ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

এমপির সঙ্গে মিন্নির আইনজীবীর বৈঠক নিয়ে যা বললেন বাবা

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ২১ জুলাই ২০১৯, ১৭:৪৬  
আপডেট :
 ২১ জুলাই ২০১৯, ১৭:৫০

এমপির সঙ্গে মিন্নির আইনজীবীর বৈঠক নিয়ে যা বললেন বাবা

বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সঙ্গে একান্তে বৈঠক করেছেন আলোচিত রিফাত হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী থেকে আসামি হওয়া আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম।

শনিবার দিবাগত রাতে আইনজীবীর এই কাণ্ডে নাখোশ হলেও আজ রোববার সুর পাল্টালেন মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর। তিনি জানান, এমপি শম্ভুর সঙ্গে আইনজীবীর বৈঠকে কোনো আপত্তি নেই তার। অথচ শুরু থেকেই ওই এমপির বিরুদ্ধে মামলায় প্রভাব খাটানোর অভিযোগ করে আসছেন মিন্নির বাবা।

এদিকে শনিবার মিন্নির আইনজীবীর সমালোচনা করে মোজাম্মেল হোসেন বলেছিলেন, ‘আপনাদের বুঝতে আর কিছু বাকি আছে?’ সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় মিন্নির আইনজীবী হিসেবে অ্যাডভোকেট আসলাম এমপির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যেতে পারেন কিনা জানতে চাইলে মিন্নির বাবা বলেছিলেন, ‘কোনোভাবেই পারেন না।

এ বিষয়ে অন্য আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন বলেও জানান তিনি। কিন্তু আজ গণমাধ্যমকে বললেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, মাহবুবুল বারী আসলাম সাহেবকে আমি আস্থার সহিত এবং শ্রদ্ধা-ভক্তি রেখে অ্যাডভোকেট নিয়োগ করেছি। তার সদিচ্ছার কারণেই আমি তাকে নিয়োগ দিয়েছি। এখন তিনি সেখানে কী আলাপ করেছেন, এটা তার একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। এটা নিয়ে আমি আর মন্তব্য করতে রাজি না।’

মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘উকিল সাহেব (মাহবুবুল বারী আসলা) তো একজন বিচক্ষণ মানুষ। আমি মনে করি, তিনি তার চরিত্র বিক্রি করবেন না। তার অস্তিত্ব তিনি নষ্ট করবেন না। শম্ভু দা একজন স্থানীয় এমপি। তিনি উকিল সাহেবকে ডাকতেই পারেন। তার বাসায় আসতেই পারে। এটা নিয়ে আমার কোনো আপত্তি নেই।

মিন্নির বাবা আরও বলেন, ‘শম্ভু দা একজন সিনিয়র পারসন। সেখানে আমার আইনজীবী যেতেই পারে। সেও তো বরগুনার বারের একজন সদস্য এবং সিনিয়র আইনজীবী। সে কারণে যেতেই পারে। এটা নিয়ে অন্যকিছু ভাবা ঠিক না।’

আইনজীবী পরিবর্তনের বিষয়ে মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, না না না, প্রশ্নই ওঠে না। আমি যাকে দিয়েছি, সরল অঙ্ককরণে-বিশ্বাসে আমি দিয়েছি। সে যদি বিশ্বাসঘাতকতা করে, তাকে দেখার একজন মালিক আছেন।

এদিকে আজ মিন্নির জামিন আবেদন নাকচ করে দিয়েছে আদালত। রোববার সকালে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. সিরাজুল ইসলাম গাজী এ জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।

এর আগে সকালে মিন্নির জামিন আবেদন করে আদালতের কার্যতালিকায় তোলা হয় মামলাটি। পরে বেলা ১১টার দিকে মিন্নির জামিনের জন্য শুনানি শুরু হয়।

মিন্নির জামিনের জন্য আদালতে শুনানিতে তার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, অ্যাডভোকেট মো. মাহবুবুল বারী আসলাম, অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা কাদের, অ্যাডভোকেট দীপক চন্দ্র হালদার, অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল নোমান, অ্যাডভোকেট সাহিদা বেগম, অ্যাডভোকেট আবদুর রশীদ ও অ্যাডভোকেট মো. মিজানুর রহমান।

প্রসঙ্গত, বরগুনা সরকারি কলেজের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় ২৬ জুন সকাল ১০টার দিকে স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সামনে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। বিকাল ৪টায় বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

এ হত্যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। হত্যাকাণ্ডের পরের দিন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বরগুনা থানায় ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এ ছাড়া সন্দেহভাজন অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়।

এ মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। মামলার এজাহারভুক্ত ছয় আসামিসহ এ পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১০ জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন, চারজন রিমান্ডে আছে।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত