সাথে কলেজে একটি কম্পিউটার প্রদানের শর্ত দেন। কিন্তু কোনো শর্তই তিনি মানতে রাজি হননি। শেষ পর্যন্ত তাকে জোর করে পদত্যাগপত্রে সই করিয়ে নেন অধ্যক্ষ।

ভুক্তভোগী শিক্ষিকা কম্পিউটার প্রদর্শক কাম মেকানিক পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি সম্পর্কে অধ্যক্ষ রিপনের খালাতো ভাবি। পারিবারিক কারণেই এতোদিন তিনি মুখ খোলেননি। শিক্ষিকার অভিযোগ, অধ্যক্ষ কেবল তারই নন, অনেক কোমলমতি ছাত্রীরও শ্লীলতাহানি করেছেন।

শিক্ষিকার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তা ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন অধ্যক্ষ জহুরুল আলম রিপন বলেন, ‘আমাকে ফাঁসাতে উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে এই অভিযোগ আনা হয়েছে। ওই শিক্ষিকা ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন বলেও দাবি করেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এর আগে ২০১৯ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি নিজ অফিস কক্ষেই এক ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন অধ্যক্ষ রিপন। বিষয়টি জানাজানি হলে পরদিন তার শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করে এলাকাবাসী। পরে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আরও বিভিন্ন অভিযোগ ফাঁস হয়। ঘটনার চারদিনের মাথায় ওই ছাত্রীসহ আরও দুই ছাত্রী অভিযোগ দেন। সবশেষ এবার একজন শিক্ষিকাও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নিপীড়নের লিখিত অভিযোগ দিলেন।

এদিকে, অপহরণ ও ধষর্ণ চেষ্টার অভিযোগে একমাস পর ৮ মার্চ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে ওই প্রতিষ্ঠানেরই এক ছাত্রী। ওই দিনই জেলার পবা উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর পাঁচ দিনের মাথায় ১৩ মার্চ প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা কমিটির সভায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তবে বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন।

জানতে চাইলে পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ নেওয়াজ বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

ডিপি/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত