ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

নুসরাত হত্যার আসামি আওয়ামী লীগ নেতার মুক্তির দাবিতে পোস্টারিং

  ফেনী প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৮ জুন ২০১৯, ১৯:২৫  
আপডেট :
 ১৮ জুন ২০১৯, ১৯:৩১

নুসরাত হত্যার আসামি আওয়ামী লীগ নেতার মুক্তির দাবিতে পোস্টারিং

মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় চার্জশিটভুক্ত কারাবন্দি আসামি ও সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিনের মুক্তি দাবিতে শহরে ব্যাপক পোস্টারিং করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে উপজেলা জুড়ে এসব পোস্টার সাঁটানো হয়। তবে সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ দাবি করেছেন- এই পোস্টারিংয়ের সঙ্গে তাদের দলীয় কোনো সম্পর্ক নেই।

পোস্টারে বলা হয়েছে, সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রুহুল আমিন ভাইয়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তি চাই। এমন কি এসব পোস্টারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিও ব্যবহার করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রহমান বিকম জানান, তাকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দাবি করে মুক্তি চেয়ে পোস্টারিং করা ঠিক হয়নি। যারা পোস্টারিং করেছেন, তাদের উচিত ছিল- তাকে সাবেক সভাপতি লেখা। আমার জানা মতে, তার মুক্তির দাবিতে ছাপানো পোস্টারের সঙ্গে জেলা বা উপজেলা আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নাই।

প্রসঙ্গত, নুসরাত হত্যা মামলায় গত ২৯ মে রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রদানের পর ৩০ মে জেলা আওয়ামী লীগের এক জরুরি সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন একটি মামলায় কারাগারে থাকায় অধ্যাপক মফিজুল হককে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছিল।

উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে একই মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা দায়ের করেন তার মা শিরিন আক্তার।

ভয়ভীতি দেখানোর পরেও মামলাটি তুলে না নেয়ায় গত ৬ এপ্রিল এইচএসসি সমমানের আলিম আরবি প্রথমপত্রের পরীক্ষা দিতে গেলে অধ্যক্ষের অনুসারীরা নুসরাতকে ছাদে ডেকে নিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।

আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে গত ১০ এপ্রিল নুসরাত মারা যান।

এ ঘটনায় ৮ এপ্রিল তার বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। ১০ এপ্রিল মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে দায়িত্ব দেন আদালত।

২৯ মে ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম জাকির হোসাইনের আদালতে মামলার এজাহারভুক্ত আট জনসহ ১৬ জনকে আসামি করে ৮০৮ পৃষ্ঠার চার্জশিট দাখিল করেন পিবিআই কর্মকর্তারা।

১০ জুন আদালত চার্জশিট আমলে নিয়ে ২০ জুন চার্জ গঠনের শুনানির দিন ধার্য করেন।

বিভিন্ন সময়ে এ মামলায় গ্রেফতারকৃত মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা, নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও জোবায়ের আহমেদ, এমরান হোসেন মামুন, ইফতেখার হোসেন রানা ও মহিউদ্দিন শাকিলসহ ১২ জন আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

গত ২৯ মে চার্জশিটভুক্ত কারাবন্দি আসামি আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিন, কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, প্রভাষক আবসার উদ্দিন, মো. শামিম, ইফতেখার উদ্দিন, নূর উদ্দিন জামিন চাইলে আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

ডিপি/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত