ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

কুড়িগ্রামে ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দী, বিশুদ্ধ পানির সংকট

  কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৫ জুলাই ২০১৯, ১৯:৪৩  
আপডেট :
 ১৫ জুলাই ২০১৯, ১৯:৪৭

কুড়িগ্রামে ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দী, বিশুদ্ধ পানির সংকট

কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমর, ফুলকুমরসহ ১৬টি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার লোকজন উঁচু বাড়ি, বাঁধ,পাকা সড়কসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিচ্ছে।

পানিতে নলকূপ ডুবে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। বন্যা দুর্গত এলাকাগুলোতে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির চরম সংকট দেখা দিয়েছে।

জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৯ উপজেলার ৫৫ ইউনিয়নের ৩৯০টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় ৫৪ হাজার পরিবারের ৩ লাখ মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। বন্যায় তিন শতাধিক স্কুলে বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়াও ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ১১০ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ১০৫ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিস্তার পানি ২ সেন্টিমিটার করে গিয়ে ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। চর, দ্বীপচর, নদী সংলগ্ন গ্রামের সবগুলোই এখন পানিতে ভাসছে। জেলায় ৭৭টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে ৩ হাজার ৮০০ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।

এদিকে প্রধান সড়ক জলমগ্ন হওয়ায় কুড়িগ্রাম ও ঘোগাদহ থেকে যাত্রাপুর যানচলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেছে। সদরের হলোখানা ইউনিয়নের সারডোব বাঁধ যে কোনো মুহূর্তে ভেঙে যেতে পারে। এতে এই এলাকার কয়েকশ পরিবার জলমগ্ন হয়ে পড়বে। রাজারহাটের বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চতুরা ও রামহরি মৌজার নদী তীরবর্তী এলাকা এখন পানিবন্দী।

কুড়িগ্রামে বন্যায় দেড় হাজার হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। এসব ফসলের মধ্যে রয়েছে আমনের বীজতলা, আউস, সবজি, কলা ভুট্টা ও পাট। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকার ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। ফলে ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষকরা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান জানান, ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ ও কৃষকদের পরামর্শ দেয়ার জন্য কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারিদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) হাফিজুর রহমান জানান, ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে মানুষের মধ্যে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। আমরা পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি।

ইতোমধ্যে বন্যা কবলিত উপজেলাগুলোয় ২৮০ মেট্রিক টন চাল, নগদ ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যা বিতরণ শুরু হয়েছে। এছাড়াও সাড়ে চারশ টন চাল ও ৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা মজুত রয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে আরও এক হাজার মেট্রিক টন জিআর চাল, ২০ লাখ টাকা এবং ১০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/ এনকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত