ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

অদক্ষ চালক ও ত্রুটিপূর্ণ গাড়ির মালিকদের লাইসেন্স দিত তারা!

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৮ মে ২০১৯, ১৬:২৩  
আপডেট :
 ০৮ মে ২০১৯, ১৬:২৫

অদক্ষ চালক ও ত্রুটিপূর্ণ গাড়ির মালিকদের লাইসেন্স দিত তারা!

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) রুট পারমিট, গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট, রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, ট্যাক্স টোকেনসহ মোটরযানের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জালিয়াতিতে জড়িত একটি চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (উত্তর) পুলিশের একটি দল মঙ্গলবার বিকালে পূর্ব কাফরুল এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে বলে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

গ্রেপ্তার পাঁচজন হলেন, মো. আবদুল খালেক (৬৭), মো. আনোয়ারুল হক শিমুল (৪২), মো. আবদুল জলিল (৬৪), মো. আবদুর রহিম (৩১) ও মো. মোতালেব হোসেন (৫৮)।

পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ওই পাঁচজনের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ জাল রুট পারমিট ফরম, রুট পারমিট, রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, ফিটনেস সনদ, ট্যাক্স টোকেন ফরম, বীমা ফরম, বীমা স্ট্যাম্প স্টিকার, ডকুমেন্ট প্রাপ্তি রশিদ, রেজিস্ট্রেশন আবেদন ফরম, বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও অফিসের ১৫০টি সিল এবং গাড়ির ডিজিটাল নম্বর প্লেট উদ্ধার করা হয়েছে।

এছাড়া জালিয়াতির কাজে ব্যবহৃত কম্পিউটার ও প্রিন্টার জব্দ করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। আব্দুল বাতেন বলেন, এই চক্রটি গত প্রায় ১২ বছর ধরে মোটরযানের কাগজপত্র জালিয়াতি করে আসছিল। গাড়ি ও চালকের ধরন, চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন অংকের অর্থের বিনিময়ে তারা সব ধরনের জাল নথি প্রস্তুত ও সরবরাহ করতো। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে তারা গ্রাহক সংগ্রহ করত। নকল কাগজপত্র বানিয়ে তারা নিজেরাই সিল স্বাক্ষর দিয়ে গ্রাহকদের তা সরবরাহ করত। অদক্ষ ড্রাইভাররা অথবা চোরাই বা ত্রুটিযুক্ত গাড়ি মালিকরা স্বল্প খরচে এই চক্রের মাধ্যমে জাল কাগজপত্র সংগ্রহ করতো।

অতিরিক্ত কমিশনার বাতেন বলেন, যারা দালাল ধরে আসল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, ফিটনেস সার্টিফিকেট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার চেষ্টা করত, তাদেরও এরা বিভিন্ন সময়ে জাল কাগজপত্র ধরিয়ে দিয়ে প্রতারণা করার কথা স্বীকার করেছে। গাড়ি প্রতি সব কাগজপত্র দেওয়ার জন্য তারা ক্ষেত্রবিশেষে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা আদায় করতো।

এর আগে গত রোববার পশ্চিম ধানমন্ডির মধুবাগের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে মোস্তফা কামাল জয় (৩৮), তার স্ত্রী শাম্মি আনসারী ও শাম্মির বোন সাদিয়াকে (২৩) গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, জয় লোকজনের কাছ থেকে টাকা নিয় ওই বাসায় বসে কম্পিউটারে জাল ড্রাইভিং লাইসেন্স, স্মার্টকার্ড, ব্লু বুক তৈর করতেন। আর তাকে এই কাজে সহায়তা করতেন স্ত্রী ও শ্যালিকা।

জয় ও তার সহযোগী মো. শফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই মঙ্গলবার কাফরুল থেকে ওই চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানান বাতেন।

তিনি বলেন, আনোয়ারুল হক শিমুল ও আব্দুল জলিল এর আগেও জাল কাগজপত্রসহ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন। জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর আবার তারা জালিয়াতিতে জড়িয়েছেন।

এ ঘটনায় রাজধানীর কাফরুল থানায় একটি মামলা করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা বাতেন।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত