ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

মাইসার একান্ত ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয় পুলিশ কর্মকর্তার ভাতিজা

  বগুড়া প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০১৯, ১৮:৪০

মাইসার একান্ত ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয় পুলিশ কর্মকর্তার ভাতিজা

বগুড়ার ওয়াইএমসিএ পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্রী মাইসা ফাহমিদা সেমন্তি (১৪)। তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে আবির নামে এক ছেলের সঙ্গে। মেসেঞ্জারে মাইসা আবিরকে একান্ত কিছু ছবি পাঠান। বিশ্বাস ভঙ্গ করে আবির সেসব ছবি ছড়িয়ে দেয় ফেসবুকে। যার জেরে আত্মহত্যা করেন স্কুলছাত্রী মাইসা।

ওই আবির এক পুলিশ কর্মকর্তার ভাতিজা বলে জানিয়েছে তার পরিবার। তাদের অভিযোগ, এ কারণে বগুড়া সদর থানা পুলিশ রাকিবের বিরুদ্ধে মামলা নিচ্ছে না। মাইসার বাবা হাসানুল মাশরেক মেয়ে হারানোর কথা জানিয়ে মঙ্গলবার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন।

জানা গেছে, মাইসা গত ১৭ জুন রাতে বাসায় আত্মহত্যা করে। পরদিন সকালে লাশ উদ্ধারের পর পরিবারের লোকজন সুইসাইড নোট পান। নোটে আবির নামের এক বন্ধুর নাম লিখেছে। পুলিশ ময়নাতদন্ত শেষে অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছে।

মাইসার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সুইসাইড নোট উদ্ধারের পর তার মুঠোফোনের কললিস্ট ও ফেসবুক মেসেঞ্জারে তথ্য আদানপ্রদান ছাড়াও সহপাঠী ও বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলা হয়। তারা জানতে পারেন, আবির নামের এক ছেলের সঙ্গে মাইসার সম্পর্ক ছিল। আবির বিভিন্ন সময়ে মাইসার মুঠোফোনে কথা বলেছে। মাইসা ফাহমিদা নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে মেসেঞ্জারে আবিরকে একান্ত কিছু ছবি পাঠিয়েছে। সেই ছবি ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে শাহরিয়ার অন্তর নামের আরো এক যুবক জড়িত। এ ঘটনায় অপমান সইতে না পেরে লজ্জা ও ক্ষোভে আত্মহত্যা করে মাইসা।

হাসানুল মাশরেক বলেন, ‘আবিরের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল মাইসার। যে রাতে সে আত্মহত্যা করেছে, সেই রাতে মেয়ে তাকে বলেছিল, আবিরকে বিশ্বাস করে তার মেসেঞ্জারে কিছু ছবি পাঠিয়েছিলাম। সে সেই ছবি ভাইরাল করে দিয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘মাইসা আত্মহত্যার ঠিক এক দিন আগে, আবির আমাকে ফোন করে বলেছিল, মাইসাকে দেখে রাখবেন। ও আত্মহত্যা করতে পারে।’ এখন প্রশ্ন হলো, মাইসা আত্মহত্যা করবে সেটা আবির আগে থেকেই জানল কী করে?’

হাসানুল মাশরেক বলেন, ‘আবির ছাড়াও শাহরিয়ার অন্তর নামে এক বখাটে মাইসাকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত। তাদের দুজনের বিরুদ্ধে তথ্য-প্রযুক্তি আইনে মামলা করতে চাই। কিন্তু পুলিশের এক পদস্থ কর্মকর্তার ভাতিজা হওয়ায় আবিরের বিরুদ্ধে মামলা নিচ্ছে না থানা।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পুলিশের এই পদস্থ কর্মকর্তা আগে দিনাজপুর জেলায় ছিলেন। বদলি সূত্রে তিনি বর্তমানে চট্টগ্রামে রয়েছেন। আবির তার ভাতিজা। সারিয়াকান্দি উপজেলায় তাদের বাড়ি হলেও পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে আবির বগুড়া শহরের মালতিনগরে থাকে।

জানতে চাইলে বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক এস এম বদিউজ্জামান বলেন, ‘মেয়েটির আত্মহত্যার পর তার বাবা অন্তর নামে একজনের বিরুদ্ধে প্ররোচনার অভিযোগ তুলেছিলেন। এখন আবার আবির নামে আরেকজনের নামে অভিযোগ তোলা হচ্ছে। আবির যে আত্মহত্যার পেছনে জড়িত তার কোনো তথ্য-প্রমাণ দিতে পারেনি। এ কারণে অভিযোগটি গ্রহণ করা হয়নি।’

  • সর্বশেষ
  • পঠিত