ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

রামগঞ্জে হত্যার শিকার ‍সুমনের বাইক কমলনগরে উদ্ধার

  রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ : ৩০ জুলাই ২০১৯, ১৯:৩৩

রামগঞ্জে হত্যার শিকার ‍সুমনের বাইক কমলনগরে উদ্ধার

জেলার রামগঞ্জ উপজেলার সোনাপুর বাজারের মন্তাজ মিয়ার মুদি দোকানের কর্মচারী সুমন হত্যাকাণ্ডের ৯দিন পর পুলিশ সুমনের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন কমলনগর উপজেলার একটি পুকুর থেকে উদ্ধার হয়েছে।

রামগঞ্জ থানার এস আই কাওসারুজ্জামানের কৌশলী পদক্ষেপে আলোচিত সুমন হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মেচিত হওয়ায় উপজেলার সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন ২১ জুলাই রোববার রাত ১১টায় রামগঞ্জ সোনাপুর বাজারের মুদি দোকানের কর্মচারী সুমনকে (২৪) ডাব খাওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে যায় একই দোকানের চাকরিচ্যুত কর্মচারী সোহেল মিঝি। রাতে সাড়ে ১১টায় সোহেলের গ্রামের বাড়ি ভোলাকোট ইউনিয়নের নাগমুদ মিঝি বাড়ির একটি বাগানে নিয়ে সোহেল মিঝি সুমনের কাছে টাকার ধার চায়। এসময় সুমন হোসেন সোহেলের কাছে আগের দেয়া টাকা ফেরত দিতে বলায় দুজনের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সোহেলের হাতে থাকা বটি দা দিয়ে প্রথমে সুমনরে ঘাঁড়ে ও পরে সুমনের মাথায় এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর সোহেল মিঝি তার বসতঘর থেকে কোদাল ও প্লাস্টিকের বস্তা নিয়ে আসে। পরে মাটিখুঁড়ে বস্তায় সুমনের লাশ ভরে বাগানের ডোবার পাশে লাশটি মাটিচাপা দেয়।

পরদিন ফজরের নামাজের সময় সুমনের মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে সোহেল মিঝি নানার বাড়ি জেলার কমলনগর উপজেলায় চলে যায়। সেখানে গিয়ে নানা বাড়ির পুকুরে হত্যাকাণ্ডের শিকার সুমনের মোটরসাইকেল (এইচ পাওয়ার, আর ও এক্স- আর ১৫০) ফেলে দেয়। ওই দিনই হত্যাকারী সোহেল ঢাকায় চলে যায়।

এদিকে ঘটনার পরদিন সুমনের বাবা ইউনুছ মিয়া খবর পেয়ে চলে কুমিল্লা থেকে রামগঞ্জ থানায় আসেন। রামগঞ্জ থানায় করা হয় সাধারণ ডায়েরি। কিন্তু পুলিশ কোনো কুল-কিনারা করতে না পেরে তল্লাশি চালায় বিভিন্ন জায়গায়। অবশেষে পুলিশ জানতে পারে সোহেল ও সুমন দুজন ছিলো বন্ধু এবং ঘটনার দিন রাতেই দুজন একত্রে পাড়ি দেয় অজানায়। জোর তদন্তে নামে পুলিশ। রামগঞ্জ উপজেলার উত্তর নাগমুদ মিঝি বাড়ি থেকে আটক করা হয় সোহেল মিঝির বাবা বাবুল মিয়াকে। বাবা বাবুল মিয়াকে আটকের পর সোহেল মিঝি সিদ্ধান্ত নেয় আদালতে আত্মসমর্পণ করার।

বিষয়টি জানতে পারেন রামগঞ্জ থানার এস আই কাওসারুজ্জামান। ২৬ জুলাই লক্ষ্মীপুর ঝুমুর সিনেমা হলের আশেপাশের এলাকায় গোপনে অবস্থান করে পুলিশ। বেশ কিছুক্ষণ পরে হত্যাকারী সোহেল মিঝি গাড়ি থেকে নেমে এদিক সেদিক পায়চারি করার সময় চারদিক থেকে পুলিশ তাকে ঘেরাও করে ধরে ফেলে।

জিজ্ঞাসাবাদে সোহেল মিঝি হত্যাকান্ডের কথা শিকার করলেও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গায় লাশ লুকিয়ে রাখার কথা বলে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু পুলিশ কৌশলে সোহেলের স্বীকারোক্তি আদায় করে ২৭জুলাই বিকালে সোহেল মিঝির বাড়ির পশ্চিম পাশের বাগান থেকে সুমনের অর্ধগলিত বস্তাবন্দি মাটিচাপা লাশ উদ্ধার করে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই কাওসারুজ্জামান জানান, মঙ্গলবার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যাকারী সোহেল মিঝির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নিয়েছি। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসার পর চার্জশিট দেয়া হবে।

রামগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, রামগঞ্জ থানা পুলিশের প্রত্যেকটি অফিসার আন্তরিকতার সাথে কাজটি করায় এত দ্রুত রহস্য উৎঘাটন সম্ভব হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত