ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

নড়াইলে ছেলে ধরা আতঙ্ক, সন্দেহে রোহিঙ্গারা

  নড়াইল প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২২ মে ২০১৯, ২০:০০  
আপডেট :
 ২২ মে ২০১৯, ২০:০৩

নড়াইলে ছেলে ধরা আতঙ্ক, সন্দেহে রোহিঙ্গারা
ভবঘুরে মানসিক ভারসাম্যহীন এসব ব্যক্তি সন্দেহের শিকার

রোহিঙ্গা ছেলে ধরা গুজবে আতংকিত হয়ে পড়েছে নড়াইলবাসী। গুজব উঠেছে রোহিঙ্গারা মানুষ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। শিশুদের হত্যা করে মাথা কেটে নিয়ে যাচ্ছে। রোহিঙ্গা আতংকে গ্রামের শিশুরা এখন বাড়ি থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছে। অনেক দরিদ্র পরিবারের লোকজন এখন রাতে বারান্দায় রাত যাপন বন্ধ করে দিয়েছে বলে জানাগেছে।

জানা গেছে, জেলার মানুষের মধ্যে রোহিঙ্গা আতংক বিরাজ করছে। কোনো কোনো গ্রামের মহিলারা ভয়ে রাতে রমজান মাসে পবিত্র রোজা রাখবার জন্য সেহেরির রান্নাও বন্ধ করে দিয়েছেন। বিভিন্ন এলাকায় মসজিদ এবং অনুষ্ঠানের মাইকে রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে। গ্রামে, হাট-বাজারে নতুন কোনো মানুষ দেখলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সন্দেহ হলে বা ঠিকমতো জবাব দিতে না পারলে তাদের গণপিটুনি দিয়ে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেয়া হচ্ছে।

গত ১৫মে সদরের মুলিয়া বাজার থেকে রোহিঙ্গা সন্দেহে জসিম নামে এক যুবককে এলাকাবাসী গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আমির হোসেন জানান, সে রহিঙ্গা নয়, মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিল।

গত ১৯মে রাত ১০টার দিকে কালিয়া-নড়াইল সড়কে আখলিয়া বাজার থেকে ষাটোর্ধ এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে এলাকাবাসী ধরে মারধর করে স্থানীয় একটি ক্লাবে আটকে রাখে। পরদিন তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।

কালিয়ার মনোরঞ্জন কাপুড়িয়া কলেজের আয়া পুরুলিয়া গ্রামের পলি বেগম বলেন, তিনি রোহিঙ্গাদের ভয়ে রাতের সেহেরির রান্না পর্যন্ত করছেন না।

সদরের টাবরা গ্রামের বাসিন্দা একটি কলেজের লাইব্রেরিয়ান নিউটন মল্লিক বলেন, গ্রামে গুজব ছড়ানো হচ্ছে পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে ৮০টি মানুষের মাথার প্রয়োজন। এ কাজে রোহিঙ্গাদের দয়িত্ব দেয়ায় তারা বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে সুযোগ বুঝে মানুষ ধরে নিয়ে যাচ্ছে।

চাঁচুড়ী ইউনিয়নের আমবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা আব্বাস মুন্সী বলেন, গত ১৭মে বেলা ১১টার সময় স্থানীয় আমবাড়ি মসজিদ থেকে ঘোষণা করা হয়, রোহিঙ্গারা শিশুদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। তাই যার যার ছেলেমেয়েদের সাবধান রাখতে বলা হয়।

শহরের ভাদুলিডাঙ্গা এলাকার কলেজশিক্ষক মায়া রানী অধিকারী জানান, সদরের মুলিয়া ইউনিয়নের বনগ্রামে গত ১৬মে এক মেলার মাইকে ঘোষণা করা হয়, রোহিঙ্গারা ছেলে-মেয়ে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। আপনারা সন্তানদের সাবধানে রাখবেন। একা একা কোথাও যেতে দেবেন না।

পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন বলেন, রোহিঙ্গা আতংক সম্পূর্ণই গুজব। তিনি এ গুজবে কান না দেয়ার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানান।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত