ছাত্রীদের যৌন হয়রানি, সাময়িক বরখাস্ত শিক্ষক
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০১৯, ০০:০৬
কুষ্টিয়ার খোকসার সেনগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মৌখিকভাবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ঐ শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন।
জানা গেছে, সেনগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নজরুল ইসলাম ওরফে দুখু অষ্টম শ্রেনির একাধিক ছাত্রীকে নানা সময়ে প্রেম নিবেদনসহ নানা প্রকার কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন।
বৃহস্পতিবার সকালে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে ডেকে নেয়।
ছাত্রীর বোরকার নেকাব খুলতে বাধ্য করে। ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করেন। ছাত্রীটি এ ঘটনা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দেয়। শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে জমায়েত হলে তাৎক্ষনিকভাবে বিদ্যালয়টি বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের চলে যেতে বাধ্য করা হয়।
এদিকে প্রধান শিক্ষক লাল মুহাম্মদ ৮ম শ্রেণির ওই তিন ছাত্রীকে আটকে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন। বিকালে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের শান্ত করতে ওই শিক্ষককে মৌখিকভাবে সাময়িক বরখাস্ত করার ঘোষণা দেন প্রধান শিক্ষক।
ভুক্তভোগী ঐ শিক্ষার্থী বলেন, বুধবার দুপুরের পর শিক্ষক নজরুল ইসলাম আমাকে স্কুলের লাইব্রেরিতে দেখা করতে বলেন। কিন্তু সে দিন সে আর দেখা করেনি। পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে শিক্ষক তাকে আবারো লাইব্রেরিতে ডাকেন। এক পর্যায়ে সে লাইব্রেরিতে গেলে ছাত্রীর বোরকার নেকাব খুলতে বাধ্য করেন শিক্ষক নজরুল। তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয় এবং খারাপ আচরণ করেন।
বিষয়টি সে তাৎক্ষনিকভাবে নিজের সহপাঠিদের জানায়।
এদিকে একই ভাবে একই শ্রেণির আরো দুই শিক্ষার্থী যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছে ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তারা জানায়, শিক্ষক নজরুল ইসলাম তাদেরও স্কুলের লাইব্রেরিতে নিয়ে গিয়ে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। অংকে ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয়ে তারা প্রথম দিকে মুখ খোলেনি।
যৌন হয়রানির শিকার এক ছাত্রীর অভিভাবক জানান, শিক্ষকের কুকীর্তির জন্যে থেকে মেয়ে আর স্কুলে যেতে চাচ্ছে না। তিনি ঐ শিক্ষকের বিচার দাবি করেন।
নজরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগের জন্য তার মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বিদ্যালয়ের সভাপতি উত্তম কুমার সাহা বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষক নিজের দোষ স্বীকার করেছে। তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। দুই একদিনের মধ্যে সাধারণ সভা ডেকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নাজমূল হকের সাথে কথা বলা হলে তিনি জানান, এ বিষয়ে তার কাছে কোন তথ্য নেই। রোববারে তিনি এসে তিনি শুনবেন বলেও জানান।
প্রসঙ্গত, শিক্ষক নজরুল ইসলাম সাত বছর আগে এই ব দ্যালয়ের এক ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করেন। তার সংসারে ৫ বছর বয়সী একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।
বাংলাদেশ জার্নাল/জেডআই