ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

ব্যাংকার মেয়ে-বাবা হত্যায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

  খুলনা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৬ জুলাই ২০১৯, ১৫:৫৭

ব্যাংকার মেয়ে-বাবা হত্যায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

খুলনা মহানগরীর বুড়ো মৌলভির দরগা পাড়ার বাসিন্দা এক্সিম ব্যাংক কর্মকর্তা পারভীন সুলতানাকে গণধর্ষণ শেষে তাকে ও তার বাবা ইলিয়াস আলীকে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালন।

খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল ৩ নং আদালতের বিচাকর বিচারক মহিদুজ্জামান মঙ্গলবার দুপুরে এই রায় ঘোষণা করেন।

সাজাপ্রাপ্ত ৫ আসামিরা হচ্ছেন খুলনা মহানগরীর লবণচরা থানাধীন বুড়ো মৌলভীর দরগা রোডের বাসিন্দা শেখ আব্দুল জলিলের ছেলে সাইফুল ইসলাম পিটিল (৩০), তার ভাই শরিফুল (২৭), আবুল কালামের ছেলে লিটন (২৮), অহিদুল ইসলামের ছেলে আবু সাইদ (২৫) ও মৃত সেকেন্দারের ছেলে আজিজুর রহমান পলাশ (২৬)।

এদের মধ্যে শরিফুল পলাতক। বাকি ৪ জন রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলো। বহুল আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডে ৩ বছর ৯ মাস ২৭ দিন পর রায় ঘোষণা হলো।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন স্পেশাল পিপি ফরিদ আহমেদ। এছাড়া রাষ্ট্রপক্ষকে সহায়তায় রয়েছেন বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার পক্ষে কাজী সাবিক্ষর আহমেদ, মোমিনুল ইসলাম, তসলিমা খাতুন ও কুদরত-ই-খুদা।

স্পেশাল পিপি ফরিদ আহমেদ বলেন, বেলা সোয়া ১২টার দিকে বিচারক রায় পড়া শুরু করেন। ইলিয়াস আলী হত্যা মামলায় ৫২ পৃষ্ঠার রায়ে আসামিদেরকে মৃত্যুদণ্ড ও আলামত লুকানোর অভিযোগ আরও সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন।

এছাড়া ব্যাংকার পারভিন সুলতানাকে গণধর্ষণ ও হত্যার দায়ে ৬৫ পৃষ্ঠার রায়ে ৫ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও এক লাখ টাকা করে জারিমানা করা হয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডের মামলায় ২২জন ও গণধর্ষণের মামলায় ২৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত। আসামিদের মধ্যে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় ২ জনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে লোমহর্ষক এ হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা রয়েছে।

চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ৩নং ট্রাইব্যুনালে মামলাটির যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) শুরু হয়। মামলার তদন্ত চলাকালে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ৫ জনের মধ্যে ৪ জন গ্রেপ্তার হয়। এছাড়াও গ্রেপ্তার করা হয় পিটিলের স্ত্রী আসমা খাতুন, নোয়াব আলি গাজী ও আসলাম মিস্ত্রি নামের একজন সন্দেহভাজনকে।

তাদের মধ্যে লিটন ও সাঈদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উঠে আসে লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা। তারা জবানবন্দিতে বলে, ব্যাংক কর্মকর্তা পারভীন অফিসে আসা-যাওয়ার পথে আসামিরা তাকে কু-প্রস্তাবসহ নানাভাবে যৌন হয়রানি করতো। এর প্রতিবাদ করায় ঘটনার দিন রাতে বাড়ির দেয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করে ৫ আসামি। এরপর অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পারভীনের বাবাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পাশের রুমে থাকা পারভীনকে ৫ জন মিলে গণধর্ষণের পর হত্যা করে সেপটিক ট্যাংকির মধ্যে বাবা ও মেয়ের মরদেহ ফেলে দেয়। পরে ঘরে লুটতরাজ চালিয়ে পালিয়ে যায় তারা।

উল্লেখ্য, এক্সিম ব্যাংক কর্মকর্তা পারভীন সুলতানাকে গণধর্ষণ ও তার পিতা ইলিয়াস চৌধুরীকে হত্যা করা হয়। নগরীর লবণচরা থানাধীন বুড়ো মৌলভীর দরগা এলাকার ৩নং গলির ঢাকাইয়া হাউজ এপি ভিলা নামের বাড়িতে ২০১৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর নৃশংস এ খুনের ঘটনা ঘটে।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত