‘টেমস দেখার জন্য লন্ডন যেতে হবে না, বুড়িগঙ্গা গেলেই হবে’
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ জুলাই ২০১৯, ১৬:২৮ আপডেট : ০৬ জুলাই ২০১৯, ১৬:৩৫
টেমস নদী দেখার জন্য লন্ডন যেতে হবে না, বুড়িগঙ্গায় গেলেই হবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। শনিবার দুপুরে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের খোলামোড়া ঘাটে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
বিআইডব্লিউটিএ’র উদ্যোগে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর তীরে সীমানা পিলার স্থাপন, ওয়াকওয়ে ও জেটিসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের উদ্বোধন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, বুড়িগঙ্গা হবে আনন্দ বিনোদনের কেন্দ্রবিন্দু। আমাদের টেমস নদী দেখার জন্য লন্ডন যেতে হবে না, বুড়িগঙ্গা গেলেই হবে।
তিনি বলেন, শুধু বুড়িগঙ্গা নয়, সব নদী দখলমুক্ত করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনা ও নির্দেশে এই কাজ অবশ্যই এগিয়ে নেওয়া হবে।
৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২০ সালের মধ্যে ৫২ কিলোমিটার ওয়াকওয়ের কাজ শেষ হবে বলে জানান মন্ত্রী।
দখলদারদের সতর্ক করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কেউ যদি নদী দখলের চিন্তা করেন তাহলে ভুল করবেন। এখন আগের সরকার নয়, এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার। দখলের চেষ্টা করলে যথাযথ বিচার হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী অভিযোগ করেন, নদীর তীর দখলে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, অব্যাহত উচ্ছেদ অভিযানে নদীর জায়গায় ৪৮টির বেশি মসজিদ পাওয়া গেছে। প্রথমে মসজিদ নির্মাণ করে জায়গাগুলো দখলের চেষ্টা করা হয়েছিল।
ধর্মীয়প্রতিষ্ঠান নির্মাণের মাধ্যমে নদী দখলের বিরোধিতা করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কোনো সরকারি জায়গায় অথবা বিতর্কিত জায়গায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বা মসজিদ করার অনুমতি দেয়নি ইসলাম ধর্ম।
বুড়িগঙ্গাকে দখলমুক্ত করতে জনগণের সার্বিক সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান প্রতিমন্ত্রী। সেই সঙ্গে দখলদারদের হুঁশিয়ারি দেন।
তিনি বলেন, পদ্মা-মেঘনা-যমুনা তোমার আমার ঠিকানা, এটা ছিল একসময় আমাদের পরিচয়। কিন্তু আমাদের সেই পরিচয় হারিয়ে যেতে বসেছে, আমাদের বুড়িগঙ্গা নদী শুকিয়ে গেছে, হারিয়ে যাচ্ছে। নদী দখলের ব্যাপারে রাষ্ট্র আগে কোনো যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি, তাই নদীগুলোকে দখল করেছে, সঙ্গে সঙ্গে আমাদের পরিচয় পর্যন্ত বেদখল হয়েছে।
খালিদ মাহমুদ বলেন, নদীর নাব্যতা না থাকার কারণেই সামান্য পাহাড়ি ঢলে সারা দেশ ডুবে যাচ্ছে, তাই এসব নদীকে রক্ষা করতে হবে নদীর খনন করতে হবে। বুড়িগঙ্গা-তুরাগ এমন একটি পরিবেশ হবে, যেখানে মানুষের জীবিকার উৎস হবে এই নদীগুলো।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান এয়ার কমোডর এম মাহবুব-উল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্যা হাজী মো. সেলিম, ঢাকা-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাড. কামরুল ইসলাম, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুস সালাম, পরিবেশবিদ আবুল মকসুদ প্রমুখ।
ডিপি/