ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

রোহিঙ্গা সংকটের জন্য মিয়ানমারই দায়ী: ফিলিপ্পো গ্রান্ডি

  কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৬ এপ্রিল ২০১৯, ২১:৪৮

রোহিঙ্গা সংকটের জন্য মিয়ানমারই দায়ী: ফিলিপ্পো গ্রান্ডি

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি বলেছেন, রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের জন্য জাতিসংঘের তৎপরতা অব্যাহত থাকবে। কিন্তু মিয়ামারের সাম্প্রতিক অভ্যন্তরীণ অস্থিরতারর জন্য প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, এ সঙ্কট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সঙ্গে নিয়ে কাজ করছে জাতিসংঘ। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের জন্য একটি ভালো পরিবেশ তৈরির সব রকমের প্রচেষ্টা চলছে। রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় একযোগে কাজ করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন শেষে শুক্রবার বিকেলে জেলা শহরের হোটেল সায়মন বিচ রিসোর্টের সম্মেলন কক্ষে এক যৌথ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ফিলিপ্পো গ্রান্ডি বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কটের জন্য মিয়ানমারই দায়ী এবং সমাধানও মিয়ানমার থেকেই আসতে হবে। গতবছর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মাঝে সমঝোতা স্বাক্ষর হয়েছে। আমরা আশাবাদী ছিলাম, মিয়ানমার চুক্তিমতো কাজ করবে। কিন্তু তারা এখন আরাকানে যে পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে তাতে প্রত্যাবাসন বিলম্বিত হবেই। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের আন্তরিকতারও অভাব রয়েছে। বাংলাদেশ-মিয়ানমারের সঙ্গে যৌথ আলোচনায় মানবাধিকার নিয়েই রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে কাজ করছে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি সকালে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল মার্ক লোকোক ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মহাপরিচালক এন্তোনিও ভিটোরিনোকে নিয়ে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল মার্ক লোকোক বলেন, পুরো বিশ্ব এটি কখনও ভুলবে না, মিয়ানমার থেকে কী নির্মম নির্যাতনের মুখে রোহিঙ্গারা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছিল। বাংলাদেশ সরকার ও এ দেশের মানুষ তাদের মানবিকতা ও উদারতা নিয়ে আশ্রয় দিয়েছিল। এতো বিপুল সংখ্যক উদ্বাস্তুকে আশ্রয় দিয়ে নজির স্থাপন করেছে বাংলাদেশ। মিয়ানমার তাদের আদিগোষ্ঠী রোহিঙ্গার ওপর যে নিপীড়ন চালিয়েছে তা অমানবিক। সভ্য যুগে এটি কল্পনাও করা যায় না।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মহাপরিচালক এন্তোনিও ভিটোরিনো বলেন, আমারা চাই রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফিরে যাক। ক্যাম্প পরিদর্শনে গিয়ে রোহিঙ্গাদের সাথে কথা হয়েছে। তারাও (রোহিঙ্গারা) ফিরে যেতে চান। তবে, নাগরিকত্ব ও স্বাধীনভাবে মাথা উচুঁ করে থাকার নিশ্চয়তা নিয়ে ফিরতে চান তারা। এটি যৌক্তিক। আমরাও চাই তারা সেই অধিকার নিয়েই ফিরে যাক।

রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নেয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ফিলিপ্পো গ্রান্ডি বলেন, ভাসানচরে নিরাপদ ও সুন্দর পরিবেশে রোহিঙ্গাদের জন্য আবাসন তৈরি করেছে বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু এটি যে নিরাপদ হবে এ বিষয়টি রোহিঙ্গাদের কোনো মতেই বিশ্বাস করানো যাচ্ছে না। তাই তারা ওখানে স্থানান্তরিত হতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। জোর করে তাদের ভাসানচরে পাঠানোর পক্ষেও নই আমরা।

এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে ঢাকা থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছান জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডির নেতৃত্বে ১৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। কক্সবাজার পৌঁছে তারা প্রথমে কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক আশরাফুল আবছারের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মো. আবুল কালামের সঙ্গে বৈঠক করেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত