ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

ফসলের খেতে আগাম শিমের সমারোহ

  খুলনা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৫:৪৩

ফসলের খেতে আগাম শিমের সমারোহ

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা দেশের অন্যতম প্রধান সবজি উৎপাদন এলাকা হিসেবে প্রসিদ্ধ। স্থানীয় কৃষি বিভাগের তৎপরতায় দেশের বিভিন্ন স্থানের ন্যায় ইতোমধ্যে আগাম বাজারে উঠতে শুরু করেছে শীতকালীন শিম। প্রথমদিকে পরিমাণে কম হলেও আগাম হাইব্রিড জাতের শিম পেয়ে খুশি ক্রেতারা।

স্থানীয়রা জানান, প্রথম দিকে পরিমাণে কম হওয়ায় দাম বেশ চড়া প্রতি কেজি শিম পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা আর খুচরা প্রতি কেজি ১৮০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। মৌসুমের শুরুতে ভালো দাম পেয়ে খুশি শিম চাষীরাও।

কৃষি বিভাগ থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট চাষীরা জানায়, আর দু’এক সপ্তাহ পর থেকে পুরোদমে বাজারে উঠবে শিম। তখন দামটাও ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে চলে আসবে।

স্থানীয় কৃষি অফিস জানায়, আবাদ লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী চলতি বছর প্রায় কোটি টাকার শিম বিক্রি হবে। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে বিস্তীর্ণ প্রান্তর জুড়ে সবুজের উপরে সাদা বেগুনি রংয়ের ফুলের ছোট মাঝারি ও বড় সাইজের শিম বন। কোনো কোনো এলাকায় দেখা যায়, শিম মাচার পাশে দাঁড়িয়ে কৃষাণ-কৃষাণীর হাস্যোজ্জ্বল ছবি। তাদের অনেকেই ব্যস্ত রয়েছেন খেত পরিচর্যায়।

পড়ন্ত বিকেলে প্রান্তর জুড়ে শিম খেত পরিচর্যা ও বালাই দমনে কৃষকদের তৎপরতা রীতিমত চোখে পড়ার মতো। কোনো কোনো এলাকার যতদূর চোখ যায় শুধু শিম খেতের চোখ ধাঁধানো সবুজের উপর বেগুণীর সমারোহ। এ সময় একদিকে কচি শিম ফুলের ভিন্ন আমেজের সুবাসের পাশাপাশি বালাইনাশকের উটকো গন্ধে আশপাশের এলাকা ভারি হয়ে উঠেছে ডুমুরিয়ার প্রান্তর।

জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নের ভরাতিয়া গ্রামের কৃষক নব কুমার জানান, শীতকালীন সবজি হাইব্রিড জাতের শিমের মৌসুম সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাস। এ জাতের শিম বাজারে আসতে শুরু করেছে আরো এক থেকে দেড় সপ্তাহ আগে। তবে যাদের শিম বাজারে এসেছে তারা দামও ভাল পাচ্ছেন। বর্তমানে দাম বেশি থাকলেও আর কিছু দিনের মধ্যে দাম সহনশীল পর্যায়ে চলে আসবে।

তিনি আরো জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ৩ বিঘা জমিতে শিমের আবাদ করেছেন তিনি।

আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশে শিমের পাতা মোড়ানো রোগ দেখা যায়নি তারপরও সতর্ক থাকতে সপ্তাহে দুই তিন দিন কীটনাশক ছিটানো হয়। তারা আরো জানান, অতি বৃষ্টি অথবার কুয়াশায় প্রতিদিন বালাইনাশকের প্রয়োজন পড়ছে।

ডুমুরিয়া আনোয়ারা মার্কেটের ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম জানান, ইতোমধ্যে বাজারে অতি অল্প পরিমাণে শিম আসতে শুরু করেছে। তবে ১/২ সপ্তাহের মধ্যে প্রতিদিন অন্তত ৫ থেকে ১০ ট্রাক পর্যন্ত শিম আসবে।

তিনি জানান,ডুমুরিয়ার শিম স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে দেশের ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে সরবারহ হয়।

এ ব্যাপারে ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. মোসাদ্দেক হোসেন জানান, এবার শিম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ১৮২ হেক্টর জমি। আগাম উৎপাদনের লক্ষ্যে এ এলাকায় ইতোমধ্যে আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। কোনো কোনো খেতে ইতোমধ্যে অল্প অল্প করে শিম উৎপাদন শুরু হয়েছে। এর মধ্যে শুধু আটলিয়া ও খর্নিয়া শরাফপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় আগাম সবজির চাষ চলছে।

তিনি আরো জানান, আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশ ও গত বছর শিমের দাম ভাল পাওয়ায় ডুমুরিয়ায় শিমসহ অন্যান্য সবজির আবাদ বেশি হয়েছে। শুধু মাত্র শিম চাষে বিক্রয় লক্ষমাত্রা প্রায় ২০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। তবে কিছু কিছু এলাকায় কৃত্রিম জলাবদ্ধতার দরুণ শিমের উৎপাদন ঐ সব এলাকায় কিছুটা কম হতে পারে। সর্বশেষ আবহাওয়ার পরিবেশ অনুকূলে থাকলে শিম চাষ জেলার যেকোনো এলাকা ছাড়িয়ে যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন কৃষি বিভাগের এই দায়িত্বশীল কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত