ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

আদালতে বাদীর বিষপানের চেষ্টা, ঠেকালেন বিচারক

  বরিশাল প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ২২:০১

আদালতে বাদীর বিষপানের চেষ্টা, ঠেকালেন বিচারক
প্রতীকী ছবি

বরিশালে আদালত চলাকালে বিচারকের সামনে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন এক নারী। রোববার বিকেলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক রুম্পা ঘোষের সামনে মামলার বাদী বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার নলশ্রী গ্রামের পারভিন বেগম তার কোমর থেকে কীটনাশকের বোতল বের করে তা পানের চেষ্টা চালান। পারভীন ওই এলাকার কবির হোসেনের স্ত্রী।

বিচারক রুম্পা ঘোষ এজলাস থেকে নেমে এসে বিষপান করতে বাধা দিয়ে পারভীনের হাত থেকে কীটনাশকের বোতল ছিনিয়ে নেন। পারভীনকে কিছুক্ষণ বসিয়ে রাখে শুনানি মুলতবি করে নতুন করে দিন ধার্য্য করেন।

মামলায় বিবাদী হচ্ছেন, নাছরিন আক্তার। বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের বেতাল গ্রামের আব্দুল গফফার ফরাজীর স্ত্রী। নাছরিন নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বাদী পারভীন বেগমের কাছ থেকে ১ লাখ টাকায় তার শিশু সন্তান ক্রয় করেন। ওই সন্তান ফেরত নিয়ে পারভীন এ মামলা দায়ের করেন।

বিবাদীর আইনজীবী হুমায়ুন কবির (১) জানান, পারভিন এক দারিদ্র অর্থলোভী মহিলা। এর আগে তিনি অর্থলোভে নিজ গর্ভের দুই সন্তান বিক্রি করেন। গত জানুয়ারি মাসের দিকে তার আরো একটা পুত্র সন্তান হয়। যার নাম জাসান আবদুল্লাহ। তিনি ওই সন্তান বিক্রি করতে চাইলে নিঃসন্তান নাছরিন আকতার ওই সন্তান নিতে রাজি হন। তিনি একলাখ টাকা দিয়ে গত ২৯ জুন রোয়েদাদ নামা তৈরি করে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে জাসান আব্দুল্লাহকে তার কাছে নিয়ে যান।

কিছুদিন অতিবাহিত হলে পারভিন আবার লোভে পড়েন। নাছরিনের কাছে আরো টাকা দাবি করেন। অপারগতা প্রকাশ করলে তিনি তার সন্তানকে ফিরিয়ে নেয়ার দাবি জানান। টাকা ফেরত চাইলে পারভীন বানারীপাড়া থানা পুলিশের শরণাপন্ন হয়। থানা পুলিশ উভয় পক্ষের কথা শুনে পারভিনকে সন্তান বিক্রি করে নেয়া টাকা ফেরত দিতে নির্দেশ দেয়া হয়। পারভীন টাকা না দিয়েই সন্তান দাবি করেন। গত ২৪ জুলাই সন্তান জোর করে রেখে দেয়ার অভিযোগ দিয়ে উদ্ধারের দাবি জানিয়ে পারভিন আদালতে মামলা দায়ের করেন।

আদালত বিবাদী নাছরিনকে সন্তানসহ আদালতে হাজির হওয়ার আদেশ দেন। ধার্য্য তারিখে নাছরিন আদালতে উপস্থিত হয়ে সন্তান নেয়ার সময় করা রোয়েদাদ নামা দাখিল করেন। বাদী পারভীনকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি স্বাক্ষর করার কথা অস্বীকার করেন। আদালতকে প্রভাবিত করার প্রচেষ্টায় পরিকল্পিতভাবে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে দাড়িয়েই সন্তান না দিলে কোমরে গুজে রাখা কীটনাশকের বোতল বের করে পান করতে উদ্যত হন। এ সময় বিচারক এজলাস থেকে নেমে বাদীর হাত থেকে কীটনাশক ছিনিয়ে নেন।

বিবাদীর আইনজীবী আরো বলেন, আদালতের এজলাসে বিষপান করার চেষ্টার ঘটনা এই প্রথম। এটা নিঃসন্দেহে আদালতকে প্রভাবিত করাসহ বিভ্রান্ত করার পরিকল্পিত ন্যক্কারজনক ঘটনা। এধরনের ঘটনা ঘটানোর জন্য বাদীর কঠিন বিচার হওয়া উচিৎ। যদি দুর্ঘটনা ঘটতো তাহলে বিচারকসহ আদালত সংশ্লিষ্টদের বিপাকে পড়তে হত। ম্যাজিস্ট্রেটের দক্ষতায় একটা কঠিন বিপদ থেকে রক্ষা হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত