ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

কনস্টেবল পদে চাকরির জন্য ১০ লাখ টাকায় চুক্তি

  টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২২ জুন ২০১৯, ১৬:২১  
আপডেট :
 ২২ জুন ২০১৯, ১৬:২৭

কনস্টেবল পদে চাকরির জন্য ১০ লাখ টাকায় চুক্তি

কনস্টেবল পদে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন পুলিশের এক এসআই। এই ঘটনায় অভিযুক্ত এসআই ও এক সাংবাদিকের স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ।

শুক্রবার রাতে জেলার পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- জামালপুর সদর কোর্টের সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) মোহাম্মদ আলী (৪৫) এবং শাহানাতুল আরেফিন সুমি (৩৫)।

মোহাম্মদ আলী টাঙ্গাইল সদর উপজেলার চৌবাড়িয়া গ্রামের মৃত ইনছান আলীর ছেলে এবং সুমি জামালপুর জেলার টুংরাপাড়া গ্রামের খাইরুল বাশারের স্ত্রী। খাইরুল দৈনিক অন্য দিগন্তের স্টাফ রিপোর্টার। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা এবং একটি গাড়ি জব্দ করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা আগামী ১ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য পুলিশের কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে কনস্টেবল পদে একজনকে নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১০ লাখ টাকা লেনদেন করেন।

শনিবার দুপুরে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, শেরপুরের বাসিন্দা ওয়াজেদ আলীর ভাতিজা কবির মিয়ার জন্য টাঙ্গাইলে পুলিশ কনস্টবল পদে চাকরির বিভিন্ন মাধ্যম খুঁজতে থাকেন তার পরিবার। এক পর্যায়ে প্রায় ৫ দিন আগে ওয়াজেদ আলীর পরিচিত জামালপুরের কর্মরত এসআই মোহাম্মদ আলী একজন সাংবাদিকের সাথে তাকে কথা বলিয়ে দেন।

চাকরি নিতে হলে ১২ লাখ টাকা লাগবে বলে ওই সাংবাদিক জানান। পরে ১০ লাখ টাকায় বিনিময়ে চাকরি হবে বলে রফাদফা হয়। চুক্তি অনুয়ায়ী শুক্রবার একটি হায়েস গাড়ি ভাড়া করে এসআই মোহাম্মদ আলী, সাংবাদিক খাইরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী সুমি এবং ওয়াজেদ আলী টাঙ্গাইলের উদ্দেশ্য রওনা হন। পথে ওয়াজেদ আলী ১০ লাখ টাকা ওই সাংবাদিকের স্ত্রী সুমির কাছে দেন। পরে টাঙ্গাইলের পুলিশ অফিসের সামনে আসার আগেই এসআই মোহাম্মদ আলী গাড়ি থেকে নেমে যান।

পুলিশ সুপার সঞ্জিত আরো বলেন, পরবর্তীতে টাঙ্গাইল পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে গাড়িতে ওয়াজেদ আলীকে রেখে ১০ লাখ টাকা ভ্যানিটি ব্যাগে নিয়ে সুমি পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যান। কিছুক্ষণ পর সেখান থেকে বের হয়ে সুমি টাকাগুলো বের করে তার স্বামী সাংবাদিক খায়রুলের কাছে দেন।

টাকাগুলো নিয়ে খায়রুল বাশার চলে যান। এ সময় ওয়াজেদ আলীর মনে সন্দেহ দেখা দেয়। তখন ওয়াজেদ আলী পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে সুমি তাকে জানান ‘এসপি’র অতিথি এসেছেন, এখন দেখা করতে পারবেন না। এরপর ওয়াজেদের সঙ্গে সুমির বাকবিতন্ডা ও হট্টগোল হয়। এ সময় সেখানে থাকা এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ কয়েকজন এগিয়ে আসেন এবং কি হয়েছে জানতে চান। তখন ওয়াজেদ আলী তাদের বিস্তারিত খুলে বলেন। তখন পুলিশের ওই কর্মকর্তা নারী পুলিশের সহযোগিতায় সুমির ব্যাগে তল্লাশি করে ১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা, একটি সাংবাদিকের আইডি কার্ড উদ্ধার করেন এবং তাদের ব্যবহৃত হায়েস গাড়িটি জব্দ করেন।

পুলিশ সুপার বলেন, সুমিকে জিঞ্জাসাবাদ করা হলে তিনি জানান বাকি ৮ লাখ ৫ হাজার টাকা তার স্বামীর কাছে আছে। এ ঘটনায় ওয়াজেদ আলী বাদি হয়ে থানায় মামলা করেন। পরে জামালপুর সদর কোর্টের সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) মোহাম্মদ আলীকেও গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার দুপুরে গ্রেপ্তারদের টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হয়। পলাতক অপর আসামি খাইরুলকে ধরতে অভিযান অব্যহত রয়েছে বলেও জানান এসপি সঞ্জিত।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত